ব্যবসায়ীকে অপহরণের ঘটনায় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশ রাতভর অভিযান চালিয়ে অপহরণকারী চক্রের দুই সদস্যকে আটক সহ অপহৃত ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করেছে।
পুলিশ জানায়, গত রোববার সন্ধ্যায় বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মেঘাখোর্দ্দ গ্রামের ব্যাটারী ব্যবসায়ী আনিসুর রহমান (৪০) ব্যাটারী ক্রয়ের জন্য গোবিন্দগঞ্জে এলে দক্ষিণ বাসস্ট্যান্ড এলাকার হানিফ কাউন্টারের পাশের এলাকা থেকে স্থানীয় সন্ত্রাসী ও পেশাদার অপহরণ চক্রের হোতা বকচর গ্রামের ছবেদ আলীর ছেলে বাপ্পি ওরফে লুংগি বাপ্পি ও তার তিন সহযোগী কৌশলে আনিছুরকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এরপর রাত আনুমানিক ৮টার দিকে বাপ্পি অপহৃত আনিসুরের ছেলে রণি মিয়াকে ফোন করে তার বাবাকে অপহরণ করা হয়েছে এবং মুক্তিপণ হিসেবে ৪০ হাজার টাকা দাবি করে এবং মুক্তিপণ দেয়া না হলে আনিসুরকে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেয়।
পিতার অপহরণের সংবাদে বিচলিত হয়ে রণি মিয়া অল্প কিছু টাকা সংগ্রহ করে বিকাশ একাউন্টের মাধ্যমে প্রদান করলেও অপহরণকারীরা তার পিতাকে ছেড়ে না দেয়ায় পরবর্তীতে রাত ১০টার দিকে থানায় আসলে গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশের একটি দল ওই বিকাশ নাম্বরে কিছু টাকা পাঠিয়ে প্রযুক্তির সহায়তায় অপহরণকারীদের অবস্থান শনাক্ত করেন।
পুলিশ এরপর অপহরণ চক্রের মূলহোতা বাপ্পির বাড়িতে আকষ্মিক অভিযান চালালে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বাপ্পি ও তাঁর সহযোগী, স্ত্রীসহ অন্যান্যরা অপহৃত আনিসুরকে নিয়ে বাড়ির পিছন দিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় অপহরণের সহযোগিতা করায় বাপ্পির বাবা ছবেদ আলি ও শাশুড়ি মনোয়ারা বেগমকে পুলিশ আটক করে। এরপরও বাপ্পির নেতৃত্বে অপহরণকারীরা ভিকটিমের মোবাইল দিয়ে অপহৃত আনিসুরের ছেলের নিকট আরো টাকা তাদের দেয়া বিকাশে নম্বরে পাঠাতে বলে ও ভিকটিমকে মারপিট করে মোবাইলে কান্নাকাটির শব্দ শোনায়। এতে পুলিশ আরও তৎপর হয়ে ওঠে এবং সম্ভব্য বিভিন্নস্থানে অভিযান চালতে থাকে।
দফায় দফায় পুলিশী অভিযানের মুখে অপহরণচক্রের মুলহোতা লুংগি বাপ্পি গোবিন্দগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কে মোবাইলে তাঁর বাবা ও শাশুড়িকে ছেড়ে দেয়ার শর্তে অপহৃত আনিসুর রহমানকে মুক্তি দেয়ার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু ওসি অপহরণকারীদের কথায় রাজি না হয়ে বাপ্পির বাবার দেয়া বিভিন্ন ঠিকানা অনুযায়ী সম্ভব্য সব জায়গায় সাঁড়াশি অভিযান চালালে অপহরণকারীরা নিরুপায় হয়ে অবশেষে রাত সাড়ে ৩টার দিকে অপহৃত আনিসুর রহমানকে গোবিন্দগঞ্জ ডিগ্রি কলেজে সামনে ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।
গোবিন্দগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম মেহেদী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, অপহরণচক্রের মূলহোতা লুংগি বাপ্পি একজন মাদকের কারবারী ছিল। একটি মামলায় জামিনে বেড়িয়ে সে অপহরণচক্র গড়ে তোলে। আটকৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে এবং অপহরণ চক্রের মূলহোতা লুংগি বাপ্পিসহ এই চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারে পুলিশী তৎপরতা অব্যহত রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন