শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

কেন্দ্রীয় বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ সরকারের যুগান্তকারী পদক্ষেপ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা পরিদর্শনকালে শিক্ষামন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ১৪ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির কোনো অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যাকে ঠিক করে দিবে তাকেই নিতে হবে। মানসম্মত শিক্ষক নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয়ভাবে বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগকে যুগান্তকারী বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। সম্পূর্ণ সচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার সাথে সারা দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে নিয়োগপ্রাপ্ত এসব শিক্ষক সত্যিকার অর্থে নিবেদিতপ্রাণে দায়িত্ব পালন করে শিক্ষার মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন। গতকাল (শনিবার) বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) আয়োজিত ১৩তম বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার ঢাকা কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, বেসরকারি স্কুল-কলেজে শিক্ষক হতে চাইলে অবশ্যই শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণের সনদ থাকতে হয়। নিয়োগ বাণিজ্য ঠেকাতে গত বছরের ২১ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয় বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা গ্রহণ ও প্রত্যয়ন বিধিমালা সংশোধন করে, যার ফলে শিক্ষক নিয়োগে পরিচালনা পর্ষদের ক্ষমতা খর্ব হয়। নতুন নিয়মে বেসরকারি স্কুল-কলেজে মেধার ভিত্তিতে এনটিআরসি-এর মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার কথা থাকলেও প্রক্রিয়া শেষ করতে না পারায় ২০১৫ সালের ২২ অক্টোবর থেকে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ আছে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যে শিক্ষক নিয়োগ দেই সেটা স্বচ্ছ হয় না কিংবা সেটা ধরতে পারেন, সঠিকভাবে হয় না। যার ফলে আমরা মেধাবীদের আকৃষ্ট করতে পারি না, আবার করতে পারলেও আমরা তাকে ঠিকভাবে নিয়োগ দিতে পারি না। দেশে ৩৭ হাজার এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান আছে জানিয়ে তিনি বলেন, “বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সেটা প্রযোজ্য না হলেও এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য প্রযোজ্য। সুতরাং বেতন বৃদ্ধি পেয়েছে, আমরা যদি উন্নতমানের নিয়োগ দিতে পারিÑ এটা আমাদের জন্য পজেটিভ হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এখন থেকে আমরা এখান (এনটিআরসিএ) থেকেই নিয়োগ দিব এবং পরীক্ষা নেয়া হবে। প্রায় ছয় লাখ পরীক্ষার্থীর মধ্যে মে ও জুন মাসে অনুষ্ঠিত প্রাথমিক বাছাইয়ে এক লাখ ৪৭ হাজার জন উত্তীর্ণ হন জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, তাদের মধ্যে শুক্রবার পরীক্ষা দেন স্কুল পর্যায়ের ৯০ হাজার ৯৪৪ জন এবং মাদরাসা ও টেকনিক্যালের ৬২০ জন। শনিবার ৫৫ হাজার ৬৯৮ জন পরীক্ষা দিচ্ছেন কলেজ শিক্ষক হওয়া জন্য।
এই পরীক্ষায় যারা ভালো করবেন তাদের শিক্ষক হিসেবে পদায়ন করা হবে। নিয়ম করেছি, পরীক্ষা শেষ হওয়ার ১৫ দিনে খাতা দেখবেন এবং পরের ১৫ দিন প্রধান পরীক্ষকের কাছে খাতা পৌঁছবেন। তিনি খাতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জমা দিবেন। সেখান থেকে বাছাই করে মৌখিক পরীক্ষা নিব। অক্টোবরের শেষদিকে চূড়ান্ত ফল প্রকাশের আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, মৌখিক পরীক্ষা শেষ করার ৩০ দিনের মধ্যে ফল দিতে পারব। এই প্রক্রিয়াগুলো শেষ করতে অক্টোবর শেষ দিক পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। সব স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা থেকে চাহিদা নেয়ার কথা জানিয়ে সে অনুসারে ছয় মাসে শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগের আশ্বাস দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যে থানা খালি সেখানকার স্থানীয়দের নিয়োগ দেয়া হবে। না থাকলে জেলা পর্যায় এবং তারপর বিভাগীয় পর্যায় থেকে। তারপরও পাওয়া না গেলে যেখান থেকে পাওয়া যায় সেখান থেকে নিয়োগ দেয়া হবে। তবে মূল শহর বা বিভাগী শহরে জাতীয়ভাবে নিয়োগ দেয়া হবে; তার বাড়ি সেখানে কিনা তা দেখা হবে না। এনটিআরসিএ থেকে নিয়োগপ্রাপ্তকেই নিয়োগ দিতে হবে জানিয়ে নাহিদ বলেন, “শিক্ষক নিয়োগে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি বা কারও কোনো হস্তক্ষেপ হবে না। তাদের হস্তক্ষেপ করার কোনো অধিকার বা সুযোগ নেই। আমরা একজনকে ঠিক করে দিব তাকে নিতে হবে।”
নিয়োগ প্রক্রিয়ার পুরোটাই অনলাইনে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “সুতরাং কারও হস্তক্ষেপ করার সুযোগ থাকবে না, কোনো সুযোগ নেই। কোনো ধরনের ঘুষ, স্বজনপ্রীতি ও সুবিধা নেয়ারও সুযোগ নেই। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত ১৫ হাজারের মতো চাহিদা আছে, আপাতত তাদের নিয়োগ দেয়া হবে। এটা বাড়তেও পারে। যেহেতু আমরা ভালো শিক্ষক বাছাই করছি, প্রচুর শিক্ষক হাতে আছে- চাহিদা হলেই নিয়োগ দেয়া হবে।” স্কুল-কলেজের খÐকালীন বা অস্থায়ী শিক্ষকদের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটা সময় দিয়ে পিরিওডিক্যালি পরীক্ষা নিব, বিজ্ঞাপন দিব, চাহিদা চাইব। যিনি এর আওতায় পরীক্ষা দিয়ে শিক্ষক হবেন না, তিনি তো আমাদের খাতার শিক্ষক হিসেবে গণ্য হবেন না। পরিদর্শনকালে মন্ত্রীর সাথে আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা সচিব মোঃ সোহরাব হোসাইন, এনটিআরসিএ’র চেয়ারম্যান এ.এম.এম. আজহার এবং ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মোয়াজ্জেম হোসেন মোল্লা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
মো: জিল্লুর রহমান ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৬, ৫:৩০ পিএম says : 0
বেতনের জন্য আবেদন করার প্রক্রিয়া করার জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধানদের দায়িত্ব কি ন্তু এন টি আর সিএ এই বিষয়ে কোন তদরকি বা জরুরী পদক্ষেপ নিবেন কি? জানাএল খুবই উপকৃত হব।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন