শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সংবাদকর্মীদের কর কর্তন কেন অবৈধ ঘোষণা নয়

মন্ত্রিপরিষদের সুপারিশের বৈধতা নিয়ে হাইকোর্ট

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

নবম ওয়েজ বোর্ডের আওতায় মালিকের পরিবর্তে সংবাদকর্মী ও প্রেস শ্রমিকদের আয়কর ও আনুতোষিক (গ্র্যাচুইটি) কর (ট্যাক্স) কর্তন কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- এই মর্মে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এক রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিক শুনানি শেষে এ রুল জারি করা হয়। রুল জারির পাশাপাশি নবম সংবাদপত্র মজুরি বোর্ডের দ্বাদশ অধ্যায়ে মন্ত্রিপরিষদের সুপারিশের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন আদালত। গতকাল বুধবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের ডিভিশন ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।

রুলে আদালত মন্ত্রিপরিষদের সুপারিশে নবম সংবাদপত্র মজুরি বোর্ডে দ্বাদশ অধ্যায়ে সংযুক্ত সাংবাদিক ও প্রেস শ্রমিকদের আয়কর ও আনুতোষিক (গ্র্যাচুইটি) সংক্রান্ত বিধান কেন অবৈধ ও আইনগত কতৃত্ববহিভর্‚ত ঘোষণা করা হবে না- রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিবকে পরবর্তী চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ড. কাজী আকতার হামিদ ও রূহুল কুদ্দুস কাজল। সরকারপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।

নবম সংবাদপত্র মজুরি বোর্ডের দ্বাদশ অধ্যায়ে উল্লেখ রয়েছে- সকল শ্রেণির সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থায় কর্মরত সাংবাদিক, প্রেস শ্রমিক এবং প্রশাসনিক কর্মচারীদের বেতনের উপর আরোপিত আয়কর সাংবাদিক, প্রেস শ্রমিক ও প্রশাসনিক কর্মচারীদের তাদের নিজ নিজ আয় হতে প্রদান করতে হবে- মর্মে উল্লেখ রয়েছে নবম ওয়েজ বোর্ডে। সকল শ্রেণির সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থায় কর্মরত সাংবাদিক, প্রেস শ্রমিক এবং প্রশাসনিক কর্মচারীদের প্রত্যেক বছরে অথবা তার অংশ বিশেষ ৬ মাস বা এর অধিক সময় চাকরির জন্য সর্বশেষ প্রাপ্ত বেতনের ভিত্তিতে নির্ধারিত এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ আনুতোষিক (গ্রাচ্যুইটি) হিসাবে প্রাপ্য হবেন। গত ২২ নভেম্বর বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)’র কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. মাহবুবুজ্জামান এই দুটি বিধান চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন। আবেদনে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একটি রায় অনুযায়ী নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষকেই সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের কর্মচারীদের বেতনের ওপর আয়কর পরিশোধ করতে হবে। সর্বোচ্চ আদালতের এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ আয়কর পরিশোধ করতে দায়বদ্ধ এবং বাধ্য। কিন্তু নবম সংবাদপত্র মজুরি বোর্ডে আয়কর চাপানো হয়েছে সাংবাদিক ও কর্মচারীদের ওপর। রিটে আরও বলা হয়, নবম মজুরি বোর্ডে সপ্তম অধ্যায়ে ২টি আনুতোষিক (গ্র্যাচুইটি) দেয়ার কথা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকলেও মন্ত্রিপরিষদ একটি মূল বেতনের সমান আনুতোষিক (গ্র্যাচুইটি) দেয়ার সুপারিশ করেছে। এ সুপারিশটিও নবম মজুরি বোর্ডের গেজেটের দ্বাদশ অধ্যায়ে গ্রহণ করা হয়েছে যা স্ববিরোধী এবং সাংঘর্ষিক। ২০১৫ সালে সরকারি কর্মচারীদের নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণার পর থেকেই নতুন বেতন কাঠামোর দাবি জানিয়ে আসছিল সাংবাদিকদের সংগঠনগুলো। এ দাবিতে তারা বিভিন্ন কর্মসূচিও পালন করেন। দীর্ঘদিন বিষয়টি ঝুলে থাকার পর আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. নিজামুল হক নাসিমকে প্রধান করে ২০১৮ সালের ২৯ জানুয়ারি ১৩ সদস্যের নবম ওয়েজবোর্ড গঠন করা হয়। পরে বিচারপতি নিজামুল হক ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর তৎকালিন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর কাছে সংবাদকর্মীদের বেতন-ভাতা সর্বোচ্চ ৮৫ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ করে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এর ভিত্তিতে নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণ করে ২০১৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর সরকার ওয়েজ বোর্ডের গেজেট করে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন