করোনার কারণে ১৮ মার্চ বন্ধ হয়ে যায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। লকডাউনে প্রায় ৬ মাস বন্ধ থাকায় সেশনজটের আশঙ্কায় পড়েছে শিক্ষার্থীরা। অনলাইনে ক্লাস নিলেও আটকে আছে পরীক্ষা। স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়ছে চাকরির বাজারে। অনিশ্চিত ভবিষ্যত ভীতি সঞ্চার করছে শিক্ষার্থীদের মাঝে ।
প্রায় ছয় মাস বন্ধ থাকার পর সেপ্টেম্বর থেকে অনলাইন ক্লাস চালু হয়েছে। তবুও সেশনজটের আশঙ্কায় আছেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ টির অধিক বিভাগে করোনার আগেই সেশনজট ছিল। এসব বিভাগের শিক্ষার্থীরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা ভেবে হতাশ হয়ে পড়ছেন।
মেরিন সায়েন্সেস অনুষদের ওসানোগ্রাফি বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিন খন্দকার বলেন, উত্তরাধিকার সূত্রেই প্রায় দেড় বছরের সেশনজটে আটকে ছিলাম। এখন লকডাউনের ফলে সেশনজট আরো বেড়ে গেলো। স্নাতক পাশ করাই এখন বড় একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়ায় অনেক চলমান পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যায়। বেশ কিছু বিভাগের রেজাল্ট আটকে যায় শুধু মাত্র মৌখিক ও প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষার জন্য। এছাড়াও অনেক বিভাগের পরীক্ষার রুটিন দেওয়ার পর আর পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়ে উঠেনি। করোনার প্রকোপ কিছুটা কমায় স্থগিত পরীক্ষা নেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীরা দুইবার মানববন্ধন ও কর্তৃপক্ষকে স্মারকলিপি দিয়েছে। তবে প্রতিবারই তাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এখনও কোন তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি।
আইন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রায়হান বলেন, পরীক্ষা আটকে থাকায় আমরা চাকরির বাজারের পিছিয়ে পড়ছি। গত ৩০ নভেম্বর ৪৩ তম বিসিএস (সাধারণ) বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। আবেদনের সর্বশেষ তারিখ ৩০ জানুয়ারি উল্লেখ করা হয়েছে। ওই তারিখের মধ্যে পরীক্ষা শেষ না হলে আমরা আবেদনের যোগ্যতা হারাব।
অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে সবচেয়ে বেশি পিছিয়ে আছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা। এসব এলাকার ইন্টারনেট সংযোগ, দূর্বল নেটওয়ার্ক, প্রয়োজনীয় ডিভাইস এবং অর্থিক সমস্যার কারণে তারা অনলাইন ক্লাসে উপস্থিত থাকতে পারছে না।
বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলার বাদুরতলী গ্রামে থাকেন দর্শন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মিনহাজুল ইসলাম । তিনি বলেন, আমার গ্রামে নেটওয়ার্ক সংযোগ খুবই দুর্বল । অনলাইনে ক্লাস করতে বাড়ির বাইরে যেতে হয়। তাই সবসময় ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারিনা ।
চবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান ইনকিলাবকে বলেন, পরীক্ষা নেয়ার ব্যাপারে বিভাগীয় প্রধানদের পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে। প্রত্যেক বিভাগের সভাপতি শিক্ষার্থীদের সুবিধা অনুযায়ী পরীক্ষা নিতে পারবেন।
শিক্ষার্থীরা সেশনজটে পড়বে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, মহামারি কাটিয়ে উঠলে আমরা এই ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেব। প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর শুক্র এবং শনিবারও ক্লাস নেয়ার চেষ্টা করব।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন