শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ভন্ড কবিরাজের খপ্পরে প্রতারিত

বড়াইগ্রাম (নাটোর) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১৩ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০১ এএম

নাটোরের বড়াইগ্রামে বিনা বেগম (৫০) নামে এক ভন্ড মহিলা কবিরাজের খপ্পড়ে পড়ে প্রতারিত হয়েছেন হাজারো মানুষ। এ ঘটনায় প্রতারণার স্বীকার লোকজনসহ এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিনা বেগম উপজেলার জোনাইল ইউনিয়নের বোর্ণী গ্রামের লোকমান হোসেনের স্ত্রী। 

এলাকাবাসী জানান, বিনা বেগম দীর্ঘদিন যাবৎ সংসারে অশান্তি, স্বামী-স্ত্রীর দ্বন্দ, বন্ধ্যাত্ব, পছন্দের মানুষকে পাইয়ে দেওয়া, অবাধ্য সন্তানকে নিয়ন্ত্রইে আনা, প্যারালাইসিসসহ নানাবিধ সমস্যার সমাধান দিয়ে আসছিলেন। এ কাজে তার কাছে থাকা জ্বীন তাকে সহযোগিতা করে বলে তিনি রোগীদেরকে বোঝাতেন। এসব ক্ষেত্রে তিনি প্রতারণার অংশ হিসাবে প্রতি শনি ও মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিজ বাড়িতে আসন বসান। এ সময় বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে যারা আসেন তাদের কারো বাড়িতে শত্রু তাবশত তাবিজ, কারো বাড়িতে শামুক বা গাছ পুঁতে রাখা আছে এবং এ কারণেই বিভিন্ন সমস্যায় ভূগছেন বলে জানান তিনি। একই সঙ্গে জ্বীনের সাহায্যে এসব তাবিজ বা গাছ তুলে এনে সমস্যার সমাধান করে দেয়ার আশ্বাস দেন। এ জন্য তিনি এক হাজার ৭৮০ টাকা ফি নেন। এরপর বাড়ি বন্ধ করার জন্য ৫শ’ টাকা, তাবিজ দেয়ার জন্য ৩শ’ টাকা এবং জনপ্রতি ২০ টাকা করে নজরানা ফি নেন। কিন্তু জ্বীনের মাধ্যমে তাবিজ কবজ তুলে আনার গোপন রহস্য ফাঁস হওয়াসহ তার এসব তদ্বিরে কোন কাজ না হওয়ায় ভুক্তভোগীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি চিকিৎসা নিতে যাওয়া উপজেলার খোকশা গ্রামের নাসরিন বেগম জানান, আমি একটি বিষয়ে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলাম। চিকিৎসা হিসাবে টাকার বিনিময়ে আমাকে একটি তাবিজ দেন, কিন্তু কোন কাজ না হওয়ায় তাবিজ খুলে দেখি ভিতরে শুধু দুটি শিমুলের বিচি আছে।
দিঘলকান্দি গ্রামের শ্রাবন্তী খাতুন জানান, আমি স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে লোকমুখে শুনে বিনা বেগমের কাছে চিকিৎসা নিতে যাই। এ সময় আমার বাড়িতে প্রতিপক্ষের পুঁতে রাখা তাবিজ তুলে দেয়া এবং আমার শরীর বন্ধ করার তাবিজ বাবদ মোট দুই হাজার ৮০ টাকা নেন। কিন্তু কোন রকম কাজ না হওয়ায় আমি তাবিজ খুলে দেখি তার ভিতরে কিছুই নেই, শুধু মোম দিয়ে আটকানো। এ ব্যাপারে সরেজমিনে কথা বলার জন্য বিনা বেগমের বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার স্বামী লোকমান হোসেন জনান, প্রতারণার বিষয়টি সঠিক নয়, তবে ঘটনার পর থেকে আমি তাকে এই চিকিৎসা বন্ধ করতে বলেছি। বড়াইগ্রাম থানার উপ-পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন জানান, আমি মৌখিক অভিযোগ পেয়ে তাদেরকে এই প্রতারণা বন্ধ করতে বলেছি। কেউ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন