শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সংকট চরমে

অধিকাংশ এলাকার পানি নেমে গেছেঃ ঘর গোছাতে হিমশিম খাচ্ছেন মহিলারা

রংপুর থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৭:২৩ পিএম

বানের পানিতে তলিয়ে যাওয়া রংপুর মহানগরীর অধিকাংশ এলাকা থেকে পানি নেমে গেছে। অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকাগুলোতে এখনও হাঁটু পানি রয়েছে। ইতিমধ্যে নগরীর অধিকাংশ এলাকা এবং সড়ক থেকে থেকে পানি নেমে যাওয়ায় জীবন যাত্রা অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। তবে পানিবন্দি এলাকাগুলোতে নলকুপ ডুবে যাওয়া এবং এসব এলাকার প্রতিটি বাড়ির পানির পাম্প পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে মারাত্মকভাবে। এসব এলাকা থেকে পানি নেমে গেলেও পানিবন্দি পরিবারগুলো স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে না পারায় চরম খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে নি¤œ আয়ের লোকজন পরিবার পরিজন নিয়ে মারাত্মক বিপাকে পড়েছেন।
আজ সোমবার নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ এলাকা থেকে পানি নেমে গেছে। পানি নেমে যাওয়ায় এসব এলাকার লোকজন ঘর গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তবে অধিকাংশ স্থানে রাস্তা থেকে পানি নেমে গেলেও ঘরের মধ্যে পানি আটকে আছে। এসব পানি বালতি দিয়ে সেচে ঘর শুকানোর চেষ্টা করছেন। প্রতিটি বাড়ির প্রাচীর এবং ছাদে কাঁথা, কম্বল, তোষক-বালিশসহ কাপড় শুকাতে দেখা যাচ্ছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, ভিজে অনেক জিনিসপত্র বিশেষ করে তোষক, লেপ শুকাতে বেশ দীর্ঘ সময় লাগবে। অনেকের বাড়ির ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্র বিশেষ করে ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিনসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র পানিতে ভিজে নষ্ট হয়েছে। ভুক্তভোগিরা এসব রোদে শুকিয়ে নেয়ার প্রাণপন চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে পর্যাপ্ত রোদ না থাকায় বেকায়দায় পড়ে যাচ্ছেন অনেকে। পানির পাম্প নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পানির অভাবে ঘর ধোয়া-মোছার কাজে বাড়ির মহিলারা হিমশিম খাচ্ছেন। সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায় নগরীর অনেক এলাকায় এখনো হাঁটুপানি রয়েছে। এখনো পানির নিচে এসব এলাকার রাস্তাঘাট, বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ফলে এসব এলাকার অনেক পরিবারই এখনও স্কুল-কলেজে আশ্রয় নিয়ে আছেন। অনেকেই আত্মীয়দের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন। বিভিন্ন স্কুল-কলেজে আশ্রয় নেয়া পরিবারগুলোর মাঝে চরম খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। তবে গতকাল বিভিন্ন স্থানে পানিবন্দি পরিবার গুলোর মাঝে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবীদের পক্ষ থেকে খিচুড়িসহ শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। তবে তা চাহিদার তুলনায় অতি নগন্য। বিভিন্ন এলাকা থেকে পানি নেমে যাওয়ায় ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন লোকজন। ২ দিন পানির নিচে থাকায় অনেক বাড়ির আসবাবপত্র ছাড়াও মুল্যবান কাগজপত্র, জমির দলিল নষ্ট হয়ে গেছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, হঠাৎ করে রাতের মধ্যে পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় প্রতিটি বাড়ির পানির পাম্প, ফ্রিজ নষ্ট হয়ে গেছে। পানির মোটর মেরামতের দোকানগুলোতে প্রচন্ড ভীড় লেগে গেছে। কোন দোকানেই ২/৩ দিনের আগে মেরামত করে দিতে পারছে না। পাম্প বদলিয়ে নতুন পাম্প লাগানোর ক্ষেত্রেও মিস্ত্রীর সিরিয়াল পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে নগরীর বাসা-বাড়িগুলোতে তীব্র পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
বিভিন্ন এলাকা থেকে পানি নেমে গেলেও নগরীর জীবন যাত্রা এখনও স্বাভাবিক না হওয়ায় নি¤œ আয়ের লোকজন কাজে যেতে পারছেন না। ফলে এসব পরিবার বিশেষ করে রিক্সা চালকসহ দিনে এনে দিনে খাওয়া পরিবারগুলো চরম খাদ্য সংকটে পড়ে গেছেন। জরুরী ভিত্তিতে এসব পরিবারের মাঝে ত্রাণ ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা প্রয়োজন।
এদিকে, হঠাৎ পানিবন্দি হয়ে থাকা এবং পানির ¯্রােতের কারনে অধিকাংশ এলাকায় রাস্তাগুলো ভেঙ্গে গেছে। কোন কোন স্থানে ড্রেন ভেঙ্গে রাস্তার সমান হয়ে যাওয়ায় ময়লা পানি জমে আছে। ফলে এসব রাস্তায় চলাচলের ক্ষেত্রে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন