কলাপাড়ায় একদল প্রভাবশালী স্লুইসগেটের পানি প্রবাহের স্বাভাবিক গতিধারা বন্ধ করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করে একধরনের লুটপাটের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে। এরফলে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ধান এবং রবিশস্য উৎপাদনকারী মাঠের কৃষকরা। এই শ্রেনীর প্রভাবশালী মহল মাছ শিকারের স্বার্থে স্লুইসগেট নিয়ন্ত্রন নিজেদের মধ্যে নিয়ে গায়ের জোরে খাল-বিলের পানি আটকে রেখে কৃষকের চরম ভোগান্তি সৃষ্টি করছে। কৃষকের শীতকালীন সবজিসহ আমন ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতিসহ তিন দফায় সবজির ক্ষেত নষ্ট হওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েছে কৃষককুল । এরফলে বাজারে পর্যাপ্ত সবজির সরবরাহ না থাকায় চড়া দামে কিনতে হচ্ছে সবজি।
বিগত কয়েকমাসে দফায় দফায় ভারী বৃষ্টিপাতে এলাকার খাল-বিল পানিতে পানিতে থৈ-থৈ করছে । ডুবে গেছে শীত কালীন সবজিসহ আমন ক্ষেত । ফলে পঁেছ গেছে লাল শাক,পুই শাক, বাঁধা কপি, মূলা, লাউ, শশা, কুমড়া ক্ষেত সহ অন্যান্য সবজি। সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে সবজি চাষে মডেল ইউনিয়ন হিসেবে পরিচিত নীলগঞ্জ ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে উৎপাদিত সবজি এলাকার চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ করা হতো ঢাকা,বরিশাল সহ অন্যান্য স্থানে। এসব সবজি চাষীদের অনেকে ব্যাংক কিংবা এনজিও থেকে লোন নিয়ে চাষাবাদে বিনিয়োগ করতো। তিন তিনবার ক্ষেতের ফসল নষ্ট হওয়ায় তারা পড়েছে বিপাকে।
নীলগঞ্জ ইউনিয়নের কৃষক তোফাজ্জেল হোসেন জানান, এ বছরের ক্ষতি শুধু অর্থেরই নয়, সময়েরও । বিগত বছরে এমন সময় শীতকালীন সবজিতে বাজার সয়লাব থাকতো, দামও থাকতো তুলনামূলকভাবে কম। এবছর দফায় দফায় বৃষ্টি অপরদিকে, বৃষ্টির পানি আটকে রাখায় চরম ক্ষতির শিকার হলো কৃষক । টিয়াখালী ইউনিয়নের পুজাখোলা গ্রামের কৃষক আবদুল কাদের জানান, প্রতিবেশীদের কাছ থেকে ধার করে টাকা এনে সবজি ফলিয়ে দেনা পরিশোধ করি। এবছর কি ভাগ্যে লেখা আছে জানিনা ।
চাকামইয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা শিক্ষক আতাজুল ইসলাম জানান, চাউলাপাড়া-কচুপাত্রা এবং চুঙ্গাপাশা গ্রামের স্লুইসগেট যখন যারা ক্ষমতায় থাকেন তাদের লোকজনই নিয়ন্ত্রন করেন। মাছ শিকার করার স্বার্থে স্লুইসগেট নিয়ন্ত্রনকারীরা পানি আটকে ব্যাপক ক্ষতি করছে কৃষকদের।
কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল মান্নান জানান, ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের পুন:বাসন করা হবে, তালিকা তৈরীর কাজ চলছে । এছাড়া পানি আটকে রাখার ব্যাপারে সকল ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে বলা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন