শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ভোজ্য তেলের মূল্যবৃদ্ধি

প্রণোদনা পেলে বাড়বে সরিষার আবাদ

সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : | প্রকাশের সময় : ২৯ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

নরসিংদীতে ভোজ্যতেলের দাম অব্যাহত গতিতে বেড়ে চলেছে। গত সপ্তাহকালে সয়াবিন তেলের মূল্য বেড়েছে কেজিপ্রতি কমবেশি ১২ টাকা। সরিষার তেলের মূল্য বেড়েছে কেজিপ্রতি ২৫ টাকা। চাল আলু অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির মাঝে ভোজ্য তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। চাল শাক সবজি আলু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির বাজারে ভোজ্যতেলের মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জন্য বোঝার উপর শাকের আটি হয়ে দাঁড়িয়েছে। একবার যেসব নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য বাড়ছে, তা সহজে আর কমে আসছে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক অনিশ্চয়তাও আস্থাহীনতা দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, দেশে ভোজ্য তেলের মধ্যে সয়াবিন তেল হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। প্রতিবছর ৫১ লাখ ২৭ হাজার মেট্রিক টন ভোজ্য তেলের চাহিদা রয়েছে। এই চাহিদার চার ভাগের তিন ভাগই বিদেশ থেকে সয়াবিন তেল আমদানির মাধ্যমে পূরণ করা হয়। দেশে সরিষার আবাদ বৃদ্ধি পেলেও তা এখনো উল্লেখযোগ্য পর্যায়ে যেতে পারেনি। বর্তমানে দেশে মাত্র আড়াই লাখ মেট্রিক টন সরিষার তেল উৎপাদিত হয়। এছাড়া তিল, তিসি, গর্জন, কুসুম, সূর্যমুখী ইত্যাদি তৈলবীজ উৎপাদিত হয়। তবে এসব তৈলবীজ থেকে উৎপাদিত তেলের এখনো বাজারে গড়ে ওঠেনি। বিদেশ থেকে আমদানিকৃত অলিভ অয়েল সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। সাধারণ মানুষকে সম্পূর্ণ নির্ভর করতে হয় সয়াবিন তেলের উপর। সয়াবিন তেলের মূল্য সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একটি পরিবারে মাসে কমবেশি সাড়ে পাঁচ কেজি চালের প্রয়োজন হয়। যার মূল্য সাড়ে পাঁচশ’ টাকা। দেশের প্রথম ভাগে সরিষার তেল ছিল প্রধান ভোজ্য তেল। সাথে ছিল সহজলভ্য কিছু বাদাম তেল। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের কারণে দেশের প্রধান ভোজ্য তেল সরিষার উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। সরিষার বদলে সয়াবিন চাষের জন্য কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ ব্যাপক প্রচার চালাতে থাকে। যার কারণে ভোজ্যতেল আমদানি নির্ভর হয়ে পরে।
সাম্প্রতিককালে ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরণের জন্য দেশের বেশ কয়েকজন তেল ব্যবসায়ী দাদন পদ্ধতিতে সরিষা চাষাবাদ শুরু করে। এরমধ্যে নরসিংদীর সুধীর চন্দ্র সাহা নামে একজন ব্যবসায়ী প্রথম নরসিংদীসহ দেশের কয়েকটি এলাকায় কন্ট্রাক্ট ভিত্তিতে সরিষা চাষাবাদের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। অন্নপূর্ণা ওয়েল মিলের মালিক সুধীর চন্দ্র সাহা প্রথম বোতলজাত পদ্ধতিতে সরিষার তেল বাজারজাত শুরু করেন। সরকার যদি সরিষা চাষাবাদে প্রণোদনা প্রদান করে তবে সরিষা উৎপাদনের এরিয়া ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাবে। সরিষার তেল আবার হারানো মর্যাদা ফিরে পাবে। ভোজ্য তেল আমদানি কমে যাবে। কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। বেঁচে যাবে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন