বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সম্পাদকীয়

সমুদ্রদূষণ ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে

নাজমুন্নাহার নিপা | প্রকাশের সময় : ২৪ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

শক্তি ও সম্পদের অন্যতম আধার সমুদ্র। একদিকে পৃথিবীতে মানুষ বাড়ছে। অন্যদিকে সমুদ্রের উপর মানুষের নির্ভরশীলতাও বাড়ছে। কিন্তু বিভিন্ন প্রকার দূষণের কবলে পড়ে দিন দিন সমুদ্র তার স্বরূপ হারাচ্ছে সমুদ্রকে দূষিত করে এমন প্রধান জিনিসগুলো হলো, বায়ুবাহিত ধুলাবালি, ট্যাংকার এবং অন্যান্য জাহাজ থেকে নির্গত বর্জ্য, বিভিন্ন প্লাস্টিক বর্জ্য, পলিথিন ইত্যাদি। বায়ুমন্ডলে প্রকাশিত দূষকগুলো বৃষ্টিপাতের কারণে সরাসরি সমুদ্রে গিয়ে পড়ে। ফলে সমুদ্র অনেকগুলো বর্জ্যের ভাগাড় হয়ে যায়।
শিল্প উন্নয়নের সাথে সাথে বিভিন্ন জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর ফলে বায়ুমন্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ ক্রমশ বাড়ছে। এ ধরনের দূষণের কারণে সমুদ্রের পানির অম্লতা বাড়ে এবং সামুদ্রিক প্রাণী ও উদ্ভিদকূল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির প্রভাবে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে। সামুদ্রিক প্রাণীর মধ্যে বিভিন্ন রোগের বিস্তারও ঘটছে।

জলবায়ু পরিবর্তন কীভাবে মহাসাগরের পরিবেশ বদলে দিচ্ছে এবং সামুদ্রিক প্রাণীদের জীবনযাত্রার ওপর প্রভাব ফেলছে, তা নিয়ে সর্বশেষ কয়েকটি গবেষণার ভিত্তিতে বিজ্ঞানীরা সায়েন্স সাময়িকীর একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। এটির সহ-লেখক কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক উইলিয়াম চেউং বলেন, সমুদ্রের সব প্রাণী ও উদ্ভিদ প্রজাতি এবং সম্পদের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়বে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২১০০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি দুই ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে সীমিত রাখার লক্ষ্যে কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমন ব্যাপক হারে কমাতে হবে। মহাসাগরের ভবিষ্যৎ অবস্থা কেমন হবে, তা নির্ভর করছে আগামী দশকগুলোতে কী পরিমাণ কার্বন নির্গমন হবে, তার ওপর। মহাসাগরের সামগ্রিক পরিবেশের অপূরণীয় ক্ষতি রোধ করতে চাইলে কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমনের পরিমাণ অবিলম্বে কমিয়ে আনতে হবে।

গবেষণায় নেতৃত্ব দেন ফ্রান্সের জাতীয় বিজ্ঞান গবেষণাকেন্দ্রের (সিএনআরএস) অধ্যাপক জ্যঁ-পিয়ের গাত্তুসো। তিনি বলেন, কার্বন নির্গমণ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলে মাছ তাদের বর্তমান আবাস ছেড়ে ৬৫ শতাংশ দ্রুত অন্যত্র চলে যাবে। পরিণামে জীববৈচিত্র্য ও বাস্তুসংস্থানের কার্যক্রমে বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটবে।

বিভিন্ন গণমাধ্যম মতে, বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ সমুদ্রদূষণ ঘটে আলাস্কায় একটি জাহাজ দুর্ঘটায়। ঘটনার এক মাসের মধ্যে জাহাজের চালক জোসেফ হ্যাজেলউডকে মদ খেয়ে জাহাজ চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় ১৬০টি সামুদ্রিক ওটার এবং ১৩০০টি পাখির মৃত্যু ঘটে। জাহাজ এবং সমুদ্র থেকে মাত্র ৯ শতাংশ তেল রক্ষা করা সম্ভব হয়। এ ঘটনায় কোটি গ্যালন তেল সমুদ্রের পানিতে মিশে ১৬০০ বর্গমাইল পানি এবং ৪০০ মাইল উপকূলকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

তেল এতটা পুরু হয়ে বয়ে চলে যে, বাষ্পীভূত হতে পারে এমন পদার্থগুলো ডুবে না গিয়ে পানির সঙ্গে মিশে যায়। ফলে টলুইন এবং বেঞ্জিন জাতীয় ক্ষতিকারক হাইড্রোকার্বনগুলো খুব সহজেই খাদ্যশৃঙ্খলায় ঢুকে পড়ে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জুপ্লাঙ্কটন থেকে শুরু করে বড় বড় স্তন্যপায়ী জীবকে বিষাক্ত করে তোলে এবং এ দূষণের প্রভাব সুদূরপ্রসারী হয়। এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, তেলকে পরিষ্কার করার জন্য যে সব পরিশোধক ব্যবহার করা হয়, তাতেই ৯০ শতাংশ সামুদ্রিক প্রাণীর মৃত্যু হয়। ষাটের দশকে জাপানে পারদবহনকারী মাছ খেয়ে বহু লোকের প্যারালাইসিস হবার ঘটনা থেকে শুরু করে সমুদ্রে ভাসমান তেলে আগুন লেগে ক্ষয়ক্ষতির ঘটনাও রয়েছে। সমুদ্রের এই ভয়াবহ অবস্থার জন্য দায়ী শিল্পজাত বিষাক্ত দ্রব্য, গৃহস্থালির জঞ্জাল, কৃত্রিম পরিশোধক, সার ও কীটনাশক। তাছাড়া তেলজাত দূষণ তো রয়েছেই।

এছাড়া সমুদ্রদূষণের জন্য অন্যতম দায়ী হচ্ছে প্লাস্টিক। জাতিসংঘের মতে, বিশ্বব্যাপী কমপক্ষে ৮০০ প্রজাতি ধ্বংসাবশেষ দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এই ধ্বংসাবশেষের ৮০ শতাংশই প্লাস্টিকের। এটি অনুমান করা হয় যে, প্রতি বছর ১৩ মিলিয়ন মেট্রিক টন প্লাস্টিক সমুদ্রের মধ্যে জমা হয় যা প্রতি মিনিটে একটি আবর্জনাপূর্ণ ট্রাক বোঝাইয়ের সমতূল্য। সামুদ্রিক মাছ, পাখি, কচ্ছপ এবং স্তন্যপায়ী প্রাণীরা প্লাস্টিকের ধ্বংসাবশেষে জড়িয়ে পড়ে বা আক্রান্ত হতে পারে যার ফলে তাদের দমবন্ধ হয়ে যায় এবং অনাহারে থেকে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুমুখে পতিত হয়। সাম্প্রতিক এক গবেষণা অনুযায়ী, সামুদ্রিক পাখিদের প্রায় ৯০ শতাংশ সরাসরি প্লাস্টিক দূষণের শিকার।

পৃথিবীর প্রাণিকুলের বসবাসযোগ্য ৯০ শতাংশ এলাকাজুড়ে রয়েছে মহাসাগর। এই সুবিশাল স্থানে জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে খারাপ প্রভাবগুলো ঠেকানোর জন্য বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আর গড় তাপমাত্রার বৃদ্ধি সর্বোচ্চ দুই ডিগ্রিতে সীমিত রাখার ব্যাপারে বিভিন্ন দেশের সরকার কে এক হয়ে কাজ করতে হবে। বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ না করলে মহাসাগরগুলোয় বসবাসকারী প্রাণী ও উদ্ভিদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যাবে। সামুদ্রিক মাছ তুলনামূলক ঠান্ডা পানির খোঁজ করতে বাধ্য হবে। ধ্বংস হবে মূল্যবান প্রবালদ্বীপগুলো। সায়েন্স সাময়িকীতে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক এক গবেষণায় এসব সতর্কবার্তা দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

পৃথিবীজুড়ে পেট্রলিয়াম উৎপাদন বেড়ে চলেছে। তাই সমুদ্রপথে তার আমদানি-রফতানির জন্য বড় বড় পাইপলাইন ভেঙে যাওয়ার ঘটনাও অনেক শোনা যায়। কোনো কোনো সময় ভূতাত্তি¡ক কারণে উপকূলবর্তী তেলের খনি থেকে তেল বের হতে পারে। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রতি বছর প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন তেল শুধুমাত্র পরিবহনের সময় সমুদ্রে পড়ে। এছাড়া উপকূলবর্তী তেলের খনি অথবা এই ধরনের উৎপাদন থেকে পড়ে আরো ১৫ লাখ টন।

স্বাভাবিক এবং অস্বাভাবিক দু’ভাবে হাইড্রোকার্বন আসে। ভূগর্ভস্থ স্তর থেকে চুঁইয়ে চুঁইয়ে আসা হাইড্রোকার্বন স্বাভাবিক। আর পরিশোধন, শিল্প, আমদানি-রফতানি, ট্যাঙ্কার ডুবে উপকূলবর্তী তেল খনি ইত্যাদি অস্বাভাবিক। তেল ছাড়া সমুদ্রে অন্য খনিজ সম্পদের মধ্যে অন্যতম হলো বালি, গ্র্যাভেল, ভারী খনিজ এবং গভীর সমুদ্রের ম্যাঙ্গানিজ নুড়ি। উপকূলের কাছে বালি, গ্র্যাভেল ইত্যাদি ড্রেজিং এবং পাম্পিংয়ের ফলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সামুদ্রিক প্রাণী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রখ্যাত সমুদ্র বিজ্ঞানী ডা. জ্যাকুয়েস পিকার্ড-এর মতে, বর্তমান দূষণের হার বজায় থাকলে অদূর ভবিষ্যতে পৃথিবীর সমুদ্রে কোনো প্রাণীর অস্তিত্বই থাকবে না। আমেরিকার ‘ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্স’ এর মতে, বায়ুমন্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও অন্যান্য গ্রিন হাউজ গ্যাসের দ্বিগুণ বৃদ্ধির ফলে বর্তমান শতকে পৃথিবীর ভূ-পৃষ্ঠের তাপমাত্রা গড়ে ১.৫ ডিগ্রি থেকে ৪.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বৃদ্ধি পাবে। হিসেব করে বলা হয়েছে, গ্রিন হাউজ গ্যাসের প্রভাব না থাকলে আজ পৃথিবীর তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড কম হতো। হিমবাহ গবেষকরা মনে করেন, তাপ বৃদ্ধির ফলে আগামী কয়েক শতকে পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকার বরফের চাদর গলে গিয়ে সমুদ্রের উচ্চতা ৫ থেকে ৭ মিটার বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই হাজার হাজার বর্গমাইল এলাকায় জমি নষ্ট হবে, ঝড় ও ঘূর্ণিবাতাসের ক্ষয়ক্ষতি বেড়ে যাবে, উপকূলের জলা অঞ্চলগুলোর লবণাক্ততা বৃদ্ধির ফলে সামুদ্রিক প্রাণীরা বিপদে পড়বে। পানীয় জলের অসুবিধা দেখা দেবে মারাত্মকভাবে।

ভূতাত্তি¡ক এবং আবহাওয়াজনিত কারণগুলোই সমুদ্রপৃষ্ঠের ওঠানামাকে প্রভাবান্বিত করে। সমুদ্রের তলদেশে অবস্থিত পর্বতমালার ভাঙাগড়ার ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা অনেকটাই নেমে গিয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। যুগ যুগ ধরে পৃথিবীর বুকে ‘ফসিল জ্বালানি’ হিসেবে পরিচিত কার্বনকে আজকের মানুষ আবার বায়ুমন্ডলে ফিরিয়ে দিয়ে স্বাভাবিক ক্রমবিকাশের গতিকে উল্টোদিকে প্রবাহিত করছে।

ইউনেস্কোর রিপোর্টে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ নাহলেও এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক এবং স্থানীয় এই দুই স্তরেই এর মোকাবিলা করার প্রয়োজন রয়েছে। ১৯৮৭ সালে পৃথিবীর মানুষ মোট ৫.৭ গিগা টন এক গিগা টন হল ১০০ কোটি টনের সমান কার্বন বাতাসে ছেড়েছে। জাতিসংঘের একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, এ ব্যাপারে শিল্পোন্নত দেশগুলোকে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। কারণ তারাই এই সমস্যার সূত্রপাত ঘটিয়েছে। মানুষের তৈরি কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিক্ষেপের তিন-চতুর্থাংশই তাদের।

নিক্ষিপ্ত বিষাক্ত পদার্থের মধ্যে তামা, নিকেল, কোবাল্ট এবং ম্যাঙ্গানিজ খনন সাধারণত পরিবেশের পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক। পোকা-মাকড় মারার ওষুধ, ডিডিটি এবং বিভিন্ন ধরনের ইনস্যুলেশনে ব্যবহৃত ক্লোরিন জাতীয় উপাদান সমুদ্রের পক্ষে ক্ষতিকারক। ডিডিটি ইত্যাদি সমস্ত পৃথিবীতে ফসলের ক্ষতি রোধ করার জন্য, পোকা-মাকড়, মাছি মারার জন্য প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার করা হয়। বৃষ্টির পানি ধুয়ে শেষ পর্যন্ত গিয়ে জমা হয় সমুদ্রে। কারণ বাতাসে পারমাণবিক পরীক্ষার ফলে যে তেজস্ক্রিয়তা ছড়ায় তার অনেকটা সমুদ্রে মিশে যায়।

আমাদের পার্শ্ববর্তী জনবহুল দেশ ভারতও বিপুল পরিমাণে আবর্জনা সমুদ্রে নিক্ষেপ করছে। আরব সাগরে রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের তৈলবাহী ট্যাঙ্কারদের যাত্রাপথ। ভারতের চারপাশের সাগরে প্রচুর পরিমাণে আবর্জনা নিক্ষিপ্ত হয়ে সমুদ্রকে দূষিত করছে। অনেকের মতে, যা করা দরকার তা হলো, সমুদ্রদূষণ রোধে সক্ষম এক শক্তিশালী কেন্দ্রীয় কমিটি যার নিষেধাজ্ঞা সব দেশ শুনবে এবং কার্যকর করবে।

আমাদের একমাত্র সমুদ্র হলো বঙ্গোপসাগর। আমাদের সকল নদীর যাত্রাপথ গিয়ে শেষ হয়েছে সমুদ্রে। এই নদীগুলোর মাধ্যমে প্রবাহমান বর্জ্য সব সাগরে জমা হয়। অথচ এই সাগর আমাদের মৎস্য চাহিদার অনেকাংশই পূরণ করে। অন্যদিকে বাংলাদেশের সমগ্র বহিঃবাণিজ্য বঙ্গোপসাগরের উপর নির্ভরশীল। তাই এ মহামূল্যবান সম্পদকে আমাদের রক্ষা না করার বিকল্প নেই। এজন্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আইন, সামুদ্রিক পরিবহন ও পর্যটন এবং সমুদ্রসম্পদ আইনের কঠোর বাস্তবায়ন করতে হবে।
লেখক: শিক্ষার্থী, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ত্রিশাল, ময়মনসিংহ

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Jack Ali ২৬ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:৩২ পিএম says : 0
We human being is custodian of the this Earth.. Muslim have obligatory duty to protect the Eco system. The the way we are destroying our Eco System in the Day of Qiyammah Eco System will complain to Allah that your people have destroyed me than what answer we will give to Allah. Everything's belongs to Allah even our body belongs to Allah so we have to follow the order of Allah in every foot steps if not Iblees Shaitan will destroy us in every way.. and Iblees is successful 100% because we don't follow Qur'an and Sunnah we follow the the Law of Iblees Shaitan: Only Allah Law is the solutions,, O'Muslim wake up and fight the Iblees and establish the Law of Allah, so that all the crime will stop because Allah's Mercy will descend on our country. Allah warned in the Qur'an several times regarding Iblees Satan who will take you to Jahannam. Surah Al-Baqarah: Ayat: 208: O you who believe! Enter perfectly in Islam [by obeying all the rules and regulations of the Islamic religion] and follow not the footsteps of Shaitan [IBLEES]. Verily! He is to you a plain enemy
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন