যোগাযোগ বিচ্ছিন্নের আশঙ্কা
নওগাঁর আত্রাইয়ের কাশিয়াবাড়ি রেগুলেটরটি দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় হুমকির মুখে পড়েছে। যে কোন সময় এই গুরুত্বপূর্ণ রেগুলেটরটি ভেঙে যেতে পারে। যার ফলে রাণীনগর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের সকল গ্রাম ও আশেপাশের অঞ্চল এবং আত্রাই উপজেলার ভোঁপাড়া, সাহাগোলা ও বিশিয়া ইউনিয়নের সকল গ্রাম বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। একই সাথে বিচ্ছিন্ন যাবে আত্রাই ও বগুড়ার মধ্যে একমাত্র যোগাযোগ ব্যবস্থা।
জানা গেছে, বর্ষা মৌসুমে আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেই পানির চাপে কোন যে এটি ভেঙে যায় এই আশঙ্কায় দিন কাটাতে হয় এই অঞ্চলের লাখো মানুষকে। চলমান বন্যায় পানি ওভার টপিং ও উইং ওয়ালের পাশে ধস নামা শুরু করলে পানি উনয়ন বোর্ড বালি বস্তাসহ কিছু কাজ করে রেগুলেটরটিকে ভেঙে যাওয়ার হাত থেকে কোন মতে টিকে রেখেছে। এটি যদি শুকনো মৌসুমে নতুন করে আধুনিক মানসম্মতভাবে এবং আরো বড় আকারে নির্মাণ করা না হয় তাহলে আগামী বর্ষা মৌসুমে আত্রাই নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
রেগুলেটরটির অধিকাংশ গেইটের দরজা মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে গেছে। ১০টি গেটের মধ্যে ২/৩টি গেট সচল থাকলেও অন্য সবগুলো অকেজো হয়ে রয়েছে। যার কারণ এটির পানির অধিক চাপ সহ্য করার মতো কোন অবস্থাই অবশিষ্ট নেই। চলমান চতুর্থ দফার বন্যায় রেগুলেটরের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে বালু ভর্তি বস্তা দিয়ে প্রবেশ মুখ বন্ধ করে দেয়া হয়। প্রায় ১ সপ্তাহ আত্রাই-পতিসর তথা আত্রাই-বগুড়ার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ ছিলো।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল করিম, হানিফ মন্ডলসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, যখন পানির চাপে ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয় তখন বস্তা দিয়ে ক্ষণিকের জন্য তা রক্ষার চেষ্টা করা হয়। পরে আর কোন খোঁজ থাকে না।
ভোঁপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানবক্স সরদার বলেন, রাণীনগর ও আত্রাই এই দুই উপজেলার মানুষ, ফসলের মাঠসহ অন্যান্য জান-মাল রক্ষার্থে দুই উপজেলার মাঝখানে এই রেগুলেটরটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু প্রায় ৫০বছর পার হলেও কোন সংস্কার কিংবা মেরামতের ছোঁয়া স্পর্শ করেনি এটিতে যার কারণে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় চলে এসেছে। একাধিকবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানালেও আজ পর্যন্ত কোন লাভ হয়নি।
নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী প্রবীর কুমার পাল বলেন, চলতি বন্যা মৌসুমে নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে রেগুলেটরটি ওভার টপিং হয়ে উইং ওয়ালের পাশে ধস নামা শুরু করার আগেই সিনথেটিক ব্যাগ ডাম্পিং করে রেগুলেটরটিকে রক্ষা করেছি। ইতোমধ্যে বগুড়া যান্ত্রিক বিভাগ থেকে রেগুলেটরটি পরিদর্শন করে গেছে। ক্ষতিগ্রস্থ অংশগুলো মেরামত করার জন্য বাজেট চেয়েছি, বাজেট পেলে শুষ্ক মৌসুমে কাজ করবো। দুই উপজেলার লাখ লাখ মানুষ ও ফসলের মাঠকে রক্ষার্থে এটি ভেঙে দ্রুত নতুন করে নির্মাণ করার কোন বিকল্প নেই। রক্তদহ-লোহাচুরা পুনর্বাসন প্রকল্প নামে ১৬৭কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্পের ডিপিপি প্রস্তুত করেছি যার কারিগরি কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক পুনর্গঠিত করা হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন