বরিশাল, পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার ৪টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ কাল। ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেও সব প্রার্থীদের নির্বিঘ্নে প্রচারণা নিশ্চিত হয়নি। শুরু থেকেই এ অভিযোগের আঙুল নির্বাচন কমিশন ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের দিকে উঠলেও বিষয়টি নিয়ে গুরুত্ব না দেয়ার কথা বলেছেন বিরোধী দলীয় মেয়র প্রার্থীরা। কোন কোন মেয়র প্রার্থী নিজ বাসা থেকে বের হতে না পারার কথাও জানিয়েছেন।
বিধি অনুযায়ী গতকাল মধ্যরাত থেকে বরিশালের উজিরপুর ও বাকেরগঞ্জ, পটুয়াখালীর কুয়াকাটা এবং বরগুনার বেতাগী পৌরসভার নির্বাচনী প্রচারণা বন্ধ হয়ে গেছে। কাল এসব পৌরসভার ৩৬টি কেন্দ্রের ১৬৭টি কক্ষেই প্রথমবারের মত ইভিএম মেশিনে ভোটগ্রহণ হবে। নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে বিপুল সংখ্যক সশস্ত্র ও নিরস্ত্র পুলিশ, আনসার ও বিজিবি মোতায়েন করা হচ্ছে। গতকাল এসব পৌর এলাকায় বিজিবি পৌছেছে।
দক্ষিণাঞ্চলের এ ৪ পৌরসভায় মেয়র পদে ১৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ছাড়াও ইসলামী আন্দোলন দলীয় প্রতীকে প্রতিদ্ব›িদ্বতায় থাকলেও প্রচারণায় ক্ষমতাসীন দলের বাইরে কেউ খুব একটা লক্ষণীয় ছিল না। কুয়াকাটা পৌরসভায় ১ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন এখনো। ইতোমধ্যে বরিশালের উজিরপুর পৌরসভার ৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডে এবং বাকেরগঞ্জ পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এরা সকলেই সরকারি দল সমর্থিত প্রার্থী ছিলেন।
৯ হাজার ৪৯৪ ভোটারের বেতাগী পৌরসভায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও ইসলামী আন্দোলনের ৩ মেয়র প্রার্থী ও ৯টি ওয়ার্ডে ২৬ জন কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। এখানে মহিলা ভোটারের সংখ্যা ৪ হাজার ৮২৫ জন। ৩টি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন।
৮ হাজার ১২২ ভোটারের কুয়াকাটা পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, ইসলামী আন্দোলন ও স্বতন্ত্র এক প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। এ পৌরসভায় ৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ৩১ জন। ৩ হাজার ৯৪৫ জন মহিলা ভোটারের এ পৌরসভায় সংরক্ষিত ৩টি আসনে প্রার্থী ৮ জন।
৭ হাজার ৬৩৪ মহিলা ভোটারসহ বাকেরগঞ্জ পৌরসভার মোট ভোটার ১৫ হাজার ৩০৪ জন। এখানে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী রয়েছেন। এ পৌরসভার ৮টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ২৫ জন। আর সংরক্ষিত ৩টি আসনে মহিলা প্রার্থী ৮ জন।
১১ হাজার ৯২৪ ভোটারের উজিরপুর পৌরসভায় নারী ভোটার সংখ্যা ৫ হাজার ৯৩৬। মেয়র পদে লড়ছেন আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও ইসলামী আন্দোলনের ৩ প্রার্থী। ৯টি ওয়ার্ডের এ পৌরসভায় কাউন্সিলর পদে ২৪ এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৮ জন প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন।
এসব পৌরসভায় প্রথমবারের মত ইভিএমে ভোটগ্রহণ হলেও ভোটাররা কতটা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোট দিতে পারবেন তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন নির্বাচনী পর্যবেক্ষকরা। ৪ পৌরসভার ৩৬টি কেন্দ্রের প্রায় সবগুলোই কমবেশি ঝুঁকিপূর্ণ বলে স্থানীয়রা জানালেও পুলিশ প্রশাসন থেকে তা মনে করা হচ্ছে না। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সব কেন্দ্রে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেছে বরিশাল রেঞ্জ পুলিশের দায়িত্বশীল সূত্র।
তবে একাধিক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বিগত নির্বাচনগুলোর মত দক্ষিণাঞ্চলের ৪ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ হবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। নির্বাচনী প্রচারণায় কোন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ছিল না বলেও জানান তারা।