দুই বছরেও শেষ হয়নি সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার-টেবলাই ব্রিটিশ সড়কের সংস্কার কাজ। কাজের ধীরগতির কারণে সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার, নরসিংপুর ও সদর ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ। প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে উপজেলা সদর ও জেলা সদরে অসংখ্য মানুষ যাতায়াত করে থাকে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নানান টালবাহানায় দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কার কাজের কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তিন ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষের। সড়ক জুড়ে খানাখন্দ ও গর্ত। বিপদজনক অবস্থায় বেড়িয়ে আছে রড ও সিমেন্ট পাথরের ভাঙ্গা অংশ। এই সড়ক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে মোটরসাইকেল চলাচল করছে মানুষ। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা নাজুক থাকায় শিক্ষার্থী, চাকুরিজীবী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ দীর্ঘ পথ পায়ে হেটে, নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে। সবচেয়ে বেশি অসুবিধা হচ্ছে ব্যবসায়ী ও স্বাস্থ্যসেবা গ্রহিতাদের। সামান্য বৃষ্টিপাত হলেই পানি জমে রাস্তাটি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে।
জানা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে দোয়ারাবাজার-টেবলাই ব্রিটিশ সড়কের সংস্কারের কাজ পায় স্থানীয় একজন ঠিকাদার। কিন্তু বড় বাজেটের প্রকল্পের কাজ করতে স্থানীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অনাগ্রহী হলে পুনরায় টেন্ডার হয়। পরবর্তীতে ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে দোয়ারাবাজার-ব্রিটিশ পয়েন্ট হয়ে বালিউড়া বাজার পর্যন্ত ১০ হাজার ৬০০ মিটার সড়কের সংস্কার কাজ পায় লক্ষ্ণীপুর-ফরিদপুর কন্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এর ব্যয় ধরা হয় ২২ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর সংস্কার কাজের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক।
দীর্ঘ কয়েক বছর ভোগান্তির পর চলাচল অনুপযোগী উপজেলার প্রধানতম এ সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু হলে উপজেলাবাসীর আশার সঞ্চার হয়। কিন্তু শুরু থেকেই সড়কটির সংস্কার কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধিকারী সালেহ ইসলাম নিজে না এসে তার নিযুক্ত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে কাজ করানোর ফলে রোল উপেক্ষা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যেই একবার সংস্কার কাজে অনিয়মের অভিযোগে কাজ বন্ধ করে দেয় কাজটির তদারকির দায়িত্বে থাকা দোয়ারাবাজার উপজেলার এলজিইডি অফিস। পরে নানান অজুহাতে দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকার পর স¤প্রতি সময়ে আবারও সংস্কার কাজ শুরু হয়। কাজের ধীরগতি ও সময়ক্ষেপনে হতাশ এ অঞ্চলের মানুষ। কাজের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান জানান, বন্যার কারণে কাজ বন্ধ ছিলো। এখন আবার কাজ শুরু হয়েছে। নতুন করে কাজের সময়সীমা আরো এক বছর বাড়ানো হয়েছে। দোয়ারাবাজার উপজেলার এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী দেবতোষ পাল জানান, নির্মানাধিন রাস্তায় বন্যার পানি উঠেছিল। এ জন্য কাজ কিছুদিন বন্ধ থাকার পর আবারও শুরু হয়েছে। দোয়ারাবাজার-টেবলাই ব্রিটিশ সড়কের ১০হাজার ৬শ’ মিটার কাজের মধ্যে এ পর্যন্ত প্রায় ৪কিলোমিটার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে গাইডওয়ালসহ অন্যান্য কাজ চলমান রয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন