জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সহযোগিতা ছাড়া এদেশে ইসলামী শিক্ষা তথা মাদ্রাসার শিক্ষার মূলে যাওয়া যাবে না। বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সুযোগ্য সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক আলহাজ্ব এ এম এম বাহাউদ্দীন সবসময় সরকারের ইসলাম ও মাদ্রাসা শিক্ষা নিয়ে ভালো কাজের সমর্থন ও সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।
দেশের আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখ ও ইসলাম প্রিয় মানুষের শত বছরের প্রাণের দাবি ছিল একটি ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়, যা তার নেতৃত্বে ধারাবাহিক দীর্ঘ আন্দোলনের পর অর্জিত হয়েছে। এটা বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের ঐতিহাসিক সাফল্য। সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী ও বর্তমান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতির অবদানের কথা স্বীকার করে জাতীয় অর্থনীতি পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভা শেষে বলেছেন, ৪১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পটির পেছনে অবদান রয়েছে আমার বন্ধু দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীনের। তার নেতৃত্বেই অর্জিত হয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষার জন্য একটি আলাদা অধিদপ্তর। বেতন বৈষম্য নিরসন, মাদ্রাসার জন্য জনবল কাঠামো গঠন, এর ফলে প্রায় ৫০ হাজার আলেমের চাকরি হচ্ছে। ৫০ হাজার শিক্ষিকার চাকরি হচ্ছে। কর্মচারীর সংখ্যাও বাড়ছে অনেক। তবে মাদ্রাসা শিক্ষার এই সাফল্য ম্লান করে দিতে একটি গোষ্ঠি কাজ করছে। মাদ্রাসার শিক্ষকদের ঐক্যকে নষ্ট করার জন্য নামে-বেনামে ভুঁইফোড় ফেসবুক সর্বস্ব সংগঠন হয়েছে। বাস্তবে তাদের কোনো অস্তিত্ব নেই। যে ঐক্যের ভিত্তিতে দাবি দাওয়া পূরণ হয়েছে, তারা মাদ্রাসা শিক্ষকদের সেই ঐক্য বিনষ্ট করার চেষ্টা করছে।
তাদের জানা উচিত, জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের বিরুদ্ধে অতীতে অনেকেই ষড়যন্ত্র করেছেন, বিরোধিতা করেছেন। আলিয়া মাদ্রাসার ধারার বিরুদ্ধাচারণ করেছেন। কিন্তু কোনো কিছুই টিকে নাই। জমিয়াতুল মোদার্রেছীন ও আলিয়া মাদ্রাসা ধারা টিকে আছে।
সভাপতির নেতৃত্বে সংগঠনের সুযোগ্য মহাসচিব অধ্যক্ষ আলহাজ্ব মাওলানা সাব্বির আহম্মেদ মোমতাজি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সফর করে শিক্ষকদের দাবির কথা শুনছেন। শিক্ষকগণ প্রিয় নেতাকে পেয়ে তাদের ভালোবাসায় সিক্ত করছেন। তার সাংগঠনিক দক্ষতা দিয়ে জমিয়ত অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে সাংগঠনিক শক্তি অনেক মজবুত করেছেন। মাদ্রাসা শিক্ষকদের সকল অগ্রগতি ও উন্নতির পিছনে সভাপতির সঙ্গে তার অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। মাদ্রাসা শিক্ষার ফিডার ইনিস্টিটিউট স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসাসহ এখনো মাদ্রাসা শিক্ষকদের যেসব দাবি রয়েছে ইনশাআল্লাহ জমিয়তের মাধ্যমেই তাও পূরণ হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
জমিয়ত সভাপতি আলহাজ্ব এ এম এম বাহাউদ্দীনের চিন্তা চেতনায় সার্বক্ষণিক জাগরুক রয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে কীভাবে অগ্রসর করা যায় সেই দিকে। সরকারের সাথে আলোচনা করে মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীদের সুযোগ-সুবিধা, শিক্ষা ব্যবস্থার গুণতমান উন্নয়ন, শিক্ষার্থীদের কীভাবে যোগ্য আলেম, যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা যায় সেই দিকে।
১৯৩৭ সালের ২ মার্চ মাদ্রাসা শিক্ষকদের ঐতিহ্যবাহী সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ২০০৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের দীর্ঘ তিন দশকের লাগাতার সভাপতি বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী সাবেক ধর্ম, ত্রাণ ও পুনর্বাসনমন্ত্রী আলহাজ্ব মাওলানা এম এ মান্নান (রহ.) এর ইন্তেকালের পর তার সুযোগ্য পুত্র দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক আলহাজ্ব এ এম এম বাহাউদ্দীন এ ঐতিহ্যবাহী সংগঠনের সভাপতি হিসেবে বিগত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। লক্ষ লক্ষ মাদ্রাসা শিক্ষক-কর্মচারী তার নেতৃত্বে জমিয়তের পতাকা তলে শিসাঢালা প্রাচীরের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ।
জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের দেশব্যাপী শক্তিশালী কমিটি রয়েছে। নির্বাচন হচ্ছে। সাংগঠনিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এটা আমাদের জন্য বিশাল সাফল্য। এছাড়া তার নেতৃত্বে সোহরাওয়ারর্দী উদ্যানে ইতিহাসের অন্যতম বৃহত্তম শিক্ষক সমাবেশ করেছে জমিয়ত। যে সংগঠন এত বড়, এতো অর্জন, এত সাফল্য, তা দেখে অন্যদের ঈর্ষা জাগতে পারে। কিন্তু লাভ নেই। আগামী দিন জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের, মাদ্রাসা শিক্ষকদের। সামনের দিনে যে সমাজ গড়ার চিন্তা ভাবনা হচ্ছে সেখানে মাদ্রাসা শিক্ষক এবং জমিয়তের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইসলামী উম্মাহ বর্তমানে এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। ইসলামের দুশমন সা¤্রাজ্যবাদীরা মুসলিম জাহানব্যাপী চালিয়ে যাচ্ছে প্রলয়তান্ডব। বাংলাদেশদের অভ্যন্তরেও ঘাপটি মেরে থাকা ইসলামবিদ্বেষী চক্র যখনি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, তখনই এদেশে লক্ষ লক্ষ আলেম-ওলামা, পীর মাশায়েখের প্রাণ পুরুষ দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক আলহাজ্ব এ এম এম বাহাউদ্দীন ও তার পত্রিকা শক্ত জবাব দিয়ে রুখে দিয়েছে। তিনি কখনই অন্যায়ের সাথে আপোস করেননি। লোভলালসার ঊর্ধ্বে থেকে ইসলাম ও মাদ্রাসা শিক্ষার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
লেখক: সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদাররেছীন, ভোলা ও উপাধ্যক্ষ, ভোলা দারুল হাদীস কামিল (স্নাতকোত্তর) মাদ্রাসা, ভোলা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন