শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

দক্ষিণ-পশ্চিমে কৃষির উন্নয়নে কৃষি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন

যশোর ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ৮ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০৬ এএম

বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ ভাসমান কৃষি, জলমগ্ন কিঞ্চিৎ লবণাক্ত আবাদী জমি ও বৈচিত্রপূর্ণ ফসলের আবাদ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে কৃষির মূল বৈশিষ্ট। পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের মাধ্যমে কৃষির সার্বিক উন্নয়নে বিশেষ করে পরিবেশ-প্রতিবেশ উপযোগী গবেষণা কার্যক্রম জোরদারের লক্ষ্যে গোপালগঞ্জে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি)-এর একটি পূর্ণাঙ্গ কৃষি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনের কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। বর্তমান সরকারের এটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। 

এ অঞ্চলের কৃষির বৈচিত্র নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষকদের আগ্রহ এবং স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্যদের গবেষণা চাহিদা পূরণে গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ডেল্টা প্লানের কৃষি ও কৃষি সংশ্লিষ্ট উদ্দেশ্য পূরণে কেন্দ্রের এই প্রকল্প কেন্দ্রস্থল হিসেবে কাজ করছে।
কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট সূত্র জানায়, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের চলমান প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাসমূহের কৃষির উন্নয়নে গবেষণা কার্যক্রম জোরদারকরণ। নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন। গুণগতমান সম্পন্ন বীজ উৎপাদন ও সরবরাহ, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উপযোগী ফসলের উপযোগিতা ও সম্ভাব্যতা যাচাই, সবজি, ফল, ডাল, আলু, তৈলবীজ, গম, ভুট্টা, নারিকেল, তাল ও খেজুরের উৎপাদন বৃদ্ধি ও কৃষকদের আয় বাড়ানো এবং প্রশিক্ষণ, মাঠদিবস, সেমিনার ও কর্মশালার মাধ্যমে বারি ও ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত উন্নত জাত ও প্রযুক্তির বিস্তার ঘটানো। ইতোমধ্যে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এখানে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধীনে ১৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে পাঁচ বছরব্যাপী বাস্তবায়নাধীন এ প্রকল্পে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৩টি বিভাগের ৫টি জেলার (পিরোজপুর, গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট, খুলনা ও সাতক্ষীরা) ৩৮টি উপজেলার সার্বিক কৃষি উন্নয়ন এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, এই প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে বারি উদ্ভাবিত উন্নত জাতের বিভিন্ন ফসলের ২ হাজারটি উপযোগিতা যাচাই পরীক্ষাসহ ১৬৬ হেক্টর জমিতে ফসলের প্রদর্শনী মাঠ স্থাপন, ১১৪টি মিশ্র ফলের বাগান, বিভিন্ন ধরণের ফলের ১০ হাজারটি চারা বিতরণ এবং ৬,৫০০ জন কৃষকের মাঝে বিভিন্ন শাক ও সবজির বীজ বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় একটি পূর্ণাঙ্গ কৃষি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনের অংশ হিসেবে অফিস কাম আধুনিক গবেষণাগার নির্মাণ, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন আবাসস্থল নির্মাণ, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষকদের গবেষণা উপাত্ত সংগ্রহ ও জাতীয়/আন্তর্জাতিক কর্মশালায় অংশগ্রহণের সুবিধার্থে সময়োপোযোগী অতিথি ভবন নির্মাণ এবং গবেষণামান বৃদ্ধির জন্য ভূমি উন্নয়ন কার্যক্রম চলছে।

কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. নাজিরুল ইসলাম দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে একটি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনের ফলে ৩৮টি উপজেলার সার্বিক কৃষির ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে।

পাশাপাশি এখানে নির্মাণাধীন আধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ কৃষি গবেষণাগার স্থাপিত হওয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ এবং খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই গবেষণাগার থেকে গবেষণা কাজে যথেষ্ট সহায়তা পাবে।

স্থানীয়দের কথা, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে একটি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র খুবই জরুরি ছিল। যেখানে আধুনিক সুবিধা সম্বলিত কৃষি গবেষণার সকল সুযোগ-সুবিধা থাকবে। একই সাথে পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে এই অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন সাধিত হবে। তাই এখানে কৃষি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপিত হলে এই অঞ্চলের সার্বিক কৃষির ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে এবং কৃষকের উৎপাদিত পণ্যসমূহ খুব দ্রুততর সময়ে সারা দেশে পরিবহন করা সম্ভব হবে। এতে করে এই অঞ্চলের কৃষক ও সার্বিক অর্থনীতির উন্নয়ন সাধিত হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন