নাটোর জেলা সংবাদদাতা : নাটোর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস অবশেষে দালালমুক্ত করা হয়েছে। অধিকাংশ গ্রাহক জানায়, কোন ধরনের হয়রানি ছাড়াই আঞ্চলিক এই অফিস থেকে দ্রুততম সময়ে তারা এখন পাসপোর্ট পাচ্ছেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত গত মাসে অভিযান চালিয়ে অফিস চত্বরের বাইরে থেকে ৪ দালালকে আটক এবং চলতি সপ্তাহে শহরের কানাইখালী এলাকা থেকে পাসপোর্ট গ্রহীতার কাছে থেকে অর্থ নেয়ার অভিযোগে পাসপোর্ট অফিসের এক সিকিউরিটি গার্ডকে কারাগারে পাঠানোর পর এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল (বুধবার) সরেজমিন পাসপোর্ট অফিসে গেলে পাসপোর্ট গ্রহীতাদের তেমন ভিড় লক্ষ্য করা যায়নি। যারা অফিসে এসেছেন তারাও দ্রুত কাজ সেরে চলে যান। পাসপোর্ট নিতে আসা শহরের বড়গাছা এলাকার ব্যবসায়ী কাজী হাসিনুর রহমান জুয়েল জানান, তিনি স্ত্রী ও দুই ছেলে মেয়েসহ পসপোর্ট করতে এসেছেন। তিনি ব্যাংকের মাধ্যমে ৩ হাজার ৪৫০ টাকা জমা দিয়েছেন। কোন দালাল চক্র তার চোখে পড়েনি। এছাড়া অতিরিক্ত কোন অর্থ নেয়া হয়নি তার কাছে থেকে। অফিসে আসার মাত্র আধাঘণ্টার মধ্যে কাজ শেষে ফিরে যাচ্ছেন। একই কথা বললেন, দক্ষিণ পটুয়াপাড়া এলাকার আখের আলীর ছেলে মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, নাটোর অফিসে এখন দালাল চোখে পড়ে না। দ্রুতই কাজ সারতে পারছেন। এ সময় কয়েকজন জানান, ফরমে উল্লেখকৃত কিছু তথ্য ভুলের কারণে কিছুটা সময় বেশি লেগেছে। এ জন্য বাড়তি কোন টাকা লাগেনি। সংশোধনের জন্য দালাল খুঁজেও পাওয়া যায়নি। নাটোর আঞ্চলিক অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ছয় মাসে ৫ হাজার ৩৬১টি নতুন আবেদন জমা হয়। ওই নতুন আবেদনসহ পাসপোর্ট বিতরণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৯৬টি। এছাড়া চলতি মাসের ২১ তারিখ পর্যন্ত আবেদন পড়ে এক হাজার ৫০৮টি। এর মধ্যে পাসপোর্ট বিতরণ করা হয়েছে এক হাজার ৩৭৭টি। নাটোর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নায়িরুজ্জামান জানান, নাটোর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস এখন দালালমুক্ত। নাটোর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-সহকারী পরিচালক মোঃ গোলাম ইয়াছিন জানান, জরুরী ভিত্তিতে পাসপোর্ট গ্রহণের জন্য গ্রাহকদের কাছে থেকে ৬ হাজার ৯০০ টাকা এবং দেরিতে নেয়ার জন্য ৩ হাজার ৪৫০ টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে জমা নেয়া হয়। এর অতিরিক্ত কোন টাকা নেয়া হয় না। কারো বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতোমধ্যে এক আনসার সদস্য এই অপরাধে চাকরিচ্যুত হয়েছে। প্রথম দিকে অফিস চত্বরের বাইরের কিছু দালাল চক্রের উপদ্রব ছিল। ভ্রাম্যমাণ আদালতসহ আইন-শৃংখলা বাহিনীর সাদা পোশাকধারী সদস্যদের তৎপরতার কারণে দালালরা অফিস এলাকা থেকে সটকে পড়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন