সবুজের বুকে দুলছে ধানের শীষ
নরসিংদীতে চলতি বছর আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলা সমূহের মাঠে মাঠে শুধু ধান আর ধান। দিগন্ত বিস্তৃত সবুজের বুক চিরে গজিয়ে ওঠেছে ধানের শীষ। মৃদু হাওয়ায় ধানের শীষ হেলে দুলে কৃষকের মন দোলা দিচ্ছে। আর কদিন পরেই অগ্রহায়ণ মাস। আবহমান বাংলা চিরায়ত নবান্নের উৎসব।
চাষিরা বুক ভরা আশা নিয়ে অপেক্ষায় রয়েছেন ধান কাটার। বাঙালির সবচেয়ে বড় ফসল আমন ধান। শীতের প্রারম্ভে বাঙালি কৃষাণ-কৃষাণিরা মনের আনন্দে অগ্রাণী ধান ঘরে তুলে নেয়। ধান কাটা, মাড়াই করা, শুকানো, গোলায় তোলা, এরপর ধান থেকে চাল করে শীতের পিঠা পুলি তৈরি করা বাঙালি এক মহাঅনুষ্ঠানে পরিণত হয়। এবার ধানের ফলন দেখে কৃষকের বুক ভরে গেছে। মনের আনন্দে নবান্নের উৎসব করবে বাঙালি কৃষাণ-কৃষাণিরা। বাড়ি বাড়ি শুরু হয়েছে ধান কাটার প্রস্তুতি। চলতি বছর নরসিংদী জেলার ৬টি উপজেলায় ৪১৪১০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০৪৭৪৮ মেট্রিক টন। নরসিংদী সদর উপজেলার ৩০৭০ একর জমিতে ৮৫২৭ মেট্রিক টন, পলাশ উপজেলায় ৩৫৯০ হেক্টর জমিতে ৯৫৪৭ মেট্রিক টন, শিবপুর ৯৭০৪ হেক্টর জমিতে ২৪৬৩০ মেট্রিক টন। মনোহরদী ১০৫০০ হেক্টর জমিতে ২৬৫৯৭ মেট্রিক টন, বেলাবো ৪৪৬৫ হেক্টর জমিতে ১৫৩২৮ মেট্রিক টন এবং রায়পুরায় ৮৫৩০ হেক্টর জমিতে ২০২২৯ মেট্রিক টন। সবচেয়ে বেশি ধান হয়েছে মনোহরদী, শিবপুর, ও রায়পুরা উপজেলায়। চাষিদের আশা লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে এবারের আমন উৎপাদন। মনোহরদী উপজেলায় সবচাইতে বেশি ধান উৎপাদিত হয়। এই উপজেলাসহ শিবপুর ও রায়পুরায় যে চাল উৎপাদিত হয় নরসিংদীসহ রাজধানী ঢাকা ও আশে পাশের জেলাগুলোর চাহিদা পূরণ করে। আমন চাষিরা জানিয়েছে, এবছর আমন মৌসুমে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়েছে। ফলে আমন ক্ষেতে সম্পূরক সেচ দেয়ার দরকার হয়নি। এতে চাষিদের পরিশ্রম এবং খরচ দুটোই কমে গেছে।
স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ধানের ফলন কমে যায় বেশি বয়সে চারা রোপণের কারণে। ২০ দিন থেকে এক মাস বয়সী চারা রোপণ করতে পারলে উৎপাদন অর্ধেক বেড়ে যায়। অনেক চাষি এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয় না। যার কারণে ধানের উৎপাদন অর্ধেক কমে যায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন