শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

কক্সবাজার শহরে চোরাই মোবাইলের ডিপো বিলকিস মার্কেট ও কোরাল লীফ প্লাজা

কক্সবাজার ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৬ নভেম্বর, ২০২০, ১২:৩৪ পিএম

কক্সবাজারে মোবাইল ফোনের বাজারের একটি বড় অংশই শুল্কফাঁকিতে আনা মোবাইলের দখলে। বৈধভাবে আমদানিতে উচ্চ শুল্কের কারণে অসাধু মোবাইল ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফার লোভে এ পথ বেছে নিয়েছেন। এতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারানোর পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে নিরাপত্তা ঝুঁকি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কক্সবাজারে বাজারে অবৈধ আইফোনের তুলনায় অন্যান্য ব্র্যান্ডের অবৈধ স্মার্টফোন বেশি। কিন্তু এসব অবৈধ ফোনের দিকে নজর নেই গোয়েন্দাদের। ফলে বাজারে অবৈধ স্মার্টফোনের ছড়াছড়ি। এছাড়া এসব অবৈধ ফোন এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে অনলাইনের বিভিন্ন সাইটেও বিক্রি করছেন। এতে করে বৈধপথে যেসব ব্যবসায়ীরা ফোন আমদানি করছেন তারা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন বলে জানান অনেক ব্যবসায়ী।

সূত্র মতে বেশি স্যামসাংয়ের স্মার্টফোন আমদানি করা হয়। আর স্যামসাংয়ের ৮০ শতাংশ ফোন আসে অবৈধভাবে। এই তালিকায় নাম রয়েছে এইচটিসি, ভিভো, শাওমি ও ওপোও। অনুসন্ধানে জানা যায়, শহরের সবচেয়ে বড় রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে মোবাইল বিক্রি হয় বিলকিস মার্কেট, এবি মার্কেট, কোরাল রীফ প্লাজা, জিলানী মার্কেট, আছাদ কমপ্লেক্সসহ ৮ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে। অনেকেই শো-রুম খুলে বিক্রি করছে এসব মোবাইল।
শহরের সবচেয়ে বড় মোবাইল বিক্রির বাজার বিলকিস মার্কেট ও কোরাল রীফ প্লাজা। এখানে প্রতি মাসে বিক্রি হয় প্রায় অর্ধশত কোটি টাকার মোবাইল ফোন। তারমধ্যে অধিকাংশ শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা লাগেজ ফোন। চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও ঢাকা অসাধু ব্যবসায়ীদের সাথে সিন্ডিকেট করে কক্সবাজারে এসব মোবাইল আনা হয়।

অভিযোগ রয়েছে, অবৈধ এসব মোবাইল বিক্রির সিন্ডিকেটের মধ্যে বিলকিস মার্কেটের আলিফ টেলিকম মালিক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, মোবাইল ভিলেইজ এর মোঃ আলমগীর হোসাইন, জুলি মোবাইল জোন এর মোহাম্মদ সোহেল, নিহাল কম্পিউটারের কর্ণধার নিহাল, এশা টেলিকমের মালিক মো. নাসির উদ্দিন অন্যতম। তাদের লাগেজ মোবাইল বর্ডার ক্রস করে সরাসরি কক্সবাজার এনে দিয়ে থাকেন ইমরান ও ফয়সাল নামের দুই ব্যক্তি। শামসু নামের এক ব্যবসায়ী লাগেজ মোবাইল এনে সরাসরি কোরাল রীফের ব্যবসায়ী ইমরান ও ফয়সালের হাতে তুলে দেন। তারপর ইমরান ও ফয়সালই জেলাজুড়ে অন্য ব্যবসায়ীদের কাছে হাতবদল করেন।

জানাগেছে, ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে লাগেজ মোবাইলগুলো আসে। ওই শামসুর সাথে ভারতের চোরাকারবারীদের সাথে রয়েছে গভীর সখ্যতা। তার হাত ধরেই বেশ জমজমাট জেলার চোরাই মোবাইল মার্কেট। সম্প্রতি জেলা গোয়েন্দা পুলিশ বিপুল পরিমাণ চোরাই মোবাইলসহ পেকুয়া থেকে দুই সহোদরকে আটক করে। এই অভিযানের পর বেশ সাবধানে পা ফেলছে অন্যান্য অসাধু ব্যবসায়ীরা।
বিলিকিস মার্কেটের এক ব্যবসায়ী বলেন, আমরা যারা বৈধপথে স্মার্টফোন আনছি তাদের এখন পথে বসতে হবে। কারণ বাজারে ৫০ শতাংশ স্মার্টফোন শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আসছে। ফলে তারা আমাদের থেকে অনেক কম দামে স্মার্টফোন বিক্রি করছেন। তাই ক্রেতাদের উপস্থিতি তাদের কাছেই বেশি।
বিলকিস মার্কেটে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা স্মার্টফোনের নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বিক্রেতা বলেন, ভারত বাংলাদেশের সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট স্যামসাং, এইচটিসি, শাওমি ও ওপোর অবৈধ স্মার্টফোন আসে বেশি। এছাড়া চট্টগ্রামের রিয়াজ উদ্দিন বাজার ও লাগেজ পার্টির মাধ্যমেও অনেক ফোন আসছে। এই ফোন আনা চক্রের সঙ্গে অনেকেই জড়িত আছে।
জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অফিসার ইনচার্জ শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, অবৈধ মোবাইল ফোনের রয়েছে সক্রিয় সিন্ডিকেট। তাদের ব্যাপারে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। শিগগিরই অভিযান চালিয়ে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন