ভারত থেকে নেমে আসা হঠাৎ পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিতে ফেনীর ফুলগাজীতে মুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ২টি স্থানে ভেঙে ৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ২শ’ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
বন্যা পুর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্যে জানা যায়, গতকাল সকাল ৬টার দিকে মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী জহির উদ্দিন জানান, দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার উপরে নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম জানান, এখন ভাঙনের স্থান দিয়ে প্রবল বেগে এলাকাগুলোতে পানি প্রবেশ করছে। পানিবন্দি পরিবারগুলোর জন্য শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।
ফুলগাজী সদর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জানান, গত শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর দৌলতপুর এলাকার মোহাম্মদ উল্যাহর বাড়ির পাশে বাঁধের ৫০-৬০ ফুট অংশ ভেঙে প্রবল বেগে গ্রামগুলোতে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে। একই রাতে দক্ষিণ দৌলতপুরেও বাঁধের একটি স্থান ভেঙে পড়ে। এর ফলে দক্ষিণ দৌলতপুর ও ঘনিয়ামোড়া, শাহাপাড়া, শ্রিপুরসহ পাঁচটি গ্রাম প্লাবিত হয়। মাঠের ফসল এবং পুকুরের মাছ ভেসে গিয়ে কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তিনি আরও জানান, এর আগে গত জুলাই মাসে বাঁধ আরেকবার ভেঙেছিল। এবারও সেই একই স্থানে বাঁধ ভেঙেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার যথাসময়ে মেরামত না করায় সেটি পুনরায় ভেঙে পড়ে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ফেনীর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আকতার হোসেন মজুমদান জানান, পাউবো’র কর্মকর্তারা ভাঙনের স্থান পরিদর্শন করেছেন। প্রবল পানির স্রোতের ফলে ভাঙনের স্থান মেরামত করা যাচ্ছে না। ইতোমধ্যে মুহুরী নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। পানি কমলে দ্রুত বাঁধ সংস্কার করা হবে।
ফাটল দেখা দেয়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের আরও বেশ কয়েকটি স্থানে ভাঙন দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। সরেজমিনে দেখা যায়, ভাঙনের স্থানগুলো দিয়ে এখনও প্রবল বেগে পানি ঢুকছে। অন্য কোন স্থানে যাতে ভাঙন সৃষ্টি না হয় সেজন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষ সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বিস্তীর্ণ জমির রোপা ও শীতকালিন শাক সবজির খেত পানিতে তলিয়ে গেছে। সোহাগ ও নুর আলম নামে স্থানীয় দুই যুবক জানান, ছোট থেকে বড় হয়েছি কিন্তু নদীর বাঁধ ভাঙনের কবল থেকে এখনো রক্ষা পাইনি। প্রতি বছর ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, রাস্তাঘাট, মাছের ঘের পানির নিচে তলিয়ে যায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন