গত ১০ নভেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড প্রদানে ঘুষ গ্রহণের প্রতিবাদ করায় রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের ৯ ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আব্দুল জলিলের হামলায় গুরুতর আহত সুজন ১১দিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে অবশেষে ২১ নভেম্বর রাতে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে।
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল জলিল প্রায় দুই বছর আগে কেরেঙ্গাপাড়া গ্রামের শারিরিক প্রতিবন্ধি আব্দুল হালিমের (২৩) কাছ থেকে ৪ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ করে হালিমের নামে প্রতিবন্ধি ভাতার কার্ড করে দেন। এরপর কয়েক দফায় হালিম ভাতা উত্তোলন করে। সম্প্রতি স্মার্ট কার্ড ও জাতীয় পরিচয়পত্র কোনটিই না থাকায় অনলাইনে নিবন্ধন সংক্রান্ত জটিলতায় পড়ে হালিম। এমতাবস্থায় বিষয়টি বুঝে উঠতে না পেরে ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি প্রকাশ করে দেয়।
১০ নভেম্বর সন্ধ্যায় ইউপি সদস্য আব্দুল জলিল ও স্থানীয় যুবক সুজন মিয়া ও ফারুকদের মাঝে ঘুষ লেনদেনের ঘটনায় কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ইউপি সদস্য আব্দুল জলিল তার লোকজন নিয়ে অতর্কিতে সুজনের মুদি দোকানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর, লুটপাট ও মাইরপিট করে।
এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে ইউপি সদস্য আব্দুল জলিল, দোকান মালিক সুজনসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১০জন আহত হয়। আহতদের নালিতাবাড়ী হাসপাতালে নেয়ার পর সেখান থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সুজনসহ দুইজনকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। অবস্থা আরো অবনতি হলে সুজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে করোনার কারণে চিকিৎসা দিয়ে ছুটি দিয়ে দেয় সুজনকে। বাড়ীতে এসে আবারো তার অবস্থার অবনতি হলে ২০ নভেম্বর আবার তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ নভেম্বর রাত অনুমান ৯টার সময় মারা যায়।
প্রথম হামলার ঘটনার পর ১১ নভেম্বর নিহত সুজনের ভাই সুমন বাদী হয়ে ইউপি মেম্বার আব্দুল জলিলসহ ৫জনকে আসামী করে একটি হত্যা চেষ্টার মামলা করা হয়।
এ বিষয়ে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বছির আহমদ বাদল সুজনের মৃত্যুর ঘটনাটি নিশ্চিত করে জানান, এবিষয়ে আগের করা হত্যা চেষ্টার মামলাটি এখন হত্যা মামলায় রুপান্তরিত হবে। তিনি আরো বলেন, আমরা হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন