কাঁচামাল সঙ্কটে চালুর ১০ দিন না যেতেই আবারও বন্ধ হলো রেলওয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন ছাতকে দেশের একমাত্র কংক্রিট স্লিপার প্লান্ট। ছাতক বাজার রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় ১৯৮৮ সালের ২৭ অক্টোবর মপমফ প্লান্ট স্থাপিত হয়। এরপর থেকে উৎপাদিত হয়ে আসছে স্লিপার।
স্লিপার তৈরির প্রধান কাঁচামাল হাইটেনশন স্টিল রড, ইনসাট স্টিল পাত আমদানি করা হয় ভারত থেকে। রাষ্ট্রায়াত্ব প্রতিষ্ঠান ছাতক সিমেন্ট কারখানার স্পেশাল ডায়মন্ড ব্রান্ড সিমেন্ট, ভোলাগঞ্জের পাথর ও বালু দিয়ে তৈরি করা হয় উচ্চ মানসম্পন্ন কংক্রিট স্লিপার। দৈনিক ২৬৪টি স্লিপার উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন এ কারখানাটি শুরু থেকেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানদের মাধ্যমে চলছে। সরকারি এ প্রতিষ্ঠানটি উন্নত মানের স্লিপার উৎপাদন করে থাকলেও নানা কারণে বারবার হোঁচট খাচ্ছে। জনবল সঙ্কটের পাশাপাশি কারখানায় রয়েছে যান্ত্রিক ত্রুটি।
জানা যায়, যান্ত্রিক ত্রুটিসহ নানা কারণে সরকারি এ প্রতিষ্ঠানটি টানা প্রায় দেড় বছর বন্ধ ছিল। যান্ত্রিক ক্রটিমুক্ত করে গত ৫ অক্টোবর থেকে কারখানায় স্লিপার উৎপাদন শুরু হয়। কিন্তু ১০ দিন না যেতেই কাঁচামাল সঙ্কটে কারখানাটি আবারও বন্ধ হয়ে যায়। ফলে উন্নত মানের স্লিপার উৎপাদনকারী সরকারি প্রতিষ্ঠানটি আবারও ক্ষতির মুখ দেখছে। সম্প্রতি চীনের একটি প্রতিষ্ঠান ছাতক কংক্রিট স্লিপার কারখানাটি বেসরকারি খাতে পরিচালনার জন্য আগ্রহ দেখিয়ে মিলটি পরিদর্শন করে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে চীনের কোম্পানির চুক্তি বাস্তবায়ন হয়নি।
বর্তমানে ৬ জন ইলেক্ট্রেশিয়ান, রেলওয়ের ২১ জন শ্রমিক ও ঠিকাদারের অধীনে ৫৬ জন শ্রমিক কাজ করছে। পুরো দেশে স্লিপারের মোট চাহিদার তুলনায় স্বল্প পরিমাণের স্লিপার উৎপাদন হলেও এগুলো রেললাইনের জন্য খুব টেকসই বলে জানিয়েছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কংক্রিট স্লিপার কারখানার একাধিক শ্রমিক জানান, রেলওয়ের একমাত্র স্লিপার কারখানাটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় উন্নতি হচ্ছে না। কারখানাটি প্রয়োজনীয় জনবল সঙ্কট নিরসন করে আধুনিকায়ন করা হলে রেললাইনে স্লিপার উৎপাদন অনেকটাই বৃদ্ধি পাবে বলে তাদের ধারণা। এ ব্যাপারে ছাতক বাজার রেলওয়ের সহকারি নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী হাবিব উল্লাহ জানান, কারখানাটি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আবারও চালু করে সার্বিক সক্ষমতা যাচাই করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিস্তারিত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন