শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

সেই চেয়ারম্যানের কান্ড

উলিপুর (কুড়িগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ৬ নভেম্বর, ২০২০, ১২:১৬ এএম

একের পর এক কান্ড ঘটিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আবু তালেব সরকার। গত রোববার একই ইউনিয়নের দোলন এলাকার নবম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে বিয়ে করে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেন তিনি। ৪৯ বছরের চেয়ারম্যানের সাথে নবম শ্রেণী পড়ুয়া কিশোরীর বাল্য বিয়ের খবরটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ হলে দেশ জুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠে।
এ সমালোচনা ঢাকতে গিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আবু তালেব জালিয়াতির মাধ্যমে তার সদ্য বিবাহিত স্ত্রীর বয়স পিএসসি সনদে বয়স বাড়িয়ে তার পক্ষের লোকজন দিয়ে বিয়েটি বাল্য বিয়ে নয় বলে প্রচারণা চালান। অনুসন্ধানে ওই কিশোরীর প্রাথমিক সমাপনি পরিক্ষা (পিএসসি) ও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) সনদ হাতে পাওয়ার পর জালিয়াতির বিষয়টি উঠে আসে। পিএসসি ও জেএসসি সনদে ওই কিশোরীর জন্ম তারিখ ২৩-০৯-২০০৩ উল্লেখ রয়েছে। সে হিসেবে তার বর্তমান বয়স ১৭ বছর ১ মাস ১২ দিন। চেয়ারম্যানের এমন অভিনব প্রতারণার বিষয়টি ফাঁস হলে নতুন করে সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।
আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে একজন ইউপি চেয়ারম্যান বাল্য বিয়ে করলেও প্রশাসনের নির্বিকার ভূমিকা নিয়ে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
উল্লেখ্য, হতদরিদ্র ওই শিক্ষার্থীর পরিবারটিকে নানাভাবে আর্থিক সহায়তার প্রলোভন দেখাতে থাকেন ইউপি চেয়ারম্যান আবু তালেব। এরই এক পর্যায়ে গত রোববার রাতে মেয়েটির পরিবারের লোকজন ৬ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে চেয়ারম্যানের সাথে বিয়ে দেন। তবে ব্যক্তিগত জীবনে ওই ইউপি চেয়ারম্যানের এক স্ত্রী ও কলেজ পড়ুয়া এক কন্যা সন্তান রয়েছে। ৪৫ বছরের ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে ৯ম শ্রেণী পড়ুয়া কিশোরীর বাল্য বিয়ের খবরটি বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশ হলে দেশ জুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠে।
এ বিষয়ে বুড়াবুড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আবু তালেব সরকার মুঠোফোনে জানান, বিয়ের মজলিসে মেয়ের পরিবার পিএসসি‘র ওই সনদটি দেখিয়েছেন। তাৎক্ষনিক এর সত্যতা যাচাই করার সুযোগ না থাকায় বিয়ের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। তবে এ সনদ তারা কোথায় পেয়েছে তা আমি জানি না।
ভূয়া সনদের লিপিকার জোবাইদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৎকালীন সহকারি শিক্ষক মেহেরুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক ভালো বলতে পারবেন। আমি কিছু জানি না। তৎকালীন প্রধান শিক্ষক প্রবীর কুমার রায়ের সাথে ভ‚য়া সনদের ব্যাপারে কথা হলে তিনি বলেন, ডিআর অনুযায়ী ওই শিক্ষার্থীর পিএসসি সনদ প্রদান করা হয়। তবে কিভাবে এমনটা হলো বুঝতে পারছি না। তদন্ত করলে সত্য বেরিয়ে আসবে। কুড়িগ্রাম জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন বলেন, এটা ফৌজদারী অপরাধ। যেহেতু ঘটনার সময় ভ্রাম্যমাণ করার সুযোগ ছিল না। তবে তার বিরুদ্ধে নিয়মিত আইনে মামলা দায়েরের সুযোগ রয়েছে। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন