নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য প্রবীণ রাজনীতিক মোন্তাজ উদ্দিন ভূইয়াকে দল থেকে বহিষ্কারের ঘটনা নিয়ে নরসিংদীর আওয়ামী রাজনীতিতে আবারো অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। সর্বত্রই চলছে নিন্দাবাদ, জিন্দাবাদ ও মুর্দাবাদের ঝড়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে সকল স্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যেই চলছে বিভিন্নমূখী সমালোচনা।
গত সোমবার জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কাজী মোহাম্মদ আলী স্বাক্ষরিত একটি বহিষ্কারাদেশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হবার পর আওয়ামী রাজনৈতিক অঙ্গনে এ অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে। ওই পত্রে বলা হয় গত ২৪ ডিসেম্বর নরসিংদী সদর আসনের এমপি মো. নজরুল ইসলাম হিরু আহবানকৃত এক প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তৃতা কালে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোন্তাজ উদ্দিন ভূইয়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে টাকা দিয়ে নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে কর্নেল হিরুকে পদচ্যুত করেছে বলে যে মন্তব্য করেছেন তাতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। তার এই ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তৃতা দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হুতাশার সৃষ্টি হয়েছে বিধায় তাকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে এবং কেন তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না মর্মে একটি কারণ দর্শাও নোটিশ জারি করে ১৫ দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
মোন্তাজ উদ্দিন ভূইয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি শুনেছি আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কোন বহিষ্কারাদেশ পাইনি। বহিষ্কারাদেশ আমাকে না দিয়ে তারা কিভাবে ফেসবুকে দেয়। তাছাড়া জেলা কমিটির কোনো সদস্যকে বহিষ্কার করার ক্ষমতা জেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের নেই। তিনি আওয়ামী লীগের দলীয় গঠনতন্ত্রকে অবমাননা করে একক ক্ষমতা বলে এই বিধিবহিভর্‚ত কাজটি করেছেন। তাকে প্রভাবিত করেছে নরসিংদী শহরের একজন আ.লীগ নেতা। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কোন সদস্য গঠনতন্ত্রবিরোধী কোন কাজ করলে কার্যনির্বাহী কমিটির সভা ডেকে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে তারপর তাকে শোকজ করতে পারবেন। শোকজের জবাব গ্রহণযোগ্য না হলে তাকে বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটিতে প্রস্তাব পেশ করতে পারবেন। কোন সদস্যকে বহিষ্কার করার ক্ষমতা ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের নেই। তিনি বলেন, ২৪ ডিসেম্বরের প্রতিবাদ সভায় আমি বলেছি মেয়র কামরুলের লোকজন প্রচার করছে যে, তারা নাকি টাকা দিয়ে কমিটি সভাপতির পদ থেকে কর্নেল হিরু এমপিকে পদচ্যুত করিয়েছেন। আমার এই কথাকে বক্রভাবে উপস্থাপন করে দলীয় প্রতিপক্ষরা অপপ্রচার চালাচ্ছে।
লেনিন নামে একজন আওয়ামী লীগ কর্মী জানিয়েছেন, নরসিংদীতে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সূতিকাগার হচ্ছে ভ‚ইয়া বাড়ি। সে বাড়ির সন্তান হচ্ছেন মোন্তাজ উদ্দিন ভূঁইয়া। যারা জন্মের পর থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে আসছে। আজকের জেলা আওয়ামী লীগ তাদের রক্ত-গামে গড়ে ওঠা আওয়ামী লীগ। অথচ যারা জীবনে কখনো আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেনি তারা আওয়ামী লীগে ঢুকে এখন মোন্তাজ উদ্দীন ভূঁইয়ার মতো ত্যাগী নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করার দুঃসাহস দেখাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, এই বহিষ্কারের পেছনে আওয়ামী লীগের বিষফোঁড়া একজন সন্ত্রাসী নেতার প্রভাব রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন