চট্টগ্রাম ব্যুরো : নগরী ও জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সক্রিয় সদস্য সন্দেহে তিন যুবককে গ্রেফতার করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবি। বৃহস্পতিবার রাতভর এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ফরহাদ আহম্মেদ ওরফে রিপন (২৭), মো. ইমরান (২৬) ও আহম্মদ হোসেন রনি ওরফে রুবেল (২১)।
ডিবি পুলিশের অতিরিক্তি উপ-কমিশনার (বন্দর) নাজমুল হাসান জানান, রাতভর অভিযান চালিয়ে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের ওই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ফরহাদকে নগরীর ডবলমুরিং থানার পাঠানটুলী থেকে, ইমরানকে কর্ণফুলী থানার শিকলবাহা এলাকা থেকে ও রনিকে পটিয়া থেকে গ্রেফতার করা হয়। এরা তিনজনই আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সক্রিয় সদস্য।
ডিবি কর্মকর্তা নাজমুল জানান, এদের মধ্যে ফরহাদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়ন বিভাগ থেকে মাস্টার্স শেষ করেছেন। ২০০৭-২০০৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ফরহাদ ২০১৪ সালে মাস্টার্স সম্পন্ন করে কর্ণফুলী ইপিজেডে একটি প্রতিষ্ঠানে ‘এনালাইটিক্যাল কেমিস্ট’ হিসেবে কর্মরত আছেন। আর এমরান চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে সম্প্রতি ‘পাওয়ার টেকনোলজি’ বিষয়ে ডিপ্লোমা শেষ করেছে এবং রুবেল শ্যামলী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সিভিল ইনঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পঞ্চম সেমিস্টারের ছাত্র বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু উগ্র মতবাদের ১৩টি বই ও দুইটি ল্যাপটপ ও তিনটি মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল সকালে নগর পুলিশ সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (বন্দর) মারুফ হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার নগরীর পাঠানটুলি এলাকা থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ফরহাদকে গ্রেফতার করা হয়। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী কর্ণফুলী থানার শিকলবাহা থেকে ইমরান ও পটিয়ার ধলঘাট থেকে রনিকে গ্রেফতার করা হয়। রনি ইসলামী ছাত্র শিবিরের রাজনীতির সাথে যুক্ত বলেও জানান মারুফ।
গোয়েন্দা কর্মকর্তা মারুফ বলেন, গ্রেফতারকৃতদের সাথে সীতাকু- থেকে মুসায়াব ইবনে উমায়েরের সাথে যোগায়োগ ছিল বলে আমরা জেনেছি। তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের তথ্যও উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, গ্রেফতার ইমরান ‘পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট’ এক্সপার্ট। সে এবিটির সামরিক শাখার সাথে যুক্ত বলে আমরা ধারণ করছি। তবে নিষিদ্ধ এ সংগঠনটির সামরিক শাখা এখন নিষ্ক্রিয় বলেও দাবি পুলিশ কর্মকর্তা মারুফের।
এছাড়া রনি ইসলামী ছাত্র শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল বলেও পুলিশকে জানিয়েছে বলে দাবি করেন এ গোয়েন্দা কর্মকর্তা। গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আনার অনুমতি চাওয়া হবে বলেও জানান মারুফ। পুলিশ কর্মকর্তা নাজমুল জানান, গত ৩১ জুলাই পতেঙ্গা এলাকা থেকে গ্রেফতার পাঁচ আনসার উল্লাহ সদস্যদের সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার রাতে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। পতেঙ্গা থানায় গত ১ আগস্ট পাঁচজনকে গ্রেফতারের ঘটনায় হওয়া সন্ত্রাস বিরোধী আইনে তাদের গ্রেফতার দেখানো হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন