সামাজিক বিচ্ছিন্নতা বয়স্কদের মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ায়, তারা নিঃসঙ্গ বোধ করুন বা না করুন। যুক্তরাজ্যের গবেষকরা একথা বলেছেন। যুক্তরাজ্যে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার পুরুষ ও নারীর উপর গবেষণা করে দেখা গেছে, ৫২ কিংবা তার চাইতে বেশি বয়সের যারা পরিবার ও বন্ধু-বান্ধব থেকে বিচ্ছিন্ন, পরবর্তী সাত বছরে তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ২৬ শতাংশ বেশি। তারা একাকীত্ব বোধ করুন বা না করুন, স্বাস্থ্যের ওপর সামাজিক এই বিচ্ছিন্নতার প্রভাবে কোনো হেরফের দেখা যায়নি।
যুক্তরাজ্যে বয়স্ক মানুষদের চাকরি থেকে অব্যাহতি পাওয়াকে এ সমস্যার একটি বড় কারণ হিসেবে অভিহিত করেছেন গবেষকরা। লন্ডন ইউনিভার্সিটি কলেজের গবেষকরা গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন। তারা জানান, নিঃসঙ্গতা এবং সামাজিক বিচ্ছিন্নতার সঙ্গে দুর্বল স্বাস্থ্যের যোগসূত্র যে এই গবেষণাতে প্রথম জানা গেল তা নয়। এই গবেষণায় গবেষকরা এটিই খতিয়ে দেখতে চেষ্টা করেছেন যে, একাকীত্বের অনুভুতির কারণে স্বাস্থ্যে প্রভাব পড়ছে নাকি সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন থাকার বাস্তবতা স্বাস্থ্যে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। গবেষকরা বলেছেন, সামাজিকভাবে যারা বিচ্ছিন্ন, অর্থাৎ যারা বন্ধু-বান্ধব এবং পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন না, তাদের বেশির ভাগই বয়স্ক কিংবা অবিবাহিত হওয়ার কারণে নানা রকম রোগগ্রস্ত। দীর্ঘদিন অসুস্থতার কারণে তাদের চলাফেরা কমে যায় এবং তারা ফুসফুস বা বাত সংক্রান্ত জটিলতায় ভোগেন। একাকীত্ব বোধটা বেশি দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে নারীদের ক্ষেত্রে এবং সে কারণে তাদের বিষণ্ণতা থাকা কিংবা নিঃসঙ্গ বোধ করা দুয়ের সঙ্গেই মৃত্যুযোগ আছে। এর আগের কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, দুর্বল সামাজিক সম্পর্কের সঙ্গে অকাল মৃত্যুসহ আরও অনেক মারাত্মক সঙ্কটের সম্পর্ক আছে। নিঃসঙ্গতা ও সামাজিক সম্পর্ক স্বাস্থ্যের ওপর কতটা প্রভাব ফেলে তা বোঝার জন্য এ ধরনের আরও গবেষণার প্রয়োজন।
আফতাব চৌধুরী
সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন