ক্রনস ডিজিজ হলো একটি প্রদাহজনিত অন্ত্রের রোগ। এ রোগ মুখ থেকে শুরু করে পায়ুপথ পর্যন্ত যে কোনো স্থানে হতে পারে। ক্রনস ডিজিজে ঠোঁটের কোণায় ঘাঁ, অ্যাপথাস আলসার দেখা দিতে পারে। শতকরা ২০ থেকে ৩০ জন ক্রনস ডিজিজ রোগীদের অ্যাপথাস আলসার হয়ে থাকে। অনেক রোগীদের প্রায়ই মুখে ঘাঁ দেখা দিয়ে থাকে। কিছুদিন পর ভালো হয়ে আবার দেখা দেয়। এসব ক্ষেত্রে দেখা উচিত রোগীর অন্ত্রের কোনো রোগ আছে কিনা? অন্ত্রের কোনো রোগ থাকলে যথারীতি মুখের ঘাঁ-এর চিকিৎসা নিলেও বার বার মুখে আলসার দেখা দিয়ে রোগীর জন্য এক বিড়ম্বনাকর অনুভূতির সৃষ্টি করে থাকে। ফলিক এসিডের অভাবে মুখে ঘাঁ জিহ্বায় ফোলাভাব, শারীরিক দুর্বলতা দেখা দিতে পারে। ফলিক এসিড বা ভিটামিন বি৯ ক্ষুদ্রান্ত্রে শোষিত হয়ে থাকে। কিন্তু ক্রনস ডিজিজ রোগীদের ক্ষেত্রে যাদের রোগের কারণে ক্ষুদ্রান্ত্রের অংশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয় তখন ফলিক এসিডের শোষণ হয় না। ফলে শরীরে ফলিক এসিডের অভাব দেখা দেয়। এর ফলে মুখে ঘাঁসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। মাঝে মাঝে ক্রনস রোগীরা মুখে ব্যথাযুক্ত আলসার বা ঘাঁ অনুভব করে যা অ্যাপথাস আলসার নামে পরিচিত। এসময় মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে। তাই মুখে দুর্গন্ধ হলেই মুখের সমস্যা ভেবে চিকিৎসা গ্রহণ করার আগে দেখে নিতে হবে রোগীর অন্ত্রের কোনো সমস্যা আছে কিনা? মানব দেহের রক্তের নিউট্রোফিলের পরিমাণ কমে গেলে নিউট্রোপেনিয়া বলা হয়। নিউট্রোফিল শরীরে সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে থাকে। নিউট্রোফিলের পরিমাণ কমে গেলে মুখে ক্ষতসহ নানাবিধ রোগ দেখা দিতে পারে। তাই বার বার মুখে ক্ষত বা আলসার দেখা দিলে এবং অন্যান্য রোগের ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী রক্তকণিকার পরিমাণ ঠিক আছে কিনা তা জানা উচিত। ফলেট বা ফলিক এসিড, ভিটামিন বি১২ অথবা আয়রণের অভাবজনিত কারণে জিহ্বার প্রদাহ, এট্র্রফিক প্যাপিলা, বার বার মুখের আলসার, ছত্রাক সংক্রমণ, অ্যাংগুলার স্টোমাটাইটিস এবং মুখের অভ্যন্তরে ব্যথা হতে পারে। আয়রণের অভাবজনিত কারণে পারনিসাজ রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে। জিংকের অভাবে মুখে বার বার আলসার দেখা দিতে পারে। তাই মুখের রোগে সচেতন হতে হবে। নিজের চিকিৎসা নিজে না করে একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করা উচিত।
ষ ডা. মো: ফারুক হোসেন
মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ
মোবাইল : ০১৮১৭৫২১৮৯৭
ফৎ.ভধৎঁয়ঁ@মসধরষ.পড়স
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন