করোনা সঙ্কট কাটিয়ে নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের জন্য দুটি অত্যাধুনিক হাইড্রোগ্রাফি সার্ভে ভেসেল ও ৩টি ইনশোর প্যাট্রোল ভেসেল নির্মাণ শেষে হস্তান্তর করেছে খুলনা শিপইয়ার্ড। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত সপ্তাহে নৌবাহিনীর জরিপ জাহাজ দুটি এবং গতকাল কোস্ট গার্ডের ৩টি ইনশোর প্যাট্রোল ভেসেল আনুষ্ঠানিকভাবে কমিশনিং করেছেন। এসব নৌযান দেশের বিশাল সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকার সুষ্ঠু জরিপ পরিচালনার মাধ্যমে নির্বিঘ্ন নৌ চলাচল ও সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
দেশের সমুদ্র বন্দর ও পোতাশ্রয়সহ সংলগ্ন এলাকায় জরিপের লক্ষ্যে নৌবাহিনীর জন্য প্রথমবারের মত ক্যাটামেরন টাইপের দুটি অত্যাধুনিক হাইড্রোগ্রাফি সার্ভে ভেসেল তৈরি করল খুলনা শিপইয়ার্ড। ‘বানৌজা দর্শক’ ও ‘বানৌজা তল্লাশী’ নামের এসব জরিপ জাহাজ নির্মাণ শেষে সম্প্রতি নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের পরে গত সপ্তাহেই প্রধানমন্ত্রী তা আনুষ্ঠানিকভাবে কমিশনিং করেছেন।
এর ফলে নিজস্ব জরিপ জাহাজের মাধ্যমে নৌপথ সম্পর্কে নিশ্চিত ধারণা নিয়েই সব ধরনের যুদ্ধ ও টহলযান পরিচালনা অত্যন্ত নিরাপদ ও সহজতর হবে নৌবাহিনীর। এ আশা সমর বিশেষজ্ঞদের। ৩২.৭২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৮.৪০ মিটার প্রস্থ এসব জরিপ জাহাজ ৩.১৭ মিটার গভীরতা এবং ১.৬৫ মিটার ড্রাফট সম্পন্ন। পূর্ণ গতিতে চলাচলের সময় ১২৫ টন পানি অপসারণ করে এসব নৌযান ঘণ্টায় ১৪ নটিক্যাল মাইল বা প্রায় ৩০ কিলোমিটার বেগে চলতে সক্ষম। প্রতিটি নৌযানে ৬শ’ অশ্ব শক্তির দুটি প্রধান ইঞ্জিন ছাড়াও ৮০ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি প্রধান জেনারেটর এবং ১৬ কিলোওয়াটের ইমার্জেন্সি জেনারেটরসহ অত্যাধুনিক মেশিনারিজ রয়েছে।
এছাড়া খুলনা শিপইয়ার্ডে চীনের সিএসওসি’র কারিগরি সহায়তায় কোস্ট গার্ডের জন্য ৩টি ইনশোর প্যাট্রোল ভেসেল-আইপিভি নির্মাণ শেষে হস্তান্তরের পরে প্রধানমন্ত্রী গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে কমিশনিং করেছেন। এসব নৌযানের মাধ্যমে উপক‚লীয় এলাকায় নিয়মিত টহল প্রদান, চোরাচালান বিরোধী অভিযান, দুর্ঘটনা পরবর্তী উদ্ধার ও অনুসন্ধান কার্যক্রম, মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ পরবর্তী উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা পরিচালনা ছাড়াও পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধে কোস্টগার্ড গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করবে।
‘বিসিজিএস সোনার বাংলা’, ‘বিসিজিএস অপরাজেয় বাংলা’ এবং ‘বিসিজিএস স্বাধীন বাংলা’ নামের এসব আইপিভি ৫১.২০ মিটার দৈর্ঘ্য, ৭.৫০ মিটার প্রস্থ, ৪.১০ মিটার গভীরতা ও ১.৯৪ মিটার ড্রাফট সম্পন্ন। ৩০০ টন পানি অপসারণ করে ঘণ্টায় ২৩ নট বা প্রায় ৫০ কিলোমিটার গতিসম্পন্ন এসব ইনশোর প্যাট্রোল ভেসেল আন্তর্জাতিক ক্লাসিফিকেশন সোসাইটি চায়না ক্লাসিফিকেশন সোসাইটির তত্ত্বাবধানে নির্মিত হয়েছে। এসব আধা সামরিক নৌযানে ২,১০০ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ২টি প্রধান ইঞ্জিন, ১০০ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি প্রধান জেনারেটর ও অত্যাধুনিক মেশিনারিজ রয়েছে। এছাড়াও সার্বিক অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনায় ২টি করে ৩০মিমি সেমি অটোমেটিক গান, ২টি ১৪.৫ মিমি গান, নেভিগেশন রাডার, এইচএফ, ভিএইচএফ, ন্যাভটেক্স রিসিভারসহ অত্যাধুনিক সব যন্ত্রপাতি সংযোজন করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন