নেত্রকোনায় পৃথক দুর্ঘটনায় ৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে পৃথক স্থানে পুকুরের পানিতে ডুবে তিন শিশু ও বারহাট্টা উপজেলা সদরের সাহতা ইউনিয়নের স্বল্প দশাল নামক স্থানে ট্রেনে কাটা পড়ে তিনজন। পানিতে ডুবে মৃত শিশুরা হলেন, আটপাড়া উপজেলার বানিয়াজান ইউনিয়নের মোবারকপুর গ্রামের সাদেক মিয়ার পুত্র আমীর হামজা (৬) ও তারই প্রতিবেশী হবি মোড়লের পুত্র সানি (৫) ও মদন উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের ছত্রকোনা গ্রামের শামীম কবির খান রেনু মিয়ার বাক প্রতিবন্ধী শিশু তোয়া আক্তার (৬)। আর ট্রেনে কাটা পড়ে নিহতরা হলেন, উপজেলার স্বল্প দশাল গ্রামের মৃত আবদুল হেকিমের ছেলে স্বপন মিয়া (২২) ও রিপন মিয়া (২৪) এবং একই গ্রামের মৃত কুরপান আলীর ছেলে মোকলেছ মিয়া (২৮)।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আমীর হামজা ও সানি গতকাল সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বাড়ির সামনে খেলা করার সময় সকলের অগোচরে পাশ্ববর্তী পুকুরের পানিতে পড়ে যায়। পরে পরিবারের লোকজন তাদেরকে কোথাও দেখতে না পেয়ে চারপাশে খোঁজাখুজি শুরু করে।
এক পর্যায়ে পরিবারের লোকজন পুকুরে তাদের লাশ ভাসতে দেখে সেখান থেকে উদ্ধার করে দ্রুত আটপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে মৃত ঘোষণা করে। এছাড়া ছত্রকোনা গ্রামের বাক প্রতিবন্ধী শিশু কন্যা তোয়া আক্তার অন্যান্য দিনের ন্যায় গত শনিবার রাতে পরিবারের সঙ্গে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। গতকাল সকালে পরিবারের লোকজন ঘুম থেকে উঠে তাকে বিছানায় দেখতে না পেয়ে চারপাশে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। এক পর্যায়ে বাড়ির সামনে পুকুরে শিশুটির লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যায়।
এদিকে, মোহনগঞ্জ- ময়মনসিংহ রেলপথের নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলা সদরের সাহতা ইউনিয়নের স্বল্প দশাল নামক স্থানে ট্রেনে কাটা পড়ে তিনজন নিহত হয়েছেন। গতকাল ভোরে হাওর এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে কাটা পড়েন তারা। এলাকাবাসী ও স্থানীয় পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জেলার বারহাট্টার স্বল্প দশাল গ্রামের স্বপন মিয়া, রিপন মিয়া ও মোকলেছ মিয়া রেললাইনের পাশের পুকুরে মাছ ধরার জন্য শ্যালোমেশিনে সেচ দিচ্ছিলেন। ভোরে ক্লান্তি দেখা দিলে তারা তিনজন রেললাইনের ওপর ঘুমিয়ে পড়েন।
ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে মোহনগঞ্জগামী হাওর এক্সপ্রেসের নিচে কাটা পড়ে তিনজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। সকালে এলাকাবাসী বিষয়টি দেখে স্থানীয় বারহাট্টা থানা পুলিশকে জানায়। খবর পেয়ে মোহনগঞ্জ রেলওয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ হাসপাতালে পাঠায়। বারহাট্টা উপজেলার স্বল্প দশাল গ্রামের রংমিয়া জানান, ওই তিনজন গত তিন চার দিন ধরে বিভিন্ন স্থানের ছোট ছোট জলাশয় সেচে মাছ ধরে তা বিক্রি করে আসছিল। কয়েক রাত না ঘুমানোর কারণে হয়ত তারা রেললাইনে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ছিল। আর ওই সময় ট্রেন চলে আসায় কাটা পড়ে যায়। মোহনগঞ্জ রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সমর বড়ুয়া বলেন, লাশগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সুরতহাল তৈরি করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন