মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন এক তরুণী (১৫) রোগীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনা তদন্তে গত শনিবার ৭ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ঘটনাটি ঘটেছে গত ১১ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে হাসপাতালের ভেতরে। ঘটিয়েছে হাসপাতালের এক কর্মচারী। বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন ১১ সেপ্টেম্বর রাতে সাটুরিয়া হাসপাতালে যারা কর্মরত ছিল তারা হল ডা. স্বপন কুমার সুর, নার্স দুলালী ও সুমি আক্তার এবং ওয়ার্ডবয় মাজেদ আলী।
ধর্ষিতার পরিবার জানায়, গত ৩ সেপ্টেম্বর ১৫ বছরের ওই তরুণীকে সামান্য অসুস্থতা নিয়ে সাটুরিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠলে তাকে ১২ সেপ্টেম্বর হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়া হবে বলে আগের রাতে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তার পরিবারকে জানায়। ১১ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক ১১টার দিকে হাসপাতালের এক যুবক তাকে ধরে নিয়ে ধর্ষণ করে।
ধর্ষিতার মা মেয়েকে বেডে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করে বারান্দায় পরে থাকতে দেখে। দেখতে পান মেয়ের রক্তক্ষরণ হচ্ছে। বিষয়টি তিনি নার্সকে জানান। কর্তব্যরত নার্স কিশোরীর অবস্থা বেগতিক দেখে ডাক্তার ডেকে আনেন। ওই ডাক্তার অবস্থা খারাপ দেখে তাকে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।
ধর্ষিতার বাবা বলেন, ধর্ষককে আমরা চিনি না। তবে হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। ওই ক্যামেরার ফুটেজ দেখলে ধর্ষককে চেনা যাবে। আমি গরিব মানুষ মেয়ের বিয়ের কথা চিন্তা করে মুখ বুঝে চুপ রয়েছি। অভিযোগ করিনি। ঘটনার ওই সময় ডাক্তার বা নার্সদের ডেকে পাওয়া যায়নি। তারা অবশ্যই ধর্ষকের ব্যাপারে তথ্য দিতে পারবে।
সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কর্মকর্তা ডা. মামুনুর রশীদ জানান, এ ঘটনা জানার পর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. সাদিককে প্রধান ও হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসারকে সদস্য সচিব করে গত শনিবার ৭ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে ২ কর্ম দিবসের মধ্য তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। হাসপাতালের ভেতরে এ ঘটনা যেই ঘটাক না কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোন কর্মচারী এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকলেও তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল আলম বলেন, চিকিৎসা নিতে আসা তরুণী ধর্ষণের ঘটনা নিন্দনীয়। আশা করি তদন্ত কমিটি দ্রুত প্রতিবেদন পেশ করবেন এবং অপরাধীকে সনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন