দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে মাদরাসার উন্নয়ন কাজে বাধা দিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতা দুই হালি মামলার আসামি ময়নুল মাস্টারকে হিলি সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে হাকিমপুর থানা পুলিশ। গ্রেফতার আসামি ময়নুল মাস্টার দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার চাঁটশাল বিলপাড়া গ্রামের মৃত তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে এবং পালশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ সেপ্টেম্বর উপজেলার ডুগডুগীহাট হাফেজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানার বারান্দা নির্মাণ কাজ চলাকালে মইনুল মাস্টার ও ফয়সাল হোসেনের নেতৃত্বে ৬-৭ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদাবাজি করেন। এসময় তারা নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। পরে ম্যানেজিং কমিটির লোকজন এসে পুনরায় কাজ চালু করে।
একই দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে ম্যানেজিং কমিটির লোকজন মাদরাসার অফিস কক্ষে থাকা অবস্থায় তারা মাদরাসার অফিস কক্ষে আসে। এসময় তারা ২ লাখ টাকা চাঁদা না দিয়ে পুনরায় কাজ শুরু করায় অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে থাকে। এক পর্যায়ে তাদের মেরে ফেলার হুমকি দেয় এবং ম্যানেজিং কমিটির লোকজনকে লাঞ্ছিত করে। পরের দিন ১ অক্টোবর মাদরাসা কমিটির সভাপতি হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে ময়নুল মাস্টারসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করে ঘোড়াঘাট থানায় চাঁদাবাজির একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- উপজেলার ডুগডুগিহাট বাজারের পুড়ইল মোল্লাভাগ গ্রামের শাহজাহান আলীর ছেলে ফয়সাল হোসেন, দেওগ্রামের মৃত ছাবেদ আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম, পালশা পশ্চিমপাড়া গ্রামের ইয়াকুব আলীর ছেলে মেহেদী হাসান, বিশাইনাথপুর গ্রামের সহিদ হোসেনের ছেলে সজিব মিয়া, দেওগ্রাম পশ্চিমপাড়া গ্রামের ছামসুল ইসলামের ছেলে ইরফানুল হক জুয়েল ও পুড়ইল মোল্লাভাগ গ্রামের মৃত মোখলেছুর রহমানের ছেলে সুমন মিয়া। ইরফানুল হক জুয়েলকে গ্রেফতার করে গত বৃহস্পতিবার জেলহাজতে প্রেরণ করা হয় এবং অন্য আসামিদেরকে গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রাখা হয়।
থানা সূত্রে জানা যায়, ময়নুল মাস্টারের বিরুদ্ধে ২০১৬ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ঘোড়াঘাটসহ দেশের বিভিন্ন থানায় চাঁদাবাজি, কোকেন পাঁচার, মারামারি ও পুলিশ অ্যাসাল্টসহ ৭টি মামলা রয়েছে। বহুল আলোচিত ঘোড়াঘাটের ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ময়নুল মাস্টারকে আটক করেছিল দিনাজপুর জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
ঘোড়াঘাট থানার ওসি আজিম উদ্দীন জানান, গ্রেফতারকৃৃত ময়নুল মাস্টারকে গতকাল দিনাজপুর আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। চাঁদাবাজির মামলা দায়েরের পর থেকেই তাকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত ছিল। গত রোববার দুই থানার সমন্বয়ে তাকে সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এই মামলার অপর ৫ আসামিকে গ্রেফতার করতে অভিযান চলমান রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন