শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

মানুষ বিনামূল্যে টিকা পাবে

আসছে অক্সফোর্ডের ৩ কোটি ভ্যাকসিন বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত কোভিড-১৯-এর যে তিন কোটি ডোজ টিকা সরকার কিনতে যাচ্ছে, তা মানুষকে বিনা মূল্যে দেওয়া হবে। তবে কারা আগে পাবে, তা ঠিক হবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুযায়ী। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সচিবালয়ে ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠকে কোভিড-১৯ দ্বিতীয় ওয়েভ মোকাবিলা ও ভ্যাকসিন সংগ্রহের সবশেষ অগ্রগতি সম্পর্কে মন্ত্রিসভাকে অবহিতকরণ শেষে এ তথ্য জানানো হয়।

নদীভাঙন রোধ করতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে বালুমহাল ও ঠিকাদারদের তালিকা করে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এতে অনিয়ন্ত্রিত বালু উত্তোলন বন্ধ হবে এবং তালিকার বাইরে ও বালুর পরিমাণের বাইরে কেউ বালু তুলতে পারবে না।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, গত ১৪ অক্টোবর ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ডের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন বাংলাদেশ সরকারের কাছে তিন কোটি ডোজ বিক্রির প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন। গত ৫ নভেম্বর স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সঙ্গে সিরাম ইনস্টিটিউট ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা চুক্তি হয়েছে। এরপর ১৬ নভেম্বর অর্থ বিভাগ ভ্যাকসিন কেনার জন্য স্বাস্থ্যসেবা বিভাগকে ৭৩৫ কোটি ৭৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। ভ্যাকসিন কেনার জন্য অর্থনৈতিক ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে প্রস্তাব পাঠাবে। এ প্রস্তাব চলে এসেছে। তিনি বলেন, মানুষকে এই ভ্যাকসিন বিনা পয়সায় দেওয়া হবে। টাকা সরকার পে করে দিচ্ছে। তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন ফ্রি দেওয়া হবে। ভ্যাকসিন বিতরণ নিয়ে দুর্নীতি হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মেজর করাপশন কেউ করলে আমাদের জানাবেন, আমরা তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেব। ভ্যাকসিন কিনতে সরকারের খরচ কত হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ক্রয়ের চুক্তি না হওয়া পর্যন্ত বলা যাবে না। এ ভ্যাকসিন কারা পাবে অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটা গাইডলাইন আছে। প্রথম কারা পাবে, দ্বিতীয় ধাপে কারা পাবে সে অনুযায়ী তারা একটা প্রোগ্রাম ডেভেলপ করছে। ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার-পুলিশ, প্রশাসনের লোক যারা মাঠে চাকরি করছে, তারপর বয়স্ক লোক, বাচ্চা- এরকম একটা প্রোটোকল আছে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ১৪ অক্টোবর ভ্যাকসিন কেনার জন্য অনুমোদন দিয়েছেন। আগামীকাল বুধবার অর্থনৈতিক সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে আসবে। অন্য ভ্যাকসিনের সবশেষ নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আরও অনেকগুলো ভ্যাকসিনের বিষয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে। তারা বলেছে, যোগাযোগ রাখছে। এখনই বলা যাচ্ছে না কোনটা বেশি ইফেকটিভ হবে। আমাদের এক নম্বর কন্ডিশন হলো- বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল মানতে হবে। যার সঙ্গে চুক্তি করবেন, যদি মেজর কোনো সমস্যা হয় তাহলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকলের বাইরে গেলে ওই চুক্তির কোনো মূল্য থাকবে না।

চীনের ভ্যাকসিন নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, রিজেক্ট করেনি। ওরা একটা টাকা চাচ্ছে। সরকার এখনও দেয়নি বা অ্যাগ্রি করেনি। আমরা ওটা এখনও বাতিলও করিনি। প্রথমে টাকা চায়নি, এখন টাকা চাচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত কোভিড-১৯-এর তিন কোটি ডোজ টিকা কিনবে বাংলাদেশ। এ টিকা দুই থেকে আট ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় সংরক্ষণযোগ্য, যা বাংলাদেশে বিদ্যমান। প্রথম ডোজ নেওয়ার ২৮ দিন পর দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগ করা হবে।

টিকার পর্যায়ভিত্তিক প্রাপ্যতা বিবেচনা করে প্রাথমিকভাবে কোভিড-১৯ সংক্রমণের সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠী, তথা কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মী, সম্মুখসারির কর্মী, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাহীন জনগোষ্ঠী, বয়োজ্যেষ্ঠ জনগোষ্ঠী, দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠী, শিক্ষাকর্মী এবং গণপরিবহনকর্মীরা টিকাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন। টিকাদান কার্যক্রম শুরুর আগে অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত জনগোষ্ঠীর তালিকা প্রণয়ন ও টিকা প্রদানে জাতীয় পর্যায়ে, জেলা পর্যায়ে ও উপজেলা পর্যায়ে মনিটরিং কমিটি গঠন করা হবে।

তিনি বলেন, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর কার্যক্রম আরও জোরাল করতে যাচ্ছে সরকার। এ জন্য একটি নীতিমালা করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে যে কোনো জরুরি সেবার নম্বরে ফোন করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ৯৯৯-এ সংযোগ হবে। এ ছাড়া এই কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি আলাদা ইউনিট থাকবে, যার প্রধান হবেন অনূর্ধ্ব ডিআইজি মর্যাদার কর্মকর্তা।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, জনজীবনে শান্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষায় এ নীতিমালা করা হচ্ছে। তবে কেউ যদি ফোনে মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রতারণা করে তাহলে তাকে দন্ড ভোগ করতে হবে। বৈঠকে বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ সম্পর্কে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করে পরিকল্পনা বিভাগ। এ ছাড়া তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ে প্রণীত পাঁচটি কৌশলপত্র সম্পর্কে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ। ব-দ্বীপ পরিকল্পনা আলোচনা করতে গিয়ে বালুমহালগুলোর বিষয়ে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বালুমহালগুলো যদি নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, নদীভাঙনের বড় কারণ হবে। এটা নিয়ে আমরা গত ৩/৪ মাস ধরে কেবিনেটে আন্তঃমন্ত্রণালয় অনেকগুলো মিটিং করে ফেলেছি। আমরা প্রিসাইজ করেও দিয়েছি যে এখন থেকে বালুমহাল কীভাবে হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, ভূমিসচিবকে সভাপতি করে একটি কমিটি গঠন করে গাইডলাইনও দিয়ে দিয়েছি যে কীভাবে নীতিমালা হবে। আশা করি জানুয়ারির মধ্যে নীতিমালা হয়ে যাবে। একটা ফান্ডামেন্টাল গাইডলাইন হলো- পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিআইডব্লিউটিএ সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের রিক্যুইজিশনের ভিত্তিতে বালুমহাল সার্ভে করে কোয়ানটিটি নির্ধারণ করে দেবেন। সার্ভে হয়ে গেলে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিআইডব্লিউটিএর টেকনিক্যাল মতামত নিয়ে জেলা প্রশাসকেরা বালুমহালগুলো ডিক্লারেশন দেবেন এবং ম্যাপসহ ওয়েবসাইটে দিয়ে দেবেন। জেলা প্রশাসক ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে থাকবে।

তিনি বলেন, দরপত্র আহ্বান করে কন্ট্রাকটরদের তালিকাও ওয়েবসাইটে দিয়ে দেওয়া হবে। পরবর্তীসময়ে দরপত্র আহ্বান করে কতটুকু বালু নিতে পারবে তা নির্ধারণ করে দেবে। তালিকার বাইরে ও বালুর পরিমাণের বাইরে কেউ বালু তুলতে পারবেন না। এতে একটা সিস্টেমের মধ্যে চলে আসবে এবং বৈষম্যমূলকভাবে বালু উত্তোলন আশা করি আমরা খুব শিগগিরই বন্ধ করে দিতে পারবো। সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন ও ওয়েবসাইটে বালুমহাল এবং বালুর পরিমাণ ও কন্ট্রাকটরদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। বালুর পরিমাণ নির্ধারণের জন্য মাল্টিবিম সার্ভে করা হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এতদিন তো আমাদের সিঙ্গেল বিম ছিল, পুরো জিনিসটা আসত না। আমরা পদ্মাতে একটা লঞ্চ নিয়ে এসেছি ইংল্যান্ড থেকে মাল্টিবিমের জন্য। ৩০ মিটার পর্যন্ত বালু ফেললে প্রি-ওয়ার্ক মেজারমেন্ট ও পোস্ট ওয়ার্ক মেজারমেন্ট থাকবে। এক সেন্টিমিটার ফেললেও আসবে স্ক্রিনে। পদ্মাতে যে আমরা বস্তা-পাথর ফেলি এর জন্য। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিআইডব্লিউটিএ ওই মাল্টিবিম দিয়ে সার্ভে করে দেবে। তারা প্রিসাইজলি বলে দিতে পারবে। আশা করি একটা বড় পরিবর্তন হবে।

বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ব-দ্বীপ পরিকল্পনা সম্পর্কে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করা হয়েছে। ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২০১৮ সালে অনুমোদন করা হয়। আজ বিস্তারিত উপস্থাপনার পর কিছু নির্দেশনা আছে। এটাকে আর একটু মোডিফিকেশন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ডেল্টা গভর্ন্যান্স কাউন্সিলের মিটিংয়ে দরকার পড়লে কিছু সংযোজন-বিয়োজন করা। এটা ২০২১ সাল পর্যন্ত একটা পরিকল্পনা। এখানে ফ্লেক্সিবিলিটি থাকবে। কারণ, নতুন নতুন বিষয় আসবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
Bojlur Rahaman ১ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:৫৩ এএম says : 0
This will be waste of money. Human has 99% survival rate against Covid 19 whereas the vaccine has only 90% efficacy which means its effectiveness will be much lower than 90%.
Total Reply(0)
Rashed Bin Mohammed Ali ১ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:৪৯ এএম says : 0
আলহামদুলিল্লাহ
Total Reply(0)
Abdur Razzak ১ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:৫১ এএম says : 0
বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা আমাদের সফল রাষ্ট্র নায়ক। জাতির ক্লান্তি লগ্নেও করোনা ভাইরাস নামক মহামারীতেও উনার অসাধারণ নেতৃত্বে ভাল অবস্থানে বাংলাদেশ। আমাদের ভ্যাকসিন হিরো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সঠিক সময়েই ভ্যাকসিন সকল জনগনের কাছে পৌঁছে দিবে ইনশাআল্লাহ।
Total Reply(0)
Shariful Islam Pinu ১ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:৫১ এএম says : 0
We Are Proud Of Our Honorable Minister...Joy Bangla joy Bongobondhu
Total Reply(0)
Farhad Hossain ১ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:৫২ এএম says : 0
জয়তু দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Total Reply(0)
Khairul Alom ১ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:৫০ পিএম says : 0
দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকা যথা সম্ভব মুসলিম ধর্ম নিয়ে রিপোর্ট করার কারণে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
Total Reply(0)
Nadim ahmed ২ ডিসেম্বর, ২০২০, ৪:১০ এএম says : 0
মানুষ বিনামূল‍্যে টিকা পাবে? কোন মানুয? বাংলাদেশে তো 17 কোটি মানুষ আছে??? টিকা তো 3 কোটি। তাহলে কি শুধূ আওয়ামীলীগ পাবে টিকা? কিন্তু ওরাও তো 1 কোটির বেশী হবে না! বাকি 2 কোটি কারা পাবে? বাংলাদেশে প্রবেশ করা ভারতীয়রা? তাহলে ঠিক আছে হিসাব।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন