পলিথিন ও তালপাতার বেড়া ও ছাউনী দেয়া ছোট্ট কুঁড়ে ঘরে নয় বছরের রুবিনার সংসার। বিদ্যুতের আলো নেই, ঘোর অন্ধকাই তার নিত্য সঙ্গী। ঘরে শুয়ে শুয়েই তালপাতার ছাউনির ফাঁকা দিয়ে দেখা যায় চাঁদের আলো। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের স্যাঁতসেতে মাটির ঘরে পলিথিন বিছিয়ে শতছেড়া কাপড়, কাঁথা বিছিয়ে শিকলবন্দী মাকে বুকে আগলে তার রাত কাটলেও দিনে শুরু হয় জীবনযুদ্ধ। মানসিক ভারসাম্যহীন শিকলবন্দী মা, মানসিক ভারসাম্যহীন খালা ও সত্তোরোর্ধ নানী। যাদের পুরো দায়িত্ব তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী রুবিনার কাঁধে। তার স্বপ্ন একটি ঘরের ও মায়ের উন্নত চিকিৎসা। কিন্তু সব স্বপ্নই সাদা মেঘের মতো ওড়ে যায় দূর আকাশে। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রচার হলে সরকারিভাবে রুবিনাকে নতুন ঘর দেয়া ও তার পরিবারকে বিভিন্ন সুবিধা দেয়ার আশ্বাস দেয় উপজেলা প্রশাসন। যা এখন বাস্তবায়নের পথে।
নতুন ঘরের জন্য জমি নির্বাচনে খুশি রুবিনা জানায়, প্রধানমন্ত্রী ঘর দিচ্ছেন। আর আমাকে তালপাতার ছাউনির নিচে বৃষ্টিতে ভিজতে হবে না। রাতে বৃষ্টির ফোটা গায়ে পড়বে না। নতুন ঘরে নতুন বিছানায় মাকে জড়িয়ে ঘুমাতে পারবো। মাটিতে ছালা পেতে না, টেবিল-চেয়ারে বসে পড়তে পারবো। মাকে ডাক্তার দেখিয়ে সুস্থ করতে পারবো। এজন্য রুবিনা প্রধানমন্ত্রী ও সহায়তাকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। ইতোমধ্যে নতুন ঘরের জন্য দুই শতাংশ জমি নির্ধারণ করেছে উপজেলা প্রশাসন। এছাড়া পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেয়া ছাড়াও রুবিনার অসুস্থ মা ডলি বেগম ও খালা ফাতেমা বেগমের চিকিৎসা শুরু করেছে সেচ্ছাসেবী সংগঠন অরেঞ্জ বিডি। এদিকে কলাপাড়া সমাজসেবা অধিদফতর থেকে রুবিনার নানীকে বয়স্ক ভাতা, মা ও খালাকে প্রতিবন্ধী ভাতা দেয়া হচ্ছে। নতুন শিক্ষা বৃত্তির আওতায় এসেছে রুবিনা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সমাজসেবা অধিদফতর পটুয়াখালী জেলার ডিডি শিলা রানী দাস।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক জানান, রুবিনার পরিবারের জন্য দুই শতাংশ জমির ওপর প্রধানমন্ত্রীর উপহারের গৃহ নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। টুঙ্গীবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে এ নতুন ঘর নির্মাণ হবে। এছাড়া তাকে সরকারিভাবে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন