শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

প্লাস্টিকের টুকরিতে স্বাবলম্বী

ইমাম হোসেন, মীরসরাই (চট্টগ্রাম) থেকে : | প্রকাশের সময় : ৪ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০৭ এএম

দিন বদলেছে প্রযুক্তির ছোঁয়ায়। তার ধারাবাহিকতায় হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার কুটির শিল্পসহ অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী শিল্প। ৯০ দশক পর্যন্ত গ্রামগঞ্জের কুটির শিল্প ছিল চাহিদা ছিলো শীর্ষে। তৈরি হতো মানুষের শ্রমে, সময় লাগতো অনেক। আর সেগুলোর সুনামও ছিল বেশ। বর্তমান আধুনিক সভ্যতার যুগে সময় বাঁচাতে হাতে তৈরি ঐতিহ্যবাহী সেই শিল্পগুলো এখন বিলুপ্তির পথে। তবে সেগুলোর প্রতি মানুষের চাহিদা রয়েছে প্রচুর। আবার অনেকেই আছেন প্রযুক্তি থাকলেও এখনও সেই ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন। নিয়েছেন প্রযুক্তির সাথে চ্যালেঞ্জ হিসেবে। আর এমনই একজন হচ্ছেন মীরসরাই উপজেলার উদ্যোক্তা হিঙ্গুলী ইউনিয়নের মেহেদী নগর গ্রামের যুবক শহিদুল ইসলাম রানা।
রানা ১৪ বছর বয়স থেকে তিনি মাছের আড়ৎতে চাকরি করতেন। সেখানে টুকরির চাহিদা দেখে তৈরির ইচ্ছে জাগে। পরবর্তীতে এটাকে আয়ত্ত¡ করে শুধু পেশা হিসেবে নয় উদ্যোক্তা হয়ে প্রায় ৫০ পরিবারের জীবন বদলে দিয়েছেন। সেই থেকে শুরু করেছেন প্লাস্টিকের টুকরি তৈরি। নিজ বাড়িতে প্রথমে ১ লাখ টাকা পুঁজি দিয়ে ২০০৮ সালে ৫ জন শ্রমিক দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে ৭ লাখ টাকা পুঁজি দাঁড়িয়েছে। আর সেখানে কাজ করছেন প্রায় ৫০ পরিবারের নারী সদস্যরা।
শ্রমিকরা তাদের দৈনিন্দিন আয়ের পাশাপাশি প্লাস্টিকের বেতী টুকরি তৈরি করে বাড়তি আয় করে থাকেন। প্রতি পরিবার প্রতিদিন ১০টি পর্যন্ত টুকরি বানাতে পারে। সেই টুকরি বানানো বাবদ প্রতিদিন ৩শ’ টাকা করে আয় করে থাকেন। আকার ও মান ভেদে ১৭ থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত মজুরি প্রদান করা হয়। প্রতি পরিবারের মাসিক আয় ৭ থেকে ১০ হাজার টাকা। প্লাস্টিকের বেতী টুকরিগুলো অন্যান্য অঞ্চলে উৎপাদিত মাছ সবজি কাঁচামালসহ অন্যান্য দ্রব্যাদি মূলত একস্থান থেকে অন্য স্থানে সহজে প্রেরণ করা হয়। টুকরিগুলো গুণে-মানে অনেক টেকসই এবং দীর্ঘস্থায়ী। পারিবারিক কাজে ব্যবহার করা হলে এটি যুগের পর যুগ টিকে থাকে।
এটি পাইকারি প্রতি পিস ১০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হয়। প্রতি মাসে প্রায় ৫ টন বেতী দরকার হয়। ২০০৮ সালের শুরুর দিকে প্রতিকেজি প্লাস্টিক বেতীর দাম ছিল ৬ থেকে ৭ টাকা করেছিল বর্তমানে এটির দাম প্রায় ৯০ টাকা। বিভিন্ন সাইজের তৈরি টুকরিগুলো বিক্রি হয় বিভিন্ন দামে। কুটির শিল্পের উদ্যোক্তা শহিদুল ইসলাম রানা বলেন, যদি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও বিনা সুদে ঋণ এবং পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণ যদি জায়গা পেলে তাহলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারব বলে আশা করি। এখানে কাজ করে স্বাবলম্বী মরিয়ম, সুরমা, নারগিস জানান, সংসারের কাজের পাশাপাশি তারা প্লাস্টিকের বেতী টুকরি তৈরি করে স্বচ্ছল ভাবে জীবন যাপন করছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মুনাছির আহমে¥দ বলেন, গ্রামে অনেক নারী সদস্যরা রানা প্লাস্টিকের বেতী টুকরি তৈরি স্বাবলম্বী হয়েছেন। মীরসরাই উপজেলার যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা কাজী আবদুল আলিম বলেন, উদ্যোক্তা হলে সরকারি বরাদ্দ আসলে উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদফতর থেকে সহযোগিতা করবো।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন