শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

চার্জ সিঙ্গেল ডিজিট ও গ্রাহক নিরাপত্তা জোরদারের দাবি

মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সার্ভিস চার্জ সিঙ্গেল ডিজিট এবং গ্রাহকদের অর্থের নিরাপত্তা জোরদারসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন। এ খাতের বাজারে প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে মোবাইল ফোন অপারেটরদের ন্যায় মোবাইল ব্যাংকিংয়ে এসএমপি বাস্তবায়ন, সকল সেবার ওপর ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে নামিয়ে ৫ শতাংশে নির্ধারণ এবং আন্তঃলেনদেন চার্জ মুক্ত রাখার দাবি জানানো হয়েছে। গতকাল শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে “মোবাইল ব্যাংকিং এর যৌক্তিক সার্ভিস চার্জ নির্ধারণ, চার্জমুক্ত আন্তঃ লেনদেন ও গ্রাহক নিরাপত্তায় করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভায়” বক্তারা এ দাবি জানান।

টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিটিআরসি’র ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রয় মিত্র বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের কস্ট মডেলিং করে যৌক্তিক সার্ভিস চার্জ নির্ধারণ করা উচিত। টেলিফোনে যুক্ত হয়ে সৈয়দ আবুল মকসুদ প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষকে স্বস্তি দিতে সরকারকে সার্ভিস চার্জ কমানোর বিষয়টি বিবেচনা করতে অনুরোধ জানান।
বিটিআরসি’র সার্ভিস বিভাগের পরিচালক লেফ. কর্নেল মো. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, এমএফএস প্রতিষ্ঠান রিটেইলার ও ডিস্ট্রিবিউটরের গৃহীত চার্জের সঠিক কস্ট মডেলিং জরুরী প্রয়োজন। ১.৮৫ শতাংশ সার্ভিস চার্জের বাকী ০.০১৫ টাকার কখনো কোন হিসাব পাওয়া যায় না। এ হিসাবে অনৈতিক ভাবে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা গ্রাহকদের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে। যার কোন সঠিক হিসাব কারো কাছে নাই। যতক্ষণ পর্যন্ত এই অংক কোন বাস্তব লেনদেন সম্পন্ন ফিগারে পরিবর্তন করা না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকবে।
অনলাইনে যুক্ত হয়ে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও বাস্তবতা বিবেচনায় বর্তমান সার্ভিস চার্জ মোটেও যুক্তিসঙ্গত নয়। সার্ভিস চার্জ নির্ধারণে সকল স্টেক হোল্ডারদের মতামতের ভিত্তিতে ন্যায় সঙ্গত চার্জ নির্ধারণ করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেবে বলে আমি আশা করি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ’র সহযোগী অধ্যাপক খালেদ মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ সরকারের এই মুহুর্তেই অতিরিক্ত মাশুল বা ইন্টার অপারেবেলিটি চার্জ দেওয়া ঠিক হবে না। তবে হ্যাঁ পর্যায়ক্রমে ধীরে ধীরে এই চার্জ প্রয়োগ করা যেতে পারে। মার্কেট কম্পিটিশনকে বাঁচিয়ে রাখতে এসএমপি বাস্তবায়ন করার কোন বিকল্প নেই। ডিজিটাল সিকিউরিটি নিশ্চিত করার জন্য অবশ্যই ডিজিটাল অডিট চালু করা উচিত। বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি ডিভিশন বা বিটিআরসি’র এই ডিজিটাল অডিট বাধ্যতামূলককরণের ক্ষেত্রে কঠোর নীতিমালা প্রয়োগ করা উচিত।
সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বাণিজ্যিক ব্যাংকে লেনদেনের হয়রানি, দীর্ঘ সময় ব্যয়, যাতায়াতের ঝামেলা মুক্ত করলে এ সেবা খাতের অযৌক্তিক সার্ভিস চার্জ ও নিরাপত্তা ঝুঁকি গ্রাহকদেরকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। ২০১৪ সাল থেকে আমরা সার্ভিস চার্জ কমিয়ে যৌক্তিক পর্যায়ে আনতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছি। কিন্তু একটি প্রতিষ্ঠানে ৭০ শতাংশ বাজার দখলে থাকায় সার্ভিস চার্জ কমিয়ে আনা সম্ভবপর হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইডলাইনে সার্ভিস চার্জের ফ্লোর রেট ও সিলিং রেট নির্ধারিত না থাকায় এতদিন পর্যন্ত একটি প্রতিষ্ঠান মনোপলি ব্যবসা করে আসছে।
তিনি বলেন, কোনো গ্রাহক যখন একবার টাকা ক্যাশ ইন করে তখন প্রতি হাজারে এজেন্ট বা রিটেলার কমিশন পায় ৪ টাকা ১০ পয়সা, ডিলার কমিশন পায় ১ টাকা ৪০ পয়সা। আবার যখন ক্যাশ-আউট করে তখনো এই একই খরচ হয়। তারওপর ম্যাসেজ চার্জ বাবদ মোবাইল অপারেটর পায় দশমিক শূণ্য৬৪ টাকা, সেই সাথে ভ্যাট ১৫ শতাংশ বাকিটা এমএফএস প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ। কিন্তু এর বিপরীতে হাজারে ১৮ টাকা ৫০ পয়সা করে ক্যাশ-আউট চার্জ নিয়ে অন্য অপারেটরগুলো দেদার মুনাফা করছে। মহিউদ্দন আহমেদ বলেন, প্রথাগত ব্যাংকিং যেখানে বিনা মাসুলে দুই গ্রাহকের মধ্যে লেনদেন করার সুযোগ দিতে পারে, সেখানে মোবাইল ব্যাংকিং এত উচ্চ হারে মাসুল নেবে কেন?
সভায় গ্রাহক এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়- মোবাইল ফোন অপারেটরদের ন্যায় মোবাইল ব্যাংকি-এ এসএমপি বাস্তবায়ন করা, ভ্যাট ৫ শতাংশ, ক্যাশ আউট চার্জ সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনা এবং সেন্ড মানি চার্জ বাতিল করা, আন্তঃলেনদেন চার্জ মুক্ত রাখা এবং লেনদেনের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- সিপিবি’র সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, দৈনিক সমকালের বিশেষ প্রতিনিধি রাশেদ মেহেদী।#

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন