শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

হলের দাবিতে উত্তাল জবি রোববারও ধর্মঘট অব্যাহত

প্রকাশের সময় : ১৯ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

জবি প্রতিনিধি : পুরাতন হল উদ্ধার ও কেন্দ্রীয় কারাগারের জায়গায় জাতীয় চার নেতার নামে নতুন আবাসিক হল নির্মাণের দাবিতে আগামী রোববার ধর্মঘট এবং সোমবার প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ কর্মসূচি ঘোষণা করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সকাল ৮টা থেকে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে শিক্ষার্থীরা মূল ফটকসহ তিনটি ফটকে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনসহ প্রতিটি অনুষদ ও বিভাগে তালা লাগিয়ে দেন। এসময় শিক্ষকরা ক্যাম্পাসে ভিতরে ঢুকতে পারলেও কোন শিক্ষার্থী প্রবেশ করতে পারেনি। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিও ক্যাম্পাসে আসতে পারেননি। গতকাল বিভিন্ন বিভাগের ফাইনাল পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও শিক্ষার্থীরা একযোগে পরীক্ষা ও ক্লাস বর্জন করে আন্দোলনে যোগ দেন।যার ফলে কোন বিভাগেই ক্লাস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। আবাসিক হলের দাবিতে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের আশপাশে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল করেন। এসময় তারা বিভিন্ন ধরনের প্লে-কাড, ফেস্টুন ও ব্যানার ইত্যাদি প্রতিবাদী ভাষা হিসাবে ব্যবহার করেন। মিছিল নিয়ে তারা রায়সাহেববাজার এর দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ শাখারীবাজার মোড়ে তাদের বাধা প্রদান করে।ফলে তারা সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে।এতে সদরঘাট থেকে রায়সাহেব বাজারের মোড় পর্যন্ত পুরো রাস্তা অচল হয়ে পড়ে। এর প্রভাবে রাজধানীর অন্য সড়কেও দেখা দেয় তীব্র যানজট।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, তারা টানা ১৮ দিন ধরে আন্দালন করে আসছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সরকারের কাছ থেকে তাদের দাবির ব্যাপারে কোন প্রকার আশ্বাস তারা এখনো পাননি। বরং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের যৌক্তিক দাবি মেনে না নিয়ে তাদের এ আন্দোলন কে বাধা প্রদান করছে। তারা বলেন, আজকের কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে প্রমাণ করে দিয়েছে যে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসাবে হল আমাদের অধিকার কিন্তু আমরা হল থেকে বঞ্চিত। বর্তমান সময়ে জঙ্গি হামলার কারণে ছাত্রদের মেসে থাকতে সমস্যা হচ্ছে। এছাড়া পুলিশ ব্যাচালারদের বাসায় তল্লাশি চালাচ্ছে। যার ফলে মালিকরা বাসা ভাড়া দিতে চাচ্ছে না। তারা অভিযোগ করে বলেন, বিগত আন্দোলনগুলো প্রশাসনের মিথ্যা আশ্বাসে বন্ধ হয়ে যায় কিন্তু এবার প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ছাড়া আমরা আমাদের আন্দোলন থেকে এক চুল পরিমাণ সরে আসবনা।
এদিকে উত্তপ্ত পরিস্থিতি ও কর্মসূচি ঘিরে যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিশ্ববিদ্যালয় এবং তার আশপাশ এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এসময় কোতায়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: হাসান বলেন, শিক্ষার্থীদের হল আন্দোলনে আমাদের কোন বাধা নেই। তবে তারা যেন নিয়ম ও শৃঙ্খলা মেনে আন্দোলন চালিয়ে যায়। এছাড়া যাতে কোন ধরনের অপ্রতিকর ঝামেলা না হয় তাই আমরা শিক্ষার্থীদের সাথে অবস্থান করছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যায়ের প্রক্টর ড. নূর মোহাম্মদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন যৌক্তিক তবে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে নয়। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে তার দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নেবেনা। উল্লেখ্য সা¤প্রতিক সময়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানীগঞ্জে স্থানান্তরিত হলে সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারের জায়গায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে জাদুঘর, গবেষণাকেন্দ্র এবং জাতীয় চার নেতার নামে চারটি হল ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে একটি সিনেট ভবন নির্মাণের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে জবির শিক্ষার্থীরা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন