গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণ এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের উপর দিয়ে প্রবাহিত করতোয়া নদীতে ব্যাপক হারে পানি বৃদ্ধির ফলে চতুর্থ দাফায় বন্যায় উপজেলা ৭টি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে প্লাবিত হয়েছে। ইতোমধ্যেই করতোয়া নদী এবং করতোয়া শাখা নদী বাঙ্গালী দুই কুল ছাপিয়ে বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলী জমি তলিয়ে গেছে। কয়েকটি এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র নদী ভাঙ্গন।
জানাগেছে, গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে এবং পাহাড়ী ঢলে করতোয়া নদীতে ব্যাপকহারে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গোবিন্দগঞ্জে নদীতীরবর্তী এলাকাগুলোতে বন্যা দেখা দিয়েছে। সেই সাথে বাড়ছে নদী ভাঙ্গনের তীব্রতা। উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের বড়দহ এবং রঘুনাথপুর এলাকায় নদী ভাঙ্গনের ফলে বহু বাড়ী-ঘর এবং ফসলী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আরও নদী ভাঙ্গনের আশংকায় শংকিত হয়ে পড়েছে স্থানীয় মানুষ। মঙ্গলবার বিকেলে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বন্যার পানি প্রবেশ করায় চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়াও ঢাকা-দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কটি গোবিন্দগঞ্জের কাইয়াগঞ্জ নামকস্থানে যেকোন সময় পানিতে তলিয়ে যেতে পারে।
এছাড়াও উপলোর মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের বালুয়া এবং বোচাদহ এলাকার তৃতীয় দফায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ভাঙ্গাবাঁধের অংশ দিয়ে নতুন করে বন্যার পানি ঢুকে ৫টি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার বহু রোপা আমন ও আখ সহ অন্যান্য ফসলী জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। নদীতীরবর্তী লোকজন এ বছর চতুর্থবারের মত বন্যার কবলে পড়ায় অনেক পরিবার নি:স্ব অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করেছে।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামকৃষ্ণ বর্মন বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে বানভাসী ৫শ পরিবারের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছেন।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত করতোয়া নদীর পানি কাটাখালী পয়েন্টে বিপদসীমার ৮৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। যদি উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল এবং ভারী বৃষ্টিপাত অব্যহত থাকে তাহলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে আরও জানাগেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন