আমৃত্যু সাজাপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে যাকাত তহবিলের অর্থ আত্মসাত মামলার পরবর্তী শুনানি ১১ জানুয়ারি। গতকাল সোমবার এ তারিখ পুননির্ধারণ করেন ঢাকার অস্থায়ী বিশেষ জজ আদালত-১ এর বিচারক সৈয়দা হোসনে আরা। একই সঙ্গে এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার শুনানিকালে সাঈদীর দুই ছেলে শামীম সাঈদী ও সেজ ছেলে মাসুদ সাঈদীকে আদালতে অবস্থানের অনুমোদন দেয়া হয়। পিতার পক্ষে তারা মামলাটি তদারক করছেন। আদালত মামলা সংশ্লিষ্ট সকল নথি আসামিপক্ষের আইনজীবীদের সরবরাহ করার জন্যও দুদককে নির্দেশ দেন আদালত। রাজধানীর বকশিবাজারস্থ আলীয়া মাদরাসা সংলগ্ন মাঠে এ আদালতের বিচার কার্যক্রম চলছে। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল। মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আব্দুস সোবহান তরফদার, মো. মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন, মতিউর রহমান আকন্দ এবং অ্যাডভোকেট রোকন রেজা।
অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ পরে সাংবাদিকদের বলেন, সোমবার চার্জ গঠনের শুনানির ধার্য দিনে সাঈদীর পক্ষের আইনজীবীদের কাছে সাক্ষীদের (১৬১) বিষয়ে ডকুমেন্ট দেয়ার আর্জি জানানো হয়। আবেদন গ্রহণ করে সব নথিপত্র সরবরাহ করার জন্যে দুদককে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া মামলার তদবিরকারক ওনার বড় ছেলে শামীম সাঈদী ও সেজ ছেলে মাসুদ সাঈদীকে আদালতে প্রবেশ করতে দেয়া হতো না। তাদের দুইজনকে আদালতে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। তিনি জানান, সাঈদীর বয়স ৮২ বছর। তার হাটতে চলতে সমস্যা হয়। তাই ওনাকে গাড়িতে করে নিজ খরচে আদালতে আসার অনুমতি দেয়ার জন্য আমরা আবেদন করেছিলাম। আদালত তাকে মাইক্রোবাসে করে নিজ খরচে আসার অনুমতি দিয়েছেন।
এ মামলায় দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ মামলাটি আসামি ৬ জন। অন্যরা হলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ লুৎফুল হক, মসজিদ কাউন্সিল ফর কমিউনিটি অ্যাডভান্সমেন্টের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, বন্ধুজন পরিষদের প্রধান সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ ইউনুস,ইসলামী সমাজ কল্যাণ কেন্দ্রের সাবেক সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদ কাউন্সিলের তৎকালিন সহকারী পরিচালক মো.আব্দুল হক।
আসামিদের মধ্যে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী কারাগারে আছেন। আবুল কালাম আজাদ এবং আব্দুল হক পলাতক রয়েছেন। অপর তিন আসামি জামিনে রয়েছেন।
প্রসঙ্গত: ইফার যাকাত তহবিলের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) আইয়ুব আলী চৌধুরী ২০১০ সালের ২৪ মে শেরেবাংলা নগর থানায় এ মামলা করেন। তদন্ত শেষে দুদকের সহকারী পরিচালক ওয়াজেদ আলী গাজী ২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল মামলাটির চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটে ২কোটি ২৭ লাখ ৪০ হাজার ১২০ টাকা আয় গোপন করে তার ওপর প্রযোজ্য ৫৬ লাখ ৪৬ হাজার ৮১২ টাকা কর ফাঁকির অভিযোগে ২০১১ সালের ১৯ আগস্ট মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। পরের বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর এই মামলায় অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ৯ বছর ধরে মামলাটি বিচারিক প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন