বাগেরহাটের শরণখোলার বলেশ্বর তীরবর্তী বগী গ্রামে সেনাবাহিনীর নির্মিত দেড়মিলোমিটার রিং বেড়িবাঁধ আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় বরিশাল সেনানিবাসের ২৮ পদাতিক বিগ্রেডের কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল কাজী আনিসুজ্জামান পিএসসি পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. হাসান ইমামের কাছে নির্মিত বাঁধ বুঝিয়ে দেন। এ সময় নির্মিত বাঁধের প্রকল্প পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল খুরশিদ আনোয়ার, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক আ ন ম ফয়জুল হক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব মো. শহিনুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাফিন মাহমুদ, শরণখোলা উপজেলা চেয়ারম্যান রায়হান উদ্দিন শান্ত, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শহিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পরে তারা নির্মিত বাঁধ পরিদর্শন করে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ৪শ’ হতদরিদ্র মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাঁধ নির্মাণের জন্য ভ‚মি অধিগ্রহনে ক্ষতিগ্রস্ত ২৩ গ্রামবাসীকে তাদের বাড়ি গিয়ে ৪৮ লাখ ৩৭ হাজার ৩০৮ টাকার চেক প্রদান করেন জেলা প্রশাসক আ ন ম ফয়জুল হক।
সেনাবাহিনী সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ১৬ জুন সাউথখালী ইউনিয়নের ভাঙন কবলিত অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বগী থেকে গাবতলা পর্যন্ত ১৭শ’ মিটার রিং বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করে বরিশাল সেনাবাহিনীর একটি দল। আট কোটি টাকা ব্যয়ে তিনটি প্যাকেজে দ্রুত গতিতে কাজ শেষ করে প্রায় সাত মাস পরে বৃহস্পতিবার তা হস্তান্তর করা হয়।
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ঘুর্ণিঝড় সিডরে বিধ্বস্ত শরণখোলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সম্পূর্ন বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর থেকে এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে সাড়ে ৩শ’ কোটি টাকা ব্যায় সাপেক্ষে ২০১৬ সালের ২৬ জানুয়ারি ৬৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করে সিএইচডাব্লুউ নামের চায়নার একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। কাজ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত তিন দফা সময় বাড়ানো হলেও এখন পর্যন্ত বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ হয়নি। পক্ষান্তরে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সাউথখালীর বগী গ্রামের বাঁধ নির্মাণের কাজ বন্ধ রাখা হয়। ফলে প্রতি বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগকালীন সময়ে পাঁটি গ্রাম প্লাবিত হয়ে এলাকাবাসীকে দুর্ভোগ পোহাতে হতো। এরপর এলাকাবাসী সোচ্চার হলে রিং বাঁধ নির্মাণের দায়িত্ব দেয়া হয় সেনাবাহিনীকে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন