শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

দুর্নীতি আছে বলেই সব বিভাগে অব্যবস্থাপনা সাংবাদিকদের নসরুল হামিদ

না.গঞ্জ মসজিদে বিস্ফোরণে তিতাসের তদন্ত প্রতিবেদন হস্তান্তর

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:১৭ এএম

না.গঞ্জ, নসরুল হামিদ
জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, দুর্নীতি নেই এটা বলব না। দুর্নীতি আছে বলেই সব বিভাগে অব্যবস্থাপনাটা রয়ে গেছে। অব্যবস্থাপনার কারণেই অনেক কিছু আমাদের চোখের আড়ালে ঘটে যায়। আমি মনে করি, পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভালো হয়েছে। আমরা আরও ভালোর দিকে যেতে চাই। গতকাল নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় পশ্চিম তল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় গঠিত তিতাসের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন হস্তান্তর অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে নারায়ণগঞ্জের মসজিদে বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন হস্তান্তর করা হয়। তদন্ত কমিটি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে প্রতিবেদনটি হস্তান্তর করে। এ সময় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিবেদন জমা দিয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান আব্দুল ওহাব বলেন, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদটি নির্মাণে কোনো নিয়মই মানা হয়নি। মসজিদটি নির্মাণের সময় গ্যাসের পাইপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া দু’জন গ্রাহক গোপনে মাটির নিচ দিয়ে গ্যাসের রাইজার টেনে নেয়। অবৈধভাবে নেয়া বিদ্যুতের স্পার্ক থেকে অগ্নিকাÐ হয়েছে বলে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

তিনি আরো বলেন, তিতাস গ্যাসের নিয়মকানুন না মেনে, অবহিত না করে গ্রাহক তাদের নিজ উদ্যোগে স্থানীয়ভাবে তাদের রাইজারগুলো নরমালভাবে প্লাগ এবং সকেট দিয়ে স্থানান্তর করেছে। এটা ১৯৯৮ সালের ঘটনা। আমাদের এই লাইনগুলো ১৯৯৬ সালে দুর্ঘটনাস্থলের নিচে বসানো ছিল, তারা আমাদের নিয়ম না মেনে আমাদের লাইনের নিচে দিয়ে বেইজমেন্ট করেছে। এছাড়া ২০০০ সালে নিয়ম না মেনেই মসজিদের স্থাপন করে। মসজিদটি তৈরি করার সময়ই তারা লাইনগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

কমিটির প্রধান বলেন, মসজিদের ফ্লোরে ৬/৮ সিসি ঢালাই না থাকায় সেই গ্যাস মসজিদের এসি চেম্বারে গিয়ে জমে। সেখানে বিদ্যুৎ চলে গেলে বিকল্প লাইন চালু করলে তা স্পার্ক করে এই ঘটনা ঘটে বলে আমরা মনে করছি। দেওয়ান ও শওকত আলী নামের দুই ব্যক্তি অবৈধভাবে তিতাসের নিয়ম না মেনে গ্যাস লাইন স্থানান্তর করেন। এছাড়া মসজিদে অবৈধ বিদ্যুৎ লাইন ছিল। আর গ্যাস লিক হচ্ছে সেটা মসজিদ কমিটি বা স্থানীয়রা কাউকে কিছু জানাননি। একইসঙ্গে মসজিদ নির্মাণে রাষ্ট্রীয় অনুমোদন নেয়া দরকার- সেটার কোনো দলিল বা কাগজ তারা (মসজিদ কমিটি) দেখাতে পারেনি।

আবদুল ওহাব বলেন, মসজিদ কমিটির সভাপতি বলেছেন, গ্যাস লাইন সারানোর জন্য তাদের কাছে কে বা কারা ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছেন। তিনি তাদের নাম বা এর কোনো প্রমাণও দিতে পারেননি। তিনি কেন বলতে পারছেন নাÑ ওনার কাছে কে টাকা চেয়েছেন? গ্যাস লিক করেছে কমিটি আমাদের জানায়নি।
তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আলী মো. আল মামুন বলেন, যেখান থেকে অভিযোগ আসে বা পাচ্ছি সেখানেই আমরা সমাধান করছি। এটা আমাদের নিয়মিত মনিটরিংয়ের মধ্যে পড়ে। তিতাসের কেউ ঘুষ নিয়ে পার পেয়ে যাবেনÑ তা হতে পারে না। প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত ৪ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার পশ্চিম তল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ অবস্থায় ৩৭ জনকে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে ৩১ জন মারা গেছেন।

দুর্ঘটনার পরদিন তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক আব্দুল ওহাবের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ দুর্ঘটনায় ৭ সেপ্টেম্বর ফতুল্লা অফিসের আট কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করে তিতাস।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন