শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ঘরের ভিতর সুড়ঙ্গ তৈরী রঙ্গমহল অসামাজিক কর্মকান্ড, শান্তিপুর গ্রামের অশান্তি সৃষ্টির প্রতিবাদে গ্রামবাসীর একাট্টা

দিনাজপুর অফিস | প্রকাশের সময় : ২৮ নভেম্বর, ২০২০, ৪:০৭ পিএম

গ্রামের নাম শান্তিপুর। দিনাজপুর পৌর এলাকার উত্তরপশ্চিমে পূর্ণভবা নদীর বাঁধ ঘেষা গ্রামটিতে ২৫ থেকে ৩০ হাজার মানুষের বসবাস। গ্রামের অধিকাংশ মানুষই শ্রমজীবি। খেটে খাওয়া পরিবারগুলির মধ্যে শান্তি সৌহার্দের বন্ধনকে কেন্দ্র করেই গ্রামটির নাম শান্তিপুর রাখা হয়। কিন্তু গত এক বছর ধরে একটি পরিবারের কারনে শান্তিপুর গ্রামের মানুষদের শান্তি উঠে গেছে। তাদের অভিযোগ দিনে দুপুরে অসামাজিক কার্যকলাপ এবং চুরি ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। দ্বিতল ভবনের মধ্যে সুরঙ্গ সিড়ি তৈরী করে ঘরের নীচে বানানো হয়েছে রঙ্গমহল। এই মহলে উঠবস চলে সকল অসামাজিক কর্মকান্ড। এলাকাবাসী বাধা দিলেই নেমে আসে খড়গ। স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া ছেলে-মেয়েদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে তারা। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়ে কাজ হয়নি। এক পর্যায়ে মানববন্ধন করে বেলীকে এলাকা থেকে উচ্ছেদের ডাক দেয়। জনতার রোষ থেকে রক্ষা পেতে উক্ত মহিলা বাড়ী ছেড়ে পালিয়ে গেছে। কিন্তু গ্রামবাসীদের ভয় আবার কবে ফিরে আসে এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে প্রতিবাদি গ্রামবাসীদের হয়রানী করবে।

দিনাজপুর পৌর এলাকার শেষ প্রান্তে অবস্থিত শান্তিপুর গ্রামটিতে নিন্ম আয়ের মানুষদের বসবাস। জমির দাম কম হওয়ায় খেটে খাওয়া মানুষেরা টিনসেড ও আধাপাকা বাড়ী করে জীবন যাপন করছে। গত দু-বছর আগে বেলী নামের এক মহিলা জায়গা ক্রয় করে দ্বিতল বাড়ী তৈরী করে। বাড়ীর ড্রয়িং রুমের মধ্যে সুড়ঙ্গ তৈরী করে নীচে বানানো হয়েছে রঙ্গ মহল। সুড়ঙ্গ পথকে আড়াল করতে ঘরের টাইলস এর মতই একটি টাইলস ব্যবহার করা হতো। গ্রামবাসীদের দাবী দীর্ঘদিন ধরে বেলীকে অসামাজিক কার্যক্রম বন্ধের অনুরোধ করা হয়। তার কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে কথা বললেই মামলায় জড়িয়ে হয়রানী করা হতো। গুন্ডা বাহিনী দিয়ে মারধোর করা হতো।

তার অপকর্মেরর বিরুদ্ধে পুলিশ প্রশাসনকে অনেকবার অভিযোগ করা হয়েছে বলে গ্রামবাসীদের দাবী। কিছুদিন আগে এলাকার লোকজন অসামাজিক কাজ চলা অবস্থায় মেয়েসহ পুরুষকে আটক করে থানায় সোপর্দ করে। বেলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। উল্টো বেলী গুন্ডাবাহিনী দিয়ে এলাকার এক যুবকসহ আরো কয়েকজনকে মারধোর করে মামলা করে দিয়েছে। সবশেষ শান্তিপুরসহ আশে পাশের গ্রামের হাজারো নারী-পুরুষ একত্রিত হয়ে মানববন্ধন করে। মানববন্ধন থেকে বেলীকে উচ্ছেদের ঘোষনা দিলে বেলী পালিয়ে যায়। এলাকাবাসীর দাবী বেলীর স্বামী একজন কুখ্যাত ডাকাত। বাড়ীর পিছনে তৈরী করা একটি ঘরে চুরি ডাকাতি করা গরু এনে রাখারও অভিযোগ করেছে গ্রামবাসী। এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার মোঃ আনোয়ার হোসেন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি তাৎক্ষনিকভাবে সেখানে পুলিশ পাঠান। পুলিশ তালাভেঙ্গে তার সুরঙ্গমহলসহ পূরো ঘর চেক করে অসামাজিক কর্মকান্ডে ব্যবহৃত ঔষধ ও বিছানা ছাড়া আর কিছুই পাননি।

কোতয়ালী থানার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, এধরনের কার্যক্রমকে কোনমতেই মেনে নেয়া হবে না। তার বিরুদ্ধে এলাকার এক ব্যক্তির দেয়া মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

ছোট্ট জেলাশহর দিনাজপুরে সুড়ঙ্গমহল তৈরী করে প্রকাশ্যে অসামাজিক কার্যক্রম চললেও পুলিশ প্রশাসন তা জানে না এটা সচেতন মহল মেনে নিতে পারছেন না। শান্তিপুর গ্রামের শান্তি ফিরিয়ে আনতে অসামাজিক কর্মকান্ড পরিচালনাকারী এবং এই মহলে যাতায়াতকারীদের খুজে বের করে শাস্তির আওতায় আনলেই এধরনের অপরাধা বন্ধ হতে পারে।

 

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন