অবশেষে ভাঙলো বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের এক শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীর বলয়। বছরের পর বছর একই স্থানে অবস্থান করা এদের অবশেষে বদলি শুরু হলো। প্রতিষ্ঠানটির জেলা ও উপজেলা কার্যালয়গুলোতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পোস্টিং নিতে অনিচ্ছুক। তাদের পছন্দের স্থান বিএমডিএ, প্রধান কার্যালয়, রাজশাহী।
বিভিন্ন স্তরে অর্ধশত কর্মকর্তা-কর্মচারী দীর্ঘদিন ধরে প্রধান কার্যালয়সহ বৃহত্তর রাজশাহী জেলায় অবস্থান করছেন। অপরদিকে মাঠ পর্যায়ের অন্যান্য জেলাগুলোতে জনবলের ঘাটতি থাকার কারণে প্রতিষ্ঠনটির উন্নয়ন কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে এবং কৃষকেরা ন্যায্যসেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
জানা গেছে, বিএমডিএ এর প্রধান কার্যালয়ে প্রয়োজনীয় জনবলের তুলনায় অধিক সংখ্যক জনবল কর্মরত রয়েছে। এদের মধ্যে অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী অলস ও কর্মহীনভাবে বেতনভাতা নিচ্ছে। অন্যদিকে মাঠ পর্যায়ে জনবলের ঘাটতি থাকায় সার্বিক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। ইতোপূর্বে এ বিষয়ে জাতীয় ও স্থানীয় মিলে একাধিক পত্রিকায় বিভিন্ন শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
অদৃশ্য কারণে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান কার্যালয়সহ বৃহত্তর রাজশাহী জেলায় অবস্থানকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অন্যত্র বদলি করা সম্ভব হয়নি। দীর্ঘকাল ধরে একই কর্মস্থলে অবস্থান করায় তারা নানারকম অনিয়ম-দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে অনেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বর্তমান নির্বাহী পরিচালক শ্যাম কিশোর রায় (যুগ্ম সচিব)। দায়িত্ব গ্রহণের প্রায় ১ বছর পর সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদের সূত্র ধরে অনুসন্ধান করে প্রধান কার্যালয়সহ মাঠ পর্যায়ের একই কর্মস্থলে দীর্ঘদিন যাবৎ কর্মরত বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঠ পর্যায়ে কাজের গতিশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পৃথক দুটি আদেশের ১৬ জন সহকারী প্রকৌশলী ও ২২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী, যাদের মধ্যে ৪ জন উচ্চতর উপ-সহকারী প্রকৌশলীী, ১২জন উপ-সহকারী প্রকৌশলী, ৫জন পরিদর্শক ও ১জন নক্সাকারসহ মোট ৩৮জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বদলির আদেশপত্র জারী করা হয়েছে।
কিন্তু বদলিপ্রাপ্ত এক শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ আদেশ বাতিলের জন্য বিভিন্ন ধরনের অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও ইতোপূর্বে মাঠ পর্যায়ে জনবলের ঘাটতি সমন্বয়ের জন্য নির্বাহী প্রকৌশলী ও তত্ত¡বধায়ক প্রকৌশলীদেরকে স্ব স্ব অধিক্ষেত্রের মধ্যে জনবল পুনর্বিন্যাস করার জন্য বিএমডিএ চাকরি বিধিমালা, ১৯৯৩ মোতাবেক ক্ষমতা অর্পনপূর্বকপত্র জারী করে। কিন্তু বিএমডিএ এর ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের একটি অংশ এ আদেশ বাতিলের জন্য অবৈধ তৎপরতা চালাচ্ছে। তারা বদলি আদেশ বাতিলের জন্য প্রধান কার্যালয়ের সামনে ৯ ডিসেম্বর প্রতিবাদ জানায় ।
এ ব্যাপারে নির্বাহী পরিচালক শ্যাম কিশোর রায় এর বক্তব্য হলো, কৃষিবান্ধব বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন দেশের আবাদযোগ্য এক ইঞ্চি মাটিও যেন অনাবাদী না থাকে। বিএমডিএ প্রধানত উত্তরাঞ্চলের সেচ কার্যক্রমের সাথে জরিত। আসন্ন সেচ মৌসুমে বিএমডিএ এর অধিভুক্ত এলাকার আবাদযোগ্য এক ইঞ্চি মাটিও যেন অনাবাদী না থকে এবং অত্র অঞ্চলের কৃষকরা যেন বিএমডিএ এর সার্বিক সেবা থেকে বঞ্চিত না হয় সে লক্ষ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ প্রধান কার্যালয়সহ মাঠপর্যায়ের একই কর্মস্থলে চাকরিরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যেখানে যেখানে জনবলের প্রচন্ড ঘাটতি রয়েছে সেখানে বদলি করা হয়েছে। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সেচ কার্যক্রমসহ অন্যান্য কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ এ আদেশ জারী করে। দীর্ঘদিন পরে হলেও কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগ প্রসংশনীয়। যা মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সকল মহলে প্রসংশিত হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন