শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ইসলামই ছিল একাত্তরে স্বাধীনতার মূল ভিত্তি : বরিশালে মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম

বরিশাল ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ১৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম শায়েখে চরমোনাই বলেছেন, রক্ত সাগর পাড়ি দিয়ে যে বাংলাদেশ আমরা স্বাধীন করেছি, সেই স্বাধীনতা স্বপ্নই রয়ে গেল। বাংলাদেশ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দ্বারপ্রান্তে উপনীত হলেও স্বাধীনতার মৌলিক দাবি সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার আজও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আমরা বিশ্বাস করি, স্বাধীনতার প্রকৃত অর্থ খুঁজে পেতে রাষ্ট্রক্ষমতায় ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। যারা মুক্তিযুদ্ধের সাথে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদকে সম্পৃক্ত করতে চান- তাদের জানা উচিৎ ইসলামই ছিল একাত্তরে স্বাধীনতার মূল ভিত্তি।

বরিশাল নগরীর ফজলুল হক এভিনিউতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশাল জেলা ও মহানগর শাখা আয়োজিত বিজয় র‌্যালী পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন। তিনি বলেন, এদেশের ৯২ ভাগ মুসলমানের ধর্ম ইসলামকে মুক্তিযুদ্ধের বিপরীতে দাঁড় করিয়ে সা¤প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির চেষ্টা করছে কিছু ভুঁইফোড় সংগঠন ও জনবিচ্ছিন্ন নেতা। অথচ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মসূত্রে একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান। তিনি তাঁর প্রত্যেকটি বক্তব্য-বিবৃতিতে ইসলামের অবস্থান জানান দিয়েছেন। ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে তিনি বলেছিলেন ‘এদেশের মানুষকে মুক্ত করেই ছাড়বো ইনশাআল্লাহ’। তার সে ঐতিহাসিক ইনশাআল্লাহর ধ্বনিতে উজ্জীবিত হয়ে এদেশের মুসলমানরা স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। দীর্ঘ নয় মাস সংগ্রাম করে এ ভ‚খÐকে স্বাধীন করেছে। সেই সংগ্রামী মুসলমানদের বাদ দিয়ে এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস কল্পনাও করা যায় না।

মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম শায়েখে চরমোনাই বলেন, মুক্তিযুদ্ধে মুসলমানদের অবস্থান কি ছিল, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা তা ভাল করেই জানেন। নতুন করে সেটা প্রমাণ করতে বক্তব্য বিবৃতি জরুরি নয়। তবে যারা ইসলামকে বিকৃত করার লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী রাজাকারদের পরিচয় তুলে ধরতে ইসলামের সিম্বল ব্যবহার করেন, তাদেরকে একটি বার্তা দিতে চাই, আপনারা সতর্ক হোন। নিজেদের রাজাকার তকমা ঢেকে রাখতে ইসলামকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করবেন না, এর ফলাফল কখনো শুভ হবে না। একই সাথে সরকারকে বলব, যারা মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন গল্প-সিনেমা-নাটক এবং তথ্যচিত্রে রাজাকারদের পরিচয় তুলে ধরতে ইসলামী সিম্বল ব্যবহার করে সেসব নির্মাতাদের সংশোধনের চেষ্টা করুন এবং আপনার বাবার ইজ্জত রক্ষা করুন।

শায়খে চরমোনাই বলেন, মুক্তিযুদ্ধের নির্মাণ ও পরিচালনায় ইসলাম ছিল প্রাধান্য বিস্তারকারী এক শক্তি। মুক্তিযুদ্ধকে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র ‘আল্লাহর পথে জিহাদ’ বলে পরিচয় করে দিয়েছে। বেতার কেন্দ্রের সেই ঘোষণার প্রেক্ষিতে মাঠ পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণাই ছিল ইসলাম। এমনকি ৯নং সেক্টর কমান্ডার মেজর এম এ জলিল আমার দাদাজান মাওলানা সৈয়দ এছহাক (রহ.) এর নিকট নিয়মিত যাতায়াত করতেন, দোয়া নিতেন এবং মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার ক্ষেত্রে পরামর্শ নিতেন। শুধু তাই নয় চরমোনাইসহ আশপাশের হিন্দু স¤প্রদায়ের লোকেরা নিজেদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে চরমোনাই মাদরাসায় আশ্রয় নিয়েছিলেন এবং নিরাপদ ছিলেন। আমার দাদা মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি মাদরাসায় আশ্রয় নেয়া হিন্দু স¤প্রদায়ের লোকদের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। এতসব বাস্তবতার পরেও যেসব ইতিহাস বিকৃতিকারীরা মুক্তিযুদ্ধের সাথে ইসলামের বৈপরীত্য জাহির করতে চান, তারা নিজেদের বিবেকের সাথে গাদ্দারী করছেন বলে জানান তিনি।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ছাত্র যুব বিষয়ক সম্পাদক ও বরিশাল জেলা সভাপতি মুফতি সৈয়দ এছহাক মুহাম্মাদ আবুল খায়েরের সভাপতিত্বে বরিশাল মহানগর সেক্রেটারী মাওলানা জাকারিয়া হামিদী এবং জেলা সেক্রেটারি ভাইস-প্রিন্সিপাল মাওলানা সিরাজুল ইসলামের যৌথ সঞ্চালনায় র‌্যালী পূর্ব সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন ইসলামী যুব আন্দোলনের সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মাদ নেছার উদ্দিন, বরিশাল সিটি নির্বাচনে হাতপাখার মেয়রপ্রার্থী হাফেজ মাওলানা ওবায়দুর রহমান মাহবুব প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন