মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন এক তরুণী (১৫) রোগীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠছে।
এ ঘটনায় তদন্তে গত শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল কতৃপক্ষ।
ঘটনাটি ঘটেছে সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১১ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে হাসপাতালের ভিতরে। ঘটনাটি ঘটিয়েছে হাসপাতালের এক কর্মচারী।
বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন ১১ সেপ্টেম্বর রাতে সাটুরিয়া হাসপাতালে যারা কর্মরত (ডিউটি) ছিল তারা হলো, ডা: স্বপন কুমার সুর, সেবীকা (নার্স) দুলালী ও সুমি আক্তার ও ওয়ার্ড বয় মাজেদ আলী।
ধর্ষিতার পরিবার সূত্রে জানায়, গত ৩ সেপ্টেম্বর ১৫ বছররে ওই তরুণী তার শরীর ব্যাথা (সামান্য অসুস্থতা) নিয়ে সাটুরিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ধীরে ধীরে সুস্থ্য হয়ে উঠলে তাকে ১২ সেপ্টেম্বর হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র (ছুটি) দেয়া হবে বলে ১১ সেপ্টেম্বর রাতে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তার পরিবারকে জানায়। ১১ সেপ্টেম্বর রাত আনমানিক ১১ টার দিকে হাসপাতালের এক যুবক তাকে ধরে নিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে।
ধর্ষিতার মা মেয়েকে বেডে না পেয়ে খোজাখুজি করে পরে বারান্দায় পরে থাকতে দেখে। দেখে মেয়ের রক্তক্ষরন হচ্ছে। বিষয়টি তিনি নার্সকে জানায়। কর্তব্যরত নার্স কিশোরীর অবস্থা বেগতিক দেখে ডাক্তার ডেকে আনে। ওই ডাক্তার অবস্থা খারাপ দেখে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।
ধর্ষিতার বাবা বলেন, ধর্ষককে আমরা চিনি না। তবে হাসপাতালে মহিলা ওয়ার্ডে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। ওই ক্যামেরার ফুটেজ দেখলে ধর্ষককে চেনা যাবে। আমি গরীব মানুষ, মেয়ের বিয়ের কথা চিন্তা করে মুখ বুঝে চুপ রয়েছি। অভিযোগ করিনি, ঘটনার ওই সময় ডাক্তার বা নার্সদের ডেকে পাওয়া যায়নি। তারা অবশ্যই ধর্ষকের ব্যাপারে তথ্য দিতে পারবে।
এই ঘটনা নিয়ে কয়েকদিন ধরেই সাটুরিয়া হাসপাতাল এলাকায় কানঘুষা চলছে। সিসি ক্যামেরা লাগানো সারকারি হাসপাতালের রোগীর বেডে কি ভাবে এ ঘটনা ঘটেছে তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। হাসপাতালের রোগী ও স্থানীয় মানুষ জানায়, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে অনেক নারী। নিরাপত্তার জন্য হাসপাতাল রয়েছে সিসি ক্যামেরা। সিসি ক্যামেরার ভিডিও দেখলেই ধরা পরবে ওই মেয়েকে কে ধর্ষণ করেছে। তারা অভিযোগ করে বলেন হাসপাতাল কতৃপক্ষ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ না দেখে তরুণীর ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ায় চেষ্টা করছে।
সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কর্মকর্তা ডাঃ মামুনুর রশীদ জানায়, এ ঘটনা জানার পর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ সাদিককে প্রধান ও হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) কে সদস্য সচিব করে গত শনিবার ৭ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে ২ কর্ম দিবসে মধ্যে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। হাসপাতালে ভিতরে এ ঘটনা যেই ঘটাক না কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের কোন কর্মচারী এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকলেও তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল আলম বলেন, চিকিৎসা নিতে আসা তরুণীর ধর্ষণের ঘটনা নিন্ধনীয়। আশা করি তদন্ত কমিটি দ্রুত প্রতিবেদন পেশ করবেন এবং অপরাধীকে সনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন