ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) সংবাদদাতা : ২৬ আগস্ট ফুলবাড়ী কয়লা খনিবিরোধী আন্দোলনের শোক দিবস উপলক্ষে ফুলবাড়ীবাসীর প্রাণের দাবি “স্থায়ী সম্পদ ধ্বংস করে ফুলবাড়ীতে কয়লা খনি চাই না ” শ্লোগানকে সামনে রেখে স্থানীয় সম্মিলিত অরাজনৈতিক পেশাজীবী সংগঠন ও ফুলবাড়ীবাসী এবং অপরদিকে “উন্মুক্ত না ,বিদেশী না , রপ্তানী না” শ্লোগানকে সামনে রেখে তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ফুলবাড়ী শাখা পৃথক ভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে। স্থানীয় অরাজনৈতিক সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠন ও ফুলবাড়ীবাসীর কর্মসূচির মধ্যে ছিল সাড়ে ৮টায় ফুলবাড়ী থানা ব্যবসায়ী সমিতির সামনে গণজমায়েত, কালো ব্যাচ ধারন, শোক র্যালি ও স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্থাবক অর্পণ, শপথ গ্রহণ ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান, দোয়া প্রভৃতি। সকাল সাড়ে ১০টায় ঊর্বশী সিনেমা হলের পার্শ্বে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ফুলবাড়ী ডেকোরেটর মালিক সমিতির সভাপতি ও ব্যবসায়ী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠনের সদস্য সচিব সহকারী অধ্যাপক শেখ সাবীর আলী। সভায় প্রধান অতিধি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ফুলবাড়ীর বিভিন্ন অরাজনৈতিক সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠন ও ফুলবাড়ীবাসীর আহŸায়ক থানা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মোঃ মুরতুজা সরকার মানিক। অন্যন্যাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পৌর কাউন্সিলর ময়েজ উদ্দিন, ফুলবাড়ী থানা ইলেকট্রিশিয়ান সমিতির সভাপতি ফারুক আহম্মেদ, ফুলবাড়ী উপজেলা দর্জি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো: আবু সাইদ, ফুলবাড়ী টিউবওয়েল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নুর মোহাম্মদ, ডেকোরেটর মিস্ত্রি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ জাকির হোসেন, ফুলবাড়ী হকার্স সমিতির সভাপতি মোস্তাক আহম্মেদ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। সভায় সম্মিলিত অরাজনৈতিক পেশাজীবী সংগঠন ও ফুলবাড়ীবাসীর পক্ষে শপথ বাক্য পাঠ করান মেয়র মোঃ মুরতুজা সরকার মানিক। সবশেষে বিভিন্ন দাবি সম্মিলিত স্মারকলিপি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর প্রেরণ করা হয়। দাবী সমূহের মধ্যে রয়েছে, স্থায়ী সম্পদ ধ্বংশ করে ফুলবাড়ীতে কয়লাখনি চাই না, ফুলবাড়ী থেকে অবিলম্বে এশিয়া এনার্জীর অফিস ও পরীক্ষাগার প্রত্যাহার, ২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট প্রশাসন কর্তৃক গুলিতে হতাহত ও পঙ্গুত্ববরণসহ পুরো ঘটনার সরকারীভাবে তদন্ত রিপোর্ট অবিলম্বে জনসম্মুখে প্রকাশ করা হোক, স্মৃতিস্তম্ভের কাজে উন্নয়ন, সংরক্ষণ ও সবসময় জনসাধারণের জন্য উন্মুক্তকরণসহ ব্যবহার উপযোগি করে রাখা, ফুলবাড়ী কয়লাখনি নিয়ে ষড়যন্ত্রকারী দালালদের চিহ্নিতকরণ ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং প্রধানমন্ত্রী ঘোষণার বাস্তবায়ন।
তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির র্যালী ও সমাবেশে অংশগ্রহন করেন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ, জ্বালানী কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান বিডি রহমতউল্লাহ, সিপিবি’র কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহাদৎ হোসেন, গণফ্রন্টের কেন্দ্রীয় নেতা টিপু বিশ্বাস, কমিউনিষ্ট লীগের মোশাররফ হোসেন নান্নু, বাসদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাইফুল হক, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী ফ্রন্ট সভাপতি মোসরেকা মিশু, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েত সাকি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তানজিম উদ্দিন, সিপিবি’র কেন্দ্রীয় নেতা নুর আহমেদ বকুল প্রমুখ।
শোকর্যালি বের করার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। এ সময় তিনি বলেন, ১০ বছর আগে যে গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল সেই সময়ে বিএনপি-জামায়াতের চুক্তি হয়েছিল তা এখনও বাস্তবায়ন করা হয়নি। বরং এখন চুক্তি ভঙ্গ করে বিভিন্ন অপকর্মকাÐ চালানো হচ্ছে। মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, এশিয়া এনার্জিকে দেশ থেকে বহিস্কার, উন্মুক্ত পদ্ধতিকে কয়লা খনি নিষিদ্ধ করাসহ বিভিন্ন দাবি দাওয়ার প্রেক্ষিতে তারা এক দশক পূর্তি পালন করছেন। দাবি বাস্তবায়নের জন্য দালালদের অপতৎপরতা, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, এশিয়া এনার্জিকে বহিস্কারের ঘোষণা না হলে নতুন করে আন্দোলন কর্মসূচিতে যাওয়া ছাড়া কোন উপায় নাই। পাশাপাশি অবিলম্বে ফুলবাড়ী চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন