লক্ষীপুরের রামগতির মেঘনানদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। ফলে ভাঙনের তীব্রতা আরো বেড়ে শুষ্ক মৌসুমেও বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি, মানুষের ঘরবাড়ি ও বিস্তৃত জনপদ। হুমকিতে রামগতি উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স। এতে স্থানীয় মানুষের মাঝে চাপাক্ষোভ বিরাজ করেছে। একদিকে নদী ভাঙন, অন্যদিকে বালু উত্তোলন। এ যেন মরার উপর খাড়ার গা।
সরেজমিনে দেখা যায়, রামগতি পৌরসভার উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স সংলগ্ন পাঠোওয়ারীর মোড় তেমুহনী এলাকা নামক স্থানে মেঘনানদী থেকে ৪টি ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে প্রতিদিন লাখ লাখ ফুট বালু তুলছেন জনৈক শাহীন, এরশাদ, সুমন ও মাইন উদ্দিন। স্থানীয় এই প্রভাবশালীরা দলের নেতা ও প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে মাসের পর মাস বালু তুলছেন নদীর পাড় থেকে।
এতে নদীর আশপাশ ভেঙে দ্রুত বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি। বালুর স্তূপ থেকে পানি গড়ে ফাটল ধরে ভাঙছে নদী। এছাড়া বাতাসে বালু উড়ে আলেকজান্ডার-সোনাপুর সড়কের যাতায়াতকারী গণপরিবহন,এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা পড়ছে চরম বিপাকে। এদিকে রামগতি উপজেলার মেঘনানদীর ভাঙনরোধে ২শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্পের কাজ শেষ হতে না হতেই এই সব বালু সন্ত্রাসীরা বেপোরয়া হয়ে উঠে। ওই প্রকল্প সংলগ্ন রামগতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে থেকে দেদারছে তোলা হচ্ছে বালু। বালু উত্তোলনের ফলে ভাঙন আরো তীব্র আকার ধারণ করবে বলে মনে করেন স্থানীয়রা। ফলে আতঙ্কে রয়েছে নদীপাড়ের হাজারো মানুষ। স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলা প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক দলের নেতার আশ্রয়ে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা দেদারসে বালু উত্তোলন করলেও তারা দেখেও যেন না দেখার ভান ধরেন। এতে এলাকার বড় ধরণের ক্ষতির কাজ করছে তারা। যার ফলে সরকারের নদী ভাঙনরোধ প্রকল্পের কোটি কোটি টাকা ভেস্তে যাচ্ছে। স্থানীয়রা আরো জানান, রাতের আঁধারে মেঘনা নদীর মাঝ থেকে জাহাজ ভর্তি করে বালু তোলে সকালে নদীরপাড়ে তা নামানো হচ্ছে। স্থানীয় আলী আকবর, মামুনুর রশিদ, আলী মাঝি, কোরবান আলীসহ অসংখ্য ভুক্তভোগীরা জানান, সরকার নদী ভাঙনরোধে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
অন্যদিকে, বালু সন্ত্রাসীদের বালু উত্তোলনের ফলে তাদের জায়গাজমি ও বসতভিটি একের পর এক নদীতে বিলীন হচ্ছে। প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছেন তারা। প্রশাসনের দুর্বল নজরদারিতে বালু উত্তোলন হচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয়রা। এবিষয়ে অভিযুক্ত বালু উত্তোলনকারী শামীম বলেন, চাঁদপুর ও মেঘনানদীর মাঝ থেকে বালু এনে আমরা বৈধ ভাবেই ব্যবসা করি। স্থানীয় প্রশাসনও সরকারের নানা উন্নয়ন মুলক কাজে আমাদের থেকে বালু নিয়ে থাকে।
রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল মোমিন বলেন, যারা মেঘনা নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু এনে ক্রয় বিক্রয় করছে, তা সম্পুর্ন অবৈধ। নদী ভাঙন কবলিত এলাকা, এখানে নতুন বাঁধ হয়েছে।এতে বাঁধের ব্যাপক ক্ষতি হবে। দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন