আপনি কি জানেন কিভাবে খুশী থাকতে হয় অথবা খুশীর পরিভাষা কি? জীবন মানুষকে অনেক কিছু দেয় এবং সেসঙ্গে অনেক কিছু নিয়েও যায়। কিন্তু তা স্বত্তে¡ও মানুষকে খুশী থাকতে হয়। নিজের জন্য না হলেও আরো ৫ জনের জন্য খুশী থাকতে হয়। আর সেটি আপনাকে জীবনের অসংখ্য বাঁধা মোকাবিলায় শক্তি যোগায়। আমাদের মধ্যে অধিকাংশ ভালো আছেন, ভালো খেতে-পরতে পারছেন এবং সুস্বাস্থ্যের অধিকারী বটে। কিন্তু তারপর কি আপনার মনে হচ্ছে আপনি দুঃখী? তবে জীবনে খুশী থাকতে, আনন্দে থাকতে এ প্রক্রিয়াগুলো অবলম্বন করুন-
জেনে নিন কিসে আপনি খুশী অনুভব করেন অথবা খুশী থাকেন এবং সেটি করুন। খুশীর সঙ্গে আত্মসম্মানের দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে এবং সমীক্ষা বলছে সাফল্যের অনুভূতি খুশী অনুভবের প্রথম ও প্রধান পথ।
সমীক্ষায় দেখা গেছে যে সমস্ত লোকেরা একসঙ্গে অনেক কাজ করেন বা করার চেষ্টা করেন তাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা হয়। তাই সন্তানের একটি খেলনা হাতে নেবার পর ফোন এলে সেভাবে কথা বলতে থাকবেন না। কোন একটি জায়গায় বসবেন এবং ফোনে কথা বলতে মনোনিবেশ করবেন। যুগ যুগ আগে মহিলারা মাসে একবার নিজেদের মাথা সোহাগা এবং ডিমের হলুদ অংশ দিয়ে ধুয়ে নিতেন। তবে আজকের এ মডার্ণ যুগে অত্যাধুনিক চুলের রকমারী সামগ্রী দিয়ে প্রতিদিন চুল ধুয়ে নিবেন। চুল পরিষ্কার থাকলে আপনি মানসিকভাবে ভালো অনুভব করবেন। যে সমস্ত লোকের সমর্থনকারী বন্ধুদের একটি বড় সংখ্যা রয়েছে তারা শারীরিকভাবে সুস্থ থাকেন সেসব ব্যক্তির তুলনায় যাদের সমর্থন যোগ্য বন্ধুর সংখ্যা কম। সেসব ব্যক্তিদের রক্তচাপ, কোলেস্টেরল এবং হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রিত থাকে। আপনি কি মনে করেন যে আপনার অনুভূতি কোথাও কোন প্রভাব ফেলে না? কিন্তু তেমনটি আসলে নয়। আপনার অনুভূতি, আপনার চিন্তা, আপনার ধারণার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। সমাজ, সংসারে আপনি একজন ব্যক্তি যার গ্রহণযোগ্যতা প্রচুর এবং সেটি ভোটের ময়দানে সবচাইতে ভালো চোখে পড়ে। আপনি জীবনে কি কি পেয়েছেন সেগুলোর দিকে দৃষ্টি দিন। তবে জীবনে কি পাননি সেটার হিসাব কষতে বসবেন না। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, যে সমস্ত ব্যক্তিরা জীবনে কি কি পেয়েছেন সপ্তাহে একদিন সেটির হিসাব কষতে বসেন, তাদের মন-মানসিকতা প্রফুল্ল হয়ে ওঠে। তারা সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হন এবং তাদের কর্মচাঞ্চল্য বৃদ্ধি পায়। এ অনুভূতি ব্যথা ও ক্লান্তি ভাব দূর করে। আপনার চিকিৎসকের সাথে দেখা করুন, একটি শক্ত ই-মেইলের উত্তর দিন, আপনার প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস কিনুন।
আপনার কর্মতালিকায় থাকা অসহ্য একটি কাজ আপনার কর্মচাঞ্চল্য বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। আমাদের মধ্যে খুব কম লোক পর্যাপ্ত ঘুমোতে পারেন এবং এর ফলে মানুষ বদমেজাজি হয়ে উঠেন। তাই রাত ৯টা নাগাদ খেয়ে-দেয়ে ১টি বই নিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়–ন এবং ১ ঘন্টা পরে লাইট বন্ধ করে ঘুমিয়ে যান। আপনার মেজাজ ঠিক করার ক্ষেত্রে এর চেয়ে উত্তম ঔষধ বিশ্বের আর কোথাও নেই। সঙ্গীত মানুষের মস্তিষ্কের সেসব অংশকে সক্রিয় করে তোলে যেগুলো থেকে খুশীর সঞ্চার হয়। খাওয়া এবং সহবাসের বেলায় একই রকম প্রক্রিয়ার পুণরাবৃত্তি ঘটে। প্রদর্শনী, মিউজিয়াম, পার্ক, লাইব্রেরীতে অথবা ধর্মীয় স্থান সমূহে ঘুরে আসুন। এ স্থানগুলোতে ভ্রমণ করতে আপনি ক্ষিপ্ত বিশ্বের মধ্যে শান্তির দ্বীপের সন্ধান পাবেন। আপনার বাড়ির কাছে একটি শান্ত এলাকার সন্ধান করুন এবং সেটিকে আপনার লুকোনোর গোপন জায়গা হিসেবে ধরে রাখুন।
মনে রাখবেন আপনি যখন ১০ বছরের তখন ২১ বছরের লোকেরা কিভাবে প্রাচীন হতে পারে? তার নিজের বয়সকে উপভোগ করুন। কারণ আপনি যে বয়সে রয়েছেন কাল সে বয়সটি আপনি আর ফিরে পাবেন না। আপনার ভালো-খারাপ অনুভূতিগুলো জমতে জমতে একসময় আপনার মনকে ভরাক্রান্ত করে তুলতে পারে, আপনার রোগের উদ্রেক হতে পারে। তাই আপনি যখন মানসিকভাবে ভেঙে পড়বেন তখন আপনার অনুভূতিগুলো বাইরে বের করে দিন। আর সেটি দূর করতে মন খুলে কাঁদুন। আপনার মনের কাছের লোকদের জানান আপনি তাদের ভালবাসেন। কারো প্রশংসা করলে আপনি কখনো দুঃখ পাবেন না। নিজের খুশী মতো সামান্য হাঁটলে অথবা একটু পার্কে গেলে বা ১টি বই পড়লে আপনার মনে প্রশস্তি জন্মাতে পারে এবং সেটি আপনাকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। আর তাই আপনার দৈনন্দিন কর্মতালিকায় এ কাজগুলোকে যোগ করুন। যেসব লোক এক ধরণের প্রান্তিক রোগে ভুগছেন, তাদের জীবনে দুর্ঘটনা অথবা কোন মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষ্য তাদের জীবনে এক ভিন্ন প্রভাব বিস্তার করে। অনেকে এমন হলে বলে থাকেন যে তারা আর বেশিদিন বাঁচবেন না। এমন ধারণা তাদের মনে যখন দেখা যাবে তাদের এ মুহূর্তে একটি শিক্ষা নেয়া উচিত যে আজকের কথা ভেবে জীবনে বাঁচতে শিখুন। কালকের কথা ভেবে জীবন কাটাবেন না।
আফতাব চৌধুরী
সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন