রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

করোনাভাইরাস বিবর্তনে বাড়ছে সংক্রমণ ক্ষমতা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

করোনাভাইরাসের পরিবর্তিত প্রজাতিগুলো মূল করোনার বৈশিষ্ট্যকে বদলে দিয়ে বিবর্তিত হতে শুরু করেছে। গেল ডিসেম্বরে ব্রিটেনে কোভিড-১৯ জিনোমিক্স ইউকে কনসোর্টিয়াম (কগ-ইউকে) নামে পরিচিত একদল গবেষক করোনাভাইরাসের পরিবর্তিত ডিএনএ ক্রম বি.১.১.৭ সনাক্ত ও প্রকাশ করেছেন এবং ভাইরাস হুমকির বিষয়ে অধ্যয়নকারী নার্ভট্যাগ নামক একটি গ্রুপ সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে যে, করোনাভাইরাসের এ সংস্করণটি ব্রিটেনে ঘটা পূর্বের করোনা সংক্রমণের চেয়ে ৬৭-৭৫ শতাংশ বেশি সংক্রামক। ইতোমধ্যে ৫০১.ভি২ নামক করোনাভাইরাসের আরও একটি সংস্ককরণকে দক্ষিণ আফ্রিকার পশ্চিম কেপ প্রদেশের নতুন কোভিড-১৯ সংক্রমণের জন্য প্রায় ৯০ শতাংশ দায়ী করা হয়েছে।

ইতোমধ্যে অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, জাপান এবং সুইজারল্যান্ড থেকেও বিচ্ছিন্ন সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ব্রিটেনে সনাক্ত নতুন করোনাভাইরাসটি ব্রিটেনসহ বিভিন্ন স্থান থেকে দ্রত ছড়াতে থাকবে। পরিপ্রেক্ষিতে, ব্রিটেন গত ১৯ ডিসেম্বর থেকে করোনা বিধিনিষেধগুলো আরো কড়া দিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকাতে লাখ লাখ মানুষ নতুন করে সংক্রমিত হওয়ার প্রেক্ষিতে গত ২৮ ডিসেম্বর থেকে রাতের কারফিউ দুই ঘণ্টা বাড়িয়ে দিয়েছে এবং মদ বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। অন্য দেশগুলো অভ্যন্তরীণ এবং ব্রিটেন ও দক্ষিণ আফ্রিকায় যেকোন ভ্রমণ আরও জোরালোভাবে নিরুৎসাহিত করেছে।

বি.১.১.৭ এর প্রথম নমুনা গত ২০ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ-পূর্ব থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল। দ্বিতীয়টি পরের দিনই লন্ডনে পাওয়া যায়। কয়েক সপ্তাহ পর নভেম্বরের শুরুতে লন্ডনে বি.১.১.৭ থেকে ২৮ শতাংশ নতুন সংক্রমণ ঘটে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সংক্রমণ বেড়ে ৬২ শতাংশে পৌঁছে। সম্ভবত এখন এটি ৯০ শতাংশের উপরে। করোনার অন্যতম সংস্করণ ৫০১.ভি২’র একই ইতিহাস রয়েছে। এটি ইস্টার্ন কেপে অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ শুরু করেছিল এবং পরে অন্যান্য উপক‚লীয় প্রদেশগুলিতে ছড়িয়ে পড়েছে। কগ-ইউকে বিজ্ঞানীরা তাত্তি¡কভাবে বলছেন যে, বি.১.১.৭ এর বিবর্তনটি বিপুল জনসংখ্যার পরিবর্তে একক মানুষের মধ্যে ঘটছে। তারা পর্যবেক্ষণ করেছেন যে, কিছু লোক দীর্ঘস্থায়ীভাবে কোভিড-১৯ সংক্রমণ বহন করে, কারণ তাদের প্রতিরোধ ব্যবস্থা সঠিকভাবে কাজ করে না এবং তাই সংক্রমণটি তাদের শরীর থেকে সম্পূর্ণভাবে নিষ্কাশিত হতে পারে না। এরাই সম্ভবত করোনাভাইরাসের পরিবর্তিত সংস্করণগুলোর ইনকিউবেটরে পরিণত হয়েছেন।

উভয়ই প্রকার করোনাভাইরাসই বিবর্তনবাদী জীববিজ্ঞানীদের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী নতুন ধরনের প্যাথোজেনের দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে, যেগুলো আরও মারাত্মক পর্যায়ের সংক্রামক। তবে তারা এটাও বলেছেন যে, এসব করোনাভাইরাস মূল করোনাভাইরাসের থেকে বেশি প্রাণঘাতী নয়। বিজ্ঞানীদের তত্ত্বটি বলছে, দুর্বল ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অভাব মানব শরীরে ভাইরাসটির উপর প্রতিরাধ চাপ কমিয়ে দেয়। ফলে, ভাইরাসটি নিজের বৈশিষ্ট্যকে পরিবর্তনের সুযোগ পায়। তবে, প্রায়শই করোনা চিকিৎসায় ব্যবহৃত কোভিড রোগীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা করোনার অ্যান্টিবডিতে সমৃদ্ধ কোভালেসেন্ট প্লাজমা সিরাম করোনাভাইরাসের পরিবর্তিত সংস্করণের চিকিৎসায় কার্যকর ভ‚মিকা রাখতে পারে। সূত্র : দ্য ইকোনোমিস্ট।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন