শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ভোক্তাদের দুর্ভোগ চরমে

নিত্যপণ্য-এলপি গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি

বরিশাল ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ১১ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

চাল, ডাল ও ভোজ্য তেলের সাথে এলপি গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধিতে দক্ষিণাঞ্চলের ভোক্তাদের দুর্ভোগ আরো এক দফা বেড়েছে। আমনের ভরা মৌসুমে চালের নজিরবিহীন অগ্নিমূল্যে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। গত তিন মাসে দক্ষিণাঞ্চলের সর্বত্রই সাড়ে ১২ কেজি গ্যাসের সিলিন্ডার প্রতি দাম বেড়েছে প্রায় ২৫ ভাগ। অপরদিকে ভোজ্যতেলের দামও গত তিন মাসে লিটার প্রতি ১৫ টাকার ওপরে বেড়েছে। মসুর, মুগ ও খেসারি ডালের দামও সাধারণের ধরা ছোয়ার বাইরে চলে যাচ্ছে।
দক্ষিণাঞ্চলের খুচরা বাজারে ‘বিআর-২৮’ বা ‘২৮ বালাম’ চাল বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৪৫ টাকা কেজি। আর মধ্যম ভালো মানের মিনিকেট চাল ৬০ টাকার ওপরে। গত তিন মাসে এসব চালের দাম বেড়েছে প্রায় ২০%। সরবরাহে কোন ঘাটতি না থাকলেও চালের বাজার অপ্রতিরোধ্য। ভরা মৌসুমে মোকামে ধানের মণ ১২শ’ দরে বিক্রি হলেও চালের সাথে তার ফারাক বিস্তর। এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগে দক্ষিণাঞ্চলে আমন ও আউশ ধানের কিছুটা ক্ষতি হওয়ায় উৎপাদন ঘাটতির আশঙ্কায় আগে থেকেই মিল মালিক ও তাদের ফরিয়ারা বাজারের নিয়ন্ত্রণ হাতে নিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে ভরা মৌসুমেই চালের বাজার নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
এদিকে ভোজ্য তেল সরবরাহেও কোন ঘাটতি না থাকলেও গত মাস তিনেক ধরে দাম ক্রমাগত ঊর্ধ্বমুখী। বরিশাল মহানগরীর খুচরা বাজারে সয়াবিন তেলের লিটার ১১৫ টাকা। যা তিন মাস আগে ৯০ টাকায় বিক্রি হত। টিসিবি দক্ষিণাঞ্চলের জেলা সদরগুলোতে সয়াবিন বিক্রি করলেও তা সাধারণ ভোক্তাদের কাছে পৌঁছেনি। ৮০ টাকা লিটারের সয়াবিন তেল কিনতে হলে ৫ কেজি পেঁয়াজ কেনা বাধ্যতামূলক করায় ক্রেতারা টিসিবির তেল কিনতে পারছে না বলেও অভিযোগ রয়েছে। কোন কারণ ছাড়াই সব ধরনের ডালের দামও গত তিন মাসে বেড়েছে কেজি প্রতি ২৫-৩০ টাকা। মসুর আর মুগ ডালের কেজি এখন ১৩০ টাকা।
এদিকে গত মাস দুয়েক ধরে দক্ষিণাঞ্চলে সিলিন্ডার গ্যাসের দামও ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। গত নভেম্বরে সাড়ে ১২ কেজির এলপি গ্যাস সিলিন্ডার যেখানে ৭২৫ টাকায় বিক্রি হত, এখন তা সাড়ে ৯শ’ বা আরো বেশী। বিক্রেতাদের দাবি, কোম্পানি থেকে দাম বাড়ানোর ফলেই তাদের কিছু করার থাকছে না। টাকার তুলনায় ডলারের মূল্য বৃদ্ধির কারণেই আমদানিকৃত এসব এলপি গ্যাসের দাম বেড়েছে বলে দাবি বিক্রেতাদের।
দক্ষিণাঞ্চলে ৪২টি উপজেলায় প্রায় ১৫টি বেসরকারি গ্যাস কোম্পানি এলপিজি বাজারজাত করছে। কিন্তু মূল্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে কোন প্রতিযোগিতা না থাকলেও দাম বাড়াবার ক্ষেত্রে সবাই একাট্টা বলেও অভিযোগ রয়েছে। সরকারি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েল কোম্পানি এলপি গ্যাস বিক্রি করলেও তা চাহিদার ১০% ও পূরণ করতে পারছে না।
এ ব্যাপারে বরিশালে রাষ্ট্রীয় এসব জ্বালানি কোম্পানির বিক্রয় ও বিপণন ব্যবস্থাপকদের সাথে আলাপ করা হলে তারা চাহিদানুযায়ী সরবরাহের ঘাটতির কথা স্বীকার করেন। তবে উৎপাদন ও বিপণন ব্যবস্থা কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল বলে জানান। দক্ষিণাঞ্চলে প্রতি মাসে অন্তত ৫০ হাজার সিলিন্ডার গ্যাসের প্রয়োজন হলেও রাষ্ট্রীয় ৩টি কোম্পানি ৩ হাজার সিলিন্ডারও সরবরাহ করতে পারছে না বলে জানা গেছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন