রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার নরদাশ ইউনিয়নের জোঁকা বিলের মাছ চাষ করা কে কেন্দ্র করে গঠিত কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও কতিপয় সদস্যদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বর্তমানে উভয় পক্ষই মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। যে কোন সময় ওই ঘটনায় জেরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সৃষ্টি হতে পারে। এতে প্রাণহানিরও আশঙ্কা রয়েছে। ওই বিলের অপর প্রায় শতাধিক সদস্য তাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উত্থাপন করেন। তারা অচিরেই বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন।
জানা যায়, ২০০৬ সাল থেকে নরদাশ ইউনিয়নের হাট-মাধনগর, গোড়সার, বাসুদেবপাড়া, পানিয়া ও কাষ্টনাংলা গ্রামের কৃষকদের সমন্বয়ে জোঁকা বিলে মাছ চাষ করে আসছেন ওই বিলের জমির মালিক শত শত কৃষক ও মৎসজীবীরা। সাড়ে আটশো সদস্যদের সমন্বয়ে ওই বিলে মাছ চাষ করা হতো। মাছ চাষ করা নিয়ে নানা সময়ে স্থানীয়দের মাঝে পক্ষ বিপক্ষের সৃষ্টি হয়ে হামলা-মামলার ঘটনাও ঘটে। বিরোধের কারনে এর আগে বিলের ক্যাশিয়ার আনিছুর রহমান নামের এক কৃষক নিহত হয়। এক পর্যায়ে এলাকায় শান্তি স্থাপনে বিগত তিন বছর পূর্বে প্রশাসনের সহযোগীতায় স্থানীয় দুই পক্ষের মাঝে সমঝোতা বৈঠক বসে।
এতে জোঁকা বিল মৎস চাষ প্রকল্প নামে একটি কমিটি গঠিত হয়। ওই কমিটির সভাপতি করা হয় নরদাশ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদের সদস্য মাস্টার আব্দুর রশিদ কে এবং সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামসহ ৪২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। বিলের জমি মালিকরা অভিযোগ করেন কমিটি গঠনের পর থেকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কোন সভা আহবান করেননি। সকল সদস্যদের মাঝে লভ্যাংশের টাকাও ভাগ করে দেন না। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কতিপয় সদস্যকে নিয়ে মাছ বিক্রি করে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। হিসেব চাইতে গেলেই মামলা-হামলার ভয় দেখানো হয় বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। হাট-মাধনগর গ্রামের আফাজ উদ্দিন সরকার, বাবুল হোসেন, আতাউর রহমান, সাহেব আলীসহ প্রায় অর্ধ-শতাধিক ওই বিলের জমি মালিক এসব অভিযোগ করেন। কমিটির অনিয়মের কথা বলতে গিয়ে বাড়িঘরে হামলার ঘটনা ঘটছে। গত বুধবার কয়েকটি বাড়িতে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে ভয়ভীতি দেখানো হয় বলে জানা যায়।
বাসুদেবপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীরের বাড়িতে প্রতিপক্ষরা দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে ভয়ভীতি দেখায় ও বাড়িতে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেছে বলে জাহাঙ্গীরের স্ত্রী আরিফা বেগম ও জাহাঙ্গীরের মা সাহারা অভিযোগ করেন। হামলাকারীদের ভয়ে জাহাঙ্গীরসহ বেশ কয়েকজন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলেও জানান তাদের পরিবারের সদস্যরা। তারা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে জানান। জমি মালিকরা অচিরেই বর্তমান এই কমিটি বিলুপ্ত করে সঠিক হিসাব প্রদান করে সকল সদস্যদের মাঝে লভ্যাংশ বিতরণের দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, জোঁকা বিল নিয়ে চলমান বিরোধ কোন ভাবেই যেন সহিংসতায় রূপ না নেই সে ব্যাপারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন