আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, সাতক্ষীরা থেকে : সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বিভাগ-২) আওতাধীন বেতনা নদীর ধেড়েখালি নামক স্থানে বেঁড়িবাঁধ ভেঙে তিন ইউনিয়নের ১০টি গ্রামের নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে ২ হাজার বিঘা মাছের ঘের। তলিয়ে গেছে এক হাজার বিঘার আমনধান ও ফসলি জমি। শুক্রবার (১৯ আগস্ট) সাতক্ষীরা সদর উপজেলার লাবসা ইউপির ধেড়েখালি এলাকায় যেয়ে এ দৃশ্য দেখা গেছে। সম্প্রতি অতিবর্ষন ও বেতনা নদীর প্রবল ¯্রােতে ওই স্থানের বাঁধ ভেঙে যায়।
সদর উপজেলার বল্লি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বজলুর রহমান জানান, গত ৯ আগস্ট ওই স্থানে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পর থেকে গত এক সপ্তাহ ধরে নদীর পানি লোকালয় ঢোকে। এতে লাবসা ইউপি’র রাজনগর, শিবনগর, নগরঘাটা ইউপির পুলেরহাট, গাবতলা, নিমতলা, বল্লি ইউপির মোচড়া, কাঁঠালতলা, রায়পুর, সমনডাঙ্গা, বাউল ডাঙ্গা ও বল্লিসহ ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে। এতে টুংকিয়া, দন্নে, আমতলা ও নিমতলা বিলের দু’হাজার বিঘা মাছের ঘের ভেসে যায়। তিনি আরো জানান, তার উদ্যোগে বেড়িবাঁধটি কোনো রকম মেরামত করা হলেও অনেক স্থান থেকে এখনো চুইয়ে পানি ঢুকছে।
সদর উপজেলার রাজনগর গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য এমদাদুল হক ও রাজনগর গ্রামের আবুল হাসান জানান, বেতনা নদীর বাঁধ কেটে গত কয়েক বছর ধরে চিংড়ি ঘেরে লোনা পানি তোলা হয়। স্থানীয় চিংড়ি চাষি রেজাউল ইসলামের নেতৃত্বে এ কাজ করা হতো। পানি তোলার পর আবার বাঁধ বেধে দেওয়া হতো। গত দু’বছর ধরে লাবসা ইউনিয়ন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শিবনগর গ্রামের আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে ওই একই স্থানের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ কেটে পানি তুলছেন। কিন্তু পানি তোলা শেষে বাঁধ মেরামত করা হয়নি। ২০১৫ সালে এ এলাকা প্লাবিত হলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পক্ষ থেকে বাঁধ মেরামত করে দেওয়া হয়। চলতি বছর আবারও একইভাবে বাঁধ কেটে পানি তোলা হয়। সেখানে বসানো হয় যেনতেন উপায়ে সিমেন্টের পাইপ।
বল্লির মোচড়া গ্রামের কৃষক হযরত আলী, শাহাজান আলী, শহিদুল ইসলাম ও আকবর আলীসহ অনেকে জানান, চলতি আমন মৌসুমে অনেক খরচ করে তারা প্রত্যেকে ধান রোপন করলেও বর্তমানে প্রায় এক হাজার বিঘার ধান ক্ষেত তলিয়ে গেছে।
লাবসা ইউনিয়ন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শিবনগর গ্রামের আলমগীর হোসেন জানান, মাছের ঘের মালিকদের সম্বিলিত সিদ্ধান্তে পাইপের মাধ্যমে পানি তুলেছেন। পাইপের মুখও বন্ধ করে দিয়েছিলেন কিন্তু পানির চাপ বেশি হওয়ায় বাঁধ ভেঙে গেছে।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগ-২-এর কর্মকর্তা আবুল হোসেন জানান, ২০১৫ সালে ওই স্থানের বাঁধ মেরামত করে দেওয়া হয়েছিল। তিনি আরো জানান, প্রতিবছর একই স্থানের জন্য বরাদ্দ আসে না। এলাকায় যারা বাঁধ নষ্ট করেছে তাদের এটি মেরামত করতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন