শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

টিকা নিয়ে ধোঁয়াশা

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া প্রথম থেকেই ভারতে উৎপাদিত টিকা বাংলাদেশ পাবে : হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা এখন সরকারকে কূটনৈতিক চাতুর্য্যরে সাথে সিদ্ধান্ত নিতে হবে : ডা. আতিকুল হক

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০২ এএম

এ যেন বিনা মেঘে বজ্রপাত। রক্তের সম্পর্ক, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক, রাখিবন্ধনের সম্পর্কের পরও ভারত চুক্তি করে বাংলাদেশকে করোনার ভ্যাকসিন দিচ্ছে না! ভ্যাকসিন কিনতে বাংলাদেশ যখন ৬শ’ কোটি টাকা পাঠিয়েছে; তখন আচমকা এ খবর দেয়া হয়। প্রচার করা হয় ভারতের সব নাগরিককে ভ্যাকসিন না দেয়া পর্যন্ত অন্য দেশে পাঠানো যাবে না। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই বলছেন, ভারতের মুখোশ খুলে গেছে। কেউ কেউ ভারতকে বিশ্বাসঘাতক হিসেবে অবিহিত করছেন। কেউ বলছেন, ভারত যার বন্ধু তার শত্রুর প্রয়োজন পড়ে না। বাংলাদেশ ও ভারতের মিডিয়াগুলোতে এ নিয়ে ফলাও করে খবর প্রচার হচ্ছে। তবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ভারত করোনা ভ্যাকসিন বাংলাদেশে দেয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বলে জানতে পারি। এরপর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা জানিয়েছে তারা এ ব্যাপারে কিছু জানে না। কী হয়েছে তারা জানার চেষ্টা করছে। আমরা এ নিয়ে ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছি। তবে ভারত যদি নিষেধাজ্ঞা দেয়ও তাহলেও তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের যে উষ্ণ সম্পর্ক, তাতে সমস্যা হবে না।

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেছেন, প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশের টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই। ভারতে উৎপাদিত টিকা বাংলাদেশ প্রথম থেকেই পাবে। সেরাম-প্রধানের যে বক্তব্য সংবাদমাধ্যমে এসেছে, তা আমাদের নজরে এসেছে। এতে প্রতিবেশী বাংলাদেশের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। বাংলাদেশে টিকা পাঠানো বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপনার আওতায় হবে না। পরে ব্যাপকভিত্তিক উৎপাদন নিশ্চিত করা গেলে বাণিজ্যিক চুক্তির আওতায় সরবরাহ করা হবে। তবে প্রতিবেশী বাংলাদেশের জনগণ প্রথম থেকেই টিকা পাবে। বাংলাদেশ ও ভারতের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা আশাবাদের কথা শোনালেও বাংলাদেশের ভ্যাকসিন পাওয়া নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। দেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানী, ডাক্তার এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ কাটছে না। কারণ নানা ইস্যুতে ভারত বন্ধুত্বে কথা বললেও বাস্তবে করে উল্টোটা।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. আতিকুল হক বলেছেন, ভ্যাকসিন পেতে এখন বাংলাদেশ সরকারকে কূটনৈতিক চাতুর্য্যরে সাথে কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আরো অন্য কোনো টিকা দানকারী সংস্থা, যেমন অ্যাস্ট্রাজেনেকার সাথে বাংলাদেশ সরকার যোগাযোগ করতে পারে। গোভি কোভিক্স-এর সাথেও যোগাযোগ করে কত দ্রুত পাওয়া সম্ভব সে ব্যাপারে আলাপ করে দেখতে পারে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফর উল্লাহ চৌধুরী বলছেন, ভ্যাকসিন নিয়ে এক বড় প্রতারণার শিকার হয়েছে বাংলাদেশ।

ভারতের ভ্যাকসিন না দেয়ার খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে প্রচার হওয়ায় সরকার বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে গেছে। তবে বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ কিংকর্তব্যবিমূঢ়। ভ্যাকসিন নিয়ে চীনের সঙ্গে করা চুক্তি ফাইলবন্দি রেখে ভারতের মাধ্যমে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন কেনার চুক্তি করায় বৈশ্বিক মহামারি করোনার ভ্যাকসিন বাংলাদেশের পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে গেছে। অথচ বিশ্বের বহু দেশে করোনাভাইরাসের টিকা প্রয়োগ শুরু হয়ে গেছে। এমনকি গরিব কিছু দেশও ভ্যাকসিন পাওয়া নিশ্চিত করে ফেলেছে।
প্রশ্ন হলো এ কেমন বন্ধুত্ব? টাকা অগ্রিম দেয়ার পরও বাংলাদেশ কি সত্যিই ভারত থেকে ভ্যাকসিন পাবে?
ভারত দীর্ঘ ৪৯ বছরে সত্যিই কি বাংলাদেশের বন্ধু হতে পেরেছে? দেশের এক শ্রেণির বুদ্ধিজীবী থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন ভারতের বন্ধুত্ব নিয়ে গৌরাম্বিত। কথায় কথায় তারা চীন-পাকিস্তানের বিরোধিতা করতে গিয়ে ভারতকে বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু হিসেবে প্রচার করেন। কিন্তু বাংলাদেশ দীর্ঘ এই সময়ে ভারতকে ট্রানজিট, বন্দর, সড়কপথ, ফেনি নদীর পানিসহ অনেক কিছু দিলেও ভারত বাংলাদেশকে কি দিয়েছে? ভারত সরকারকে দেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের ‘সেভেন সিস্টার্স’ ৭ রাজ্যের স্বাধীনতাকামীদের দমন করে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করতে হতো। বাংলাদেশের কারণে ওই সব রাজ্যের স্বাধীনতাকামীরা ‘নীরব’ হতে বাধ্য হয়েছে। বিনিময়ে বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে ভারত কি দিচ্ছে? মুখে বন্ধুত্বের বুলি আওড়িয়ে ভারত সীমান্তে একের পর এক বাংলাদেশি হত্যা করছে। হঠাৎ করে ভারতের পেঁয়াজ বাংলাদেশে প্রবেশ বন্ধ করে দিয়ে বন্ধুত্বের পরিচয় দিয়েছে? ২০১৭ সালে মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশে আসার পর জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহল রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে সে দেশের অং সান সুচি উপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করে। অথচ নরেন্দ্র মোদি সে সময় মিয়ানমার সফর করে সুচি সরকার ও সে দেশের সেনাবাহিনীকে ‘পাশে থাকার বার্তা’ দেন। এমনকি জাতিসংঘে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পক্ষ্যে অবস্থান নেয়া থেকে বিরত থাকছেন। এটা কি রক্তের সম্পর্ক?

দেশের চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার ভ্যাকসিন পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা ভারত প্রীতি ও দিল্লিমুখি পররাষ্ট্রনীতিই দায়ী। চীনের সঙ্গে চুক্তির পর আমলাতন্ত্র সেটাকে ফাইলবন্দি রেখে দিল্লিকে খুশি করতে ভারতের সঙ্গে ভ্যাকসিন চুক্তি করেছে। যা আত্মঘাতী। ভারতের দিল্লি প্রেসক্লাবের সভাপতি গৌতম লাহিড়ী বলেছেন, বাংলাদেশকে ভ্যাকসিন পেতে হলে এপ্রিল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের মহামারি শুরু হওয়ার পর সারাবিশ্বের চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা প্রতিষেধক টিকা আবিষ্কারের নামে। তারা সফলও হয়। ভাইজার, অ্যান্ট্রোজেনেকা, গ্যামলিয়া, মডার্না, সিনোভ্যাক ভ্যাকসিন আবিষ্কার করে। ভ্যাকসিন আবিষ্কারের পর ‘পরীক্ষামূলক’ প্রয়োগ শুরু হতে না হতেই বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলো আবিষ্কার করা ভ্যাকসিনের প্রায় ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ ক্রয়ের জন্য অগ্রিম অর্থ দেয়। এ অবস্থায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংখ্যা ‘সবার জন্য ভ্যাকসিন’ নিশ্চয়তার দাবি করে। কিন্তু সম্পদশালী দেশগুলো বেশি টাকা দিয়ে ভ্যাকসিন ক্রয়ে উদগ্রিব হয়ে উঠে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ায় চীন। ২০২০ সালের ২৭ আগস্ট চীনা কোম্পানী ‘সিনোভ্যাক’ ভ্যাকসিনের বাংলাদেশে ট্রায়াল চালাতে সম্মত হয়। ঢাকায় কর্মরত চীনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সিনোভ্যাকে পরীক্ষামূলক ব্যবহারের সিদ্ধান্তের কথা জানান। এরপর শুরু হয় প্রসাদ ষড়যন্ত্র। প্রশাসনের দিল্লি মুখাপেক্ষি আমলারা চীনের ভ্যাকসিন ট্রায়াল ঠেকাতে আর্থিক সংকটের কথা প্রচার করেন। জানানো হয় চীনের ভ্যাকসিন পরীক্ষামূলক ব্যবহারে যে অর্থের প্রয়োজন সে অর্থ দেয়া সম্ভব নয়। করোনার মধ্যেই দিল্লি থেকে কয়েক ঘন্টার জন্য ছুটে আসেন সেদেশের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা। পাল্টে যায় দৃশ্যপট। উন্নয়ন সহযোগী চীনকে বিমুখ করে ভারতকে খুশি করতে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন ভারতের মাধ্যমে ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ভারতের মাধ্যমে ভ্যাকসিন কেনার সিদ্ধান্ত নেয়ায় তখনই টিকা পাওয়া নিয়ে জনমনে কিছুটা সংশয়ের সৃষ্টি হয়। ২৮ আগস্ট ভারত থেকে ভ্যাকসিন এনে বাংলাদেশে সরবরাহের জন্য ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার (এসআইই) সঙ্গে বিনিময় করে বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেড। অতঃপর ৫ নভেম্বর স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের উপস্থিতিতে সচিবালয়ে ভ্যাকসিনের সমঝোতা স্মারক সই হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড এবং বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেডের চুক্তিতে সই করেন। দীর্ঘদিন থেকে সরকারের দায়িত্বশীল মন্ত্রী, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও আমলারা দেশবাসীকে শোনাচ্ছেন, বিগত বছরের ডিসেম্বরে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে। বিশ্বের দেশে দেশে ভ্যাকসিন দেয়া শুরু হলে গত কয়েকদিন থেকে তারা প্রচার করছেন নতুন বছরের জানুয়ারিতে ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে।

২০২১ সালের প্রথম দিন ভ্যাকসিন ক্রয়ের জন্য ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়াকে (এসআইই) অগ্রিম হিসেবে ৬শ’ কোটি টাকা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গতকাল (সোমবার) তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিনের মূল্য হিসেবে ৬শ’ কোটি টাকা অগ্রিম পাঠানো হয়। এ টাকা ব্যাংকিং এর মাধ্যমে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়াকে (এসআইই) অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়। তবে সরকার থেকে জানানো হয় ভারত প্রতিমাসে ৫০ লাখ ডোজ ভাকসিন বাংলাদেশে পাঠাবে। টাকা পাঠানোর পরই গতকাল আচমকা বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতোই খবর আসে ভারত ভ্যাকসিন দেবে না। সে দেশের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে প্রশাসন সবার দাবি আগে নিজ দেশের জনগণকে ভ্যাকসিন দিতে হবে। অতঃপর বাংলাদেশ বা অন্য দেশে পাঠাতে হবে। ভারতের সব নাগরিককে টিকা দেয়ার সম্পন্ন না হলে কোথাও ভ্যাকসিন রফতানি করা যাবে না।

জানা যায়, কার্যকারিতা কিছুটা কম হলেও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার এ ভ্যাকসিন নিয়ে বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে এক ধরনের আশাবাদ তৈরি হয়েছে। কারণ এটির দাম কিছুটা কম এবং সরবরাহ করা যায় সহজে। এ ভ্যাকসিন পেতে উন্নয়নশীল দেশগুলো সেরাম ইনস্টিটিউটের ওপর নির্ভর করে। সেরামের সক্ষমতা রয়েছে বিপুল টিকা উৎপাদনের। তারা এরই মধ্যে পাঁচ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন উৎপাদন করেছে। আচমকা ভারতীয় কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞার কারণে, সেরাম এখন ভ্যাকসিন রফতানি করতে পারছে না। অথচ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভ্যাকসিন উৎপাদন হলেও কোনো দেশই এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিন পৃথিবীর বেশ কিছু দেশে এরইমধ্যে প্রয়োগ শুরু হয়েছে। তাই ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনৈতিক বলছেন, বিশ্লেষকরা। এছাড়া, বাড়ির পাশের বাংলাদেশে ভ্যাকসিন প্রয়োগ না হলে ভারতে করোনা নিয়ন্ত্রণ কতোটা সম্ভব হবে তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।

‘ভারতের চাহিদা পূরণ না করে ভ্যাকসিন রফতানি বন্ধ’ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এমন খবর প্রচার হওয়ার পর সংশ্লিষ্টরা দফায় দফায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন রফতানিতে ভারত যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তা বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য হবে না। তাদের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়েছে। এ চুক্তি অনার করার আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি সম্পর্কে আমরা পুরোপুরি অবহিত নই। আমাদের ফরেন মিনিস্ট্রি, ভারতের হাইকমিশনে, ফরেন মিনিস্ট্রিতে আলাপ করেছে। তারা আশ্বস্ত করেছে, চুক্তি ব্যাহত হবে না। ভারত সরকার এমার্জেন্সি ভিত্তিতে তাদের দেশে প্রয়োগ করবে। এজন্য তারা আপাতত বিক্রি বন্ধ রাখবে বলে শুনেছি। ভারতের সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। আমরা আশাবাদী যে, এটা নিয়ে সমস্যা হবে না। একই সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আবদুল মান্নান বলেন, ভারতে টিকা রফতানির ওপর যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তার প্রভাব বাংলাদেশের সঙ্গে হওয়া চুক্তির ওপর পড়বে না। ভারতের রফতানির ব্যাপারে যে নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হচ্ছে, তা দেশটির অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে হওয়া চুক্তি।

ভারতে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, তাদের টিকা রফতানির ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। সেরাম ইনস্টিটিউটের জনসংযোগ কর্মকর্তা মায়াঙ্ক সেন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসিকে জানান টিকা রফতানিতে নিষেধাজ্ঞার যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তা পুরোপুরি সঠিক নয়। কারণ তাদের টিকা রফতানির ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।
বেক্সিমকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপন সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ভারত সরকার ভ্যাকসিন রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও আগে থেকেই চুক্তি হওয়ায় সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে ভ্যাকসিন পেতে সমস্যা হবে না। চুক্তি অনুযায়ী সেরামকে অগ্রিম অর্থ দেয়া হলে এবং দেশে ভ্যাকসিনটির নিবন্ধন দেয়া হলে সময় মতোই এই ভ্যাকসিন বাংলাদেশে আসবে। তিনি সেরামের ভ্যাকসিন পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ভারত সরকার সেরামকে যেভাবে ভ্যাকসিন রফতানি করতে নিরুৎসাহিত করেছে, সেটি যৌক্তিক। ওই সংবাদ সম্মেলনে ঢাকায় কর্মরত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী উপস্থিত ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (12)
Md Syed Alam ৫ জানুয়ারি, ২০২১, ১:১১ এএম says : 0
করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে এক বড় প্রতারণার শিকার হয়েছে বাংলাদেশ।
Total Reply(0)
বয়ড়া খাল পাড় ৫ জানুয়ারি, ২০২১, ১:২৩ এএম says : 0
ভারত প্রেমে গদগদ আমরা ।
Total Reply(0)
মোঃ আশরাফুল হক ৫ জানুয়ারি, ২০২১, ২:৩১ এএম says : 0
টাকা দিয়ে যদি ভ্যাকসিন কিনা হয় তাহলে ভারতে কেন? ভারত যে গাদ্দার সবাই ভাল জানে, ঘাপটি মেরে থাকা কিছু দালাল চক্র ছাড়া সবাই, আমাদের দেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো বানাতে পারেনা ভারত যদি অক্সফোর্ড থেকে ওষুধ বানাতে পারে আম বাংলাদেশ পারবে না কেনো বাংলাদেশের নামিদামি কোম্পানি আছে
Total Reply(0)
S.m. Rana ৫ জানুয়ারি, ২০২১, ৩:৫০ এএম says : 0
করোনায় জীবন চলে গেলেও ইন্ডিয়া এবং পাকিস্তানের কোন ঔষধ ব্যাবহার করবোনা,,,"""",,,"", কারন দু দেশই আমাদের জন্য বিষাক্তময়,,, আমি বয়কট করলাম
Total Reply(0)
Rezaul Karim Sheikh ৫ জানুয়ারি, ২০২১, ৩:৫০ এএম says : 0
ভারত নিজেদের জনগণের স্বার্থ আগে দেখে, এটাই রাষ্ট্রের নিয়ম, কিন্তু বাংলাদেশের জনগণের বেলায় উল্টোটা ঘটে যেমন পেঁয়াজের মৌসুমে পেঁয়াজ রপ্তানি করে দেশের কৃষকদের পথে বসায়।
Total Reply(0)
তিনা ৫ জানুয়ারি, ২০২১, ৩:৫৬ এএম says : 0
বাংলাদেশ সরকারের সরম লজ্জা বলতে কিছু নাই,
Total Reply(0)
Shahabuddin ৫ জানুয়ারি, ২০২১, ৪:০৬ এএম says : 0
First of all thank you for your article I ask all the lover of india to open there eyes ears and read this article and think is it not going to slap on to hole nations face by inviting modi as a chief gest on our 50th independence day think bangli think
Total Reply(0)
salman ৫ জানুয়ারি, ২০২১, ৫:৪৩ এএম says : 0
Ai Jonno e QURAN a Mohan Allah Tala Bolsen KAFIR RA KOKKHON O TOMADER Bondhu noy....ata e Sotti. ................., but Bangladesh JONOGON monay korau INDIA Bangladesh er SOTRU...no doubt
Total Reply(0)
ম নাছিরউদ্দীন শাহ ৫ জানুয়ারি, ২০২১, ৮:০৫ এএম says : 0
সরকারের বিতরে কিছু ভারতীয় বন্ধু আছে যাদের কারণে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় টিকা ঠিকাদারির এজেন্টরাই বাংলাদেশের টিকা সময় মতো পাওয়া না জন্যে দায়ী।ক্রিকেট সভাপতি পাপন আশ্বাস দিচ্ছেন কেন? টাকা নিয়েছে চুক্তির সময় মতো ঠিকা বাংলাদেশ কে দিতেই হবে। বাংলাদেশের সক্ত ভাবেই ভারতকে বলা প্রয়োজন। এটি সবজ্বি পিয়াজ নয় কিছু না জানিয়ে বন্ধ করা যায়। জীবন মৃত্যুর বিষয়।আর যদি চুক্তির সিদ্ধান্ত মতে টিকা সময় মতে না দিলে দিতে না পারলে। সরকার পরিস্কার করে জাতির কাছে ক্ষমা চায়বে ভারতের বন্দুত্বের নিদর্শনের জন্যে।বাংলাদেশ যতই কথা বলুক এপ্রিল মে জুনের আগে ভারতীয় টিকা পাওয়া সম্ভব নয়। সেরামের ভ‍্যাগসিন কতৃপক্ষের কথায় তাই মনে হচ্ছে। এখন কথা হচ্ছে এই অনিশ্চয়তা জন্যে সমালোচনার জন্য সরকার কঠিন সমালোচনায় পড়েছে এর জন্যে দায়ী আমাদের সুদূর প্রশারী চিন্তা পরিকল্পনা অভাবেই দায়ী। যাদের নিকট পিয়াজ রসুন চাহিদার সময় নিরাপদনয়। তাদের কাছে মহামারী করোনার ভ‍্যাগসিনের টিকা কি করে নিরাপদে আসবে?? চীনের বিশালাকার শক্তিশালী অর্থনৈতিক শক্তির কাছে ভারত শিশু। চীনের অর্থনৈতিক যুদ্ধ আমেরিকার সাথে। ভারতীয়দের হিসেবের মধ্যেও নেই চীনের টিকা পাওয়ার সুযোগ সঠিকতা উপলব্দি করতে পারেননি। কিছু দায়িত্ব প্রাপ্ত ভারতীয় এজেন্টের কারণে। এবার বুঝেন শিক্ষা হবেনা আমাদের। বাংলাদেশ আগের বাংলাদেশ আছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশালাকার কর্মযজ্ঞ মহাপরিকল্পনায় বাংলাদেশ অনেক গুলো সুচকে ভারত কে পিছনে পেলেছেআমাদের সরকারের কুটনৈতিক দক্ষ বিচক্ষন বুদ্ধিদীপ্ত পররাষ্ট্রনীতির মাধ্যমে ভারতীয় কুটকৌশল মোকাবেলা করতে হবে। ভারতের মাঠিতে দাঁড়িয়ে আমাদের প্রধান মন্তী পিয়াজ বন্ধ করার কথা আগে না জানানোর জন্যে তীব্র প্রতিবাদ মুখর কথা বলেছিলেন। জাতীয় আন্তর্জাতিক ভাবে প্রশংসনীয় হয়ে ছিল। পরিশেষে টিকা রাজনীতি হতে পারেননা। টাকা দিয়ে টিকা নিচ্ছেন বাংলাদেশ। যদি মে জুনে টিকা দেয় এই টিকার টাকা দ্বিগুন পেরত নেওয়া উচিৎ। বিকল্প বিকল্প কোন দেশ হতে জরুরী টিকার ব‍্যবস্থা করুন। সময় মুল‍্য বন্ধুত্বের মর্যাদা যাদের কাছে নেই তাদের সাথে কিসের বন্ধুত্ব। বাংলাদেশের মানুষ কে আল্লাহ্ অনেক নিরাপদে রেখেছেন। আল্লাহ্ আমাদের পকৃত হেফাজতের মালিক।
Total Reply(0)
Harunur Rashid ৫ জানুয়ারি, ২০২১, ৮:৩৪ এএম says : 0
It is a good thing, Little modi not giving his crap. People of Bangladesh must not use modi's crap anyway. Buy from UK or USA.
Total Reply(0)
Ahmed Nazir ৫ জানুয়ারি, ২০২১, ৯:১০ এএম says : 0
Peiaz er moto pochar shomoi holei Bangladesh corona vacine pabe
Total Reply(0)
md mujammel shiek ৫ জানুয়ারি, ২০২১, ৯:৪০ এএম says : 0
বাংলাদেশ সরকারের উচিত আর কি কি আছে দেওয়ার মতো তা দেওয়া।শেরে বাংলা একে ফজলুল হক বলে ছিলেন। যখন দেখবে কলকাতার দাদারা আমার প্রশংসা করছে। তখন বুঝবে আমি আমার দেশের বিরোদ্ধে কাজ করছি।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন